চট্টগ্রামের ফুসফুস খ্যাত সিআরবি মেলার দখলে।
চট্টগ্রাম নগরীর মানুষ গুলি একটু প্রাকৃতিক পরিবেশে ঘুরতে এই সিআরবি আসে সেইটাও এখন মেলার দখলে চলে গেল!! নগরীর মাঠগুলো যখন শিশু-কিশোরদের খেলার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার দাবি জোরদার হচ্ছে, তখন নতুন করে মেলার দখলে চলে যাচ্ছে সিআরবির শিরীষতলার মাঠটি।
দীর্ঘদিন ধরে শিশু-কিশোররা খেলাধুলা করলেও সাম্প্রতিক সময়ে এই মাঠে একের পর এক মেলার আয়োজন করা হচ্ছে। ১৫ দিনব্যাপী বৃক্ষমেলা শেষ হতে না হতেই ফের সেখানে ১৫ দিনব্যাপী দেশীয় পণ্য ও জামদানি মেলা আয়োজনের অনুমতি দিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
চট্টগ্রামের ফুসফুস খ্যাত নগরীর সিআরবির মতো সংরক্ষিত এলাকায় এবার মাসব্যাপী শুরু হচ্ছে বাণিজ্যিক মেলার আদলে জামদানি মেলা। সিআরবির শিরীষতলার পুরো মাঠ টিনের ঘেরাও দিয়ে মাঠের ভেতরে ছোট–বড় অনেকগুলো স্টল নির্মাণ করা হয়েছে। মাঠে বিছানো হয়েছে ইট। উপরে দেয়া হয়েছে ত্রিপল। মাসব্যাপী দেশীয় পণ্য ও জামদানি মেলার নামে এ আয়োজন আজ থেকে শুরু হচ্ছে। গতকাল সিআরবি শিরীষতলায় গিয়ে একাধিক স্টল মালিক এবং মেলা আয়োজনের সাথে জড়িতদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিটি স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৬৫ হাজার থেকে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকায়। মেলার জন্য টিনের ঘেরা দিয়ে মাঠ জুড়ে স্টল, মাসব্যাপী উচ্চস্বরে মাইকে পণ্যের পাবলিসিটিতে পরিবেশ প্রতিবেশের ক্ষতির শঙ্কা প্রকাশ করেছেন সংস্কৃতি কর্মী ও পরিবেশবিদরা।
সিআররির মতো শত বছরের সবুজ প্রকৃতির নির্জন এলাকায় মাসব্যাপী মেলার অনুমতি দেয়ায় পরিবেশবিদ ও সংস্কৃতি কর্মীরা রেলওয়ের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সাইফুল আলম বাবু বলেন, সিআরবি সবুজ প্রকৃতি ঘেরা সংস্কৃতিময় এলাকায়। এমন একটি সংরক্ষিত এলাকায় মাসব্যাপী বাণিজ্যিক মেলা দেয়ার আগে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের ভাবা উচিত ছিল। সিআরবি শিরীষতলায় এর আগে কখনোই মেলা (অর্থের বিনিময়ে স্টল বরাদ্দ দিয়ে) অনুষ্ঠিত হয়নি। সিআরবিতো মেলার জায়গা না। সিআরবিকে কেন্দ্র করে প্রকৃতির নিবিড় সান্নিধ্যে সংস্কৃতির একটি বলয় তৈরি হয়েছে। এখন এটিকে ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে মেতেছে একটি চক্র। মেলার জন্য অনেকেই চাইবে–তাই বলে সিআরবির মতো জায়গায় মেলার জন্য মাঠ ভাড়া দিতে হবে ? এটা রেল কর্তৃপক্ষের ভাবা উচিত ছিল।