আমতলী প্রতিনিধি ঃ
বরগুনার আমতলী তে মাস্ক ছাড়াই চলাফেরা, ঘুরাঘুরি করছে মানুষ করোনার মধ্যেও আমতলীর বিভিন্ন হাট-বাজারগুলোয় মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। দোকান-পাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোয় নেই মাস্কের ব্যবহার। কিছু কিছু ক্ষেত্রে মাস্কের ব্যবহার দেখা গেলেও সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি সেভাবে মানা হচ্ছে না দোকান পাট ও হাট বাজার গুলোতে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, আমতলী পৌর শহরের মাছ বাজার , কাপড়, কসমেটিকস, জুতার দোকান থেকে শুরু করে কাঁচা বাজারসহ বিভিন্ন দোকানে মানুষের উপচে পড়া ভিড়। গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে কেনাকাটা করছেন লোকজন। কিছু কিছু দোকানে দোকানির মুখে মাস্ক দেখা গেলেও বেশিরভাগই মাস্ক-গ্লাভস কিছুই ব্যবহার করছেন না। মৎস্য বাজার ও কাঁচা বাজারের অবস্থা আরও ভয়াবহ। ছোট খাটো বাজার ও চায়ের দোকানগুলোয় কেউ মাস্ক পরছেন না বললেই চলে।।
বুধবার সাপ্তাহিক বাজারের দিন উপজেলার একটি স্কুলের এক শিক্ষক বলেন বাজার করতে এসে মানুষের ভিড়ে কেনাকাটা করতে হিমশিম খাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘এত মানুষের মাঝে কীভাবে কেনাকাটা করবো। বাজারে মানুষের অস্বাভাবিক ভিড়। এমন হলে করোনা আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। তখন পরিস্থিতি আরও অস্বাভাবিক হবে। আমাদের সতর্ক হওয়া উচিত।’ কিন্তু বেশির ভাগ মানুষে মানছে না।
স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না চায়ের দোকানে আমতলী পৌর শহরসহ গ্রাম গঞ্জের চায়ের দোকান গুলোতে কোন স্বাস্থ্য বিধি মানা হচ্ছেনা। গ্রাম্য হাটবাজার গুলোতে দেখা যায় লোকজন একত্রে বসে স্বাস্থ বিধি না মেনে আড্ডা দিতে দেয়।
উপজেলার শাখারিয়া বাজার, ব্রিকফিল্ড বাজার, মহিষকাটা, সাহেব বাড়ী,আমড়াগাছিয়া বাজার,ডাক্তার বাড়ি, গাজীপুর , হলদিয়া , অফিস বাজার, চিলা বিশ্বাসের হাট. মানিকঝুড়ি, তালুকদার, বাজার, খুড়িয়াখেয়াঘাট, মুন্সির হাট, কুকুয়া, সোনাখালী, গুলিশাখালী, গোছখালী, আড়পাঙ্গাশিয়া, চরকগাছিয়া সহ উপজেলার দেড় শতাধিক বাজারের কোন দোকান পাট, ও জনবহুল স্থানে স্বাস্থ্য বিধি মানা হচ্ছেনা।
সাংবাদিক ক্লাব আমতলীর আহবায়ক দেওয়ান কবির বলেন, করোনায় সারাবিশ্ব বিপর্যস্ত । আমরা যদি নিজের এবং পরিবারের সুরক্ষার কথা চিন্তা করে একটু সচেতন হই তাহলেই কিছুটা হলেও এই মহামারি থেকে সুরক্ষিত থাকতে পারবো। তাই আমাদের ব্যক্তি সচেতনতা সবার আগে।
আমতলী উপজেল স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, করোনায় এ পর্যন্ত আমতলীতে মারা গেছেন ৮ জন। শহর ও গ্রাম গঞ্জের হাট-বাজারগুলোতে যেভাবে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত হচ্ছে তাতে শঙ্কিত খোদ স্বাস্থ্য বিভাগ।
বরগুনা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার ভূমি মোসা: নিশাত তামান্না মুঠোফোনে বলেন, জনসাধারনকে আমরা মাস্ক ব্যবহারে আগ্রহী করে তুলতে কাজ করছি ভ্রাম্যমান আদালতের কাজ ও অব্যাহত আছে।
বরগুনার সিভিল সার্জন হুমায়ূন শাহিন খান বলেন, ‘করোনা আগামী দিনে কী পরিস্থিতি হবে তা আমরা কেউ বলতে পারি না। তবে আশঙ্কার জায়গা থেকে যদি বলি তাহলে হাট-বাজারগুলোতে যেভাবে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করা হচ্ছে সেটা শঙ্কার বিষয়। আমরা সাধারণ মানুষদের সচেতন করতে কাজ করে যাচ্ছি। মানুষকে মাস্ক ব্যবহারে আগ্রহী করে তুলতে কাজ করছি।’
বরগুনা জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পর থেকে জেলা প্রশাসন ও এর অধীনস্থ সব প্রতিষ্ঠানে নো মাস্ক নো সার্ভিস চালু করা হয়েছে। কোনও ব্যক্তিকে সরকারি সেবা নিতে হলে তাকে অবশ্যই মাস্ক পরে আসতে হবে। জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি মাথা রেখেই আমরা এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করছি।জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।।।