সালমান শাহ। বাংলা সিনেমার তুমুল জনপ্রিয় অভিনেতা। ভক্তদের কাছে স্বপ্নের নায়ক তিনি। আজ এ নায়কের ২৭ তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৯৬ সালের আজকের এই দিনে মাত্র ২৫ বছর বয়সেই সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান এ নায়ক। মৃত্যুর ২৭ বছর পরও সমান জনপ্রিয় তিনি। এখনও ভক্তরা তাকে নানাভাবে স্মৃতিচারণ করে। ১৯৯৬ সালে ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকার ইস্কাটনের বাসায় সালমান শাহর রহস্যমৃত্যু ঘটে। সেই রহস্যের জট এখনও খুলেনি। দফায় দফায় তদন্ত, প্রতিবেদন দাখিল হয়েছে।
কিন্তু তাতে সন্তুষ্ট হতে পারেনি নায়কের পরিবার কিংবা ভক্তরা। কারণ, সেসব প্রতিবেদনে বরাবরই বলা হয়েছে, সালমান শাহ আত্মহত্যা করেছেন। যদিও তার পরিবার অর্থাৎ মা নীলা চৌধুরী এখনো সালমানের মৃত্যুকে আত্মহত্যা মানতে নারাজ। এটা অপমৃত্যু নাকি হত্যাকাণ্ড তা নিয়ে এখনো ধোঁয়াশা কাটেনি।
এই নায়কের ফ্যাশন সচেতনতা, স্টাইলিশ চলাফেরা সবসময় অনুকরণীয়। ক্ষণজন্মা এই নায়কের জন্ম ১৯৭১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সিলেট জেলার জকিগঞ্জ উপজেলায়। তার পিতার নাম কমর উদ্দিন চৌধুরী ও মাতা নীলা চৌধুরী। এ নায়কের নানা পূর্ব পাকিস্তানের প্রথম চলচ্চিত্র ‘মুখ ও মুখোশ’-এ অভিনয় করেছিলেন। অভিনয়ে সালমানের আসা নানার কারণেই। সালমানের পারিবারিক নাম ছিল শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন। দুই ভাইয়ের মধ্যে সালমান ছিলেন বড় । ছোটবেলায় তিনি ছিলেন কণ্ঠশিল্পী। ইমন নামে অভিনয় জীবন শুরু হয় বিটিভিতে শিশুশিল্পী হিসেবে। ১৯৮৬ সালে ছায়ানট থেকে পল্লীগীতিতে পাস করেছিলেন তিনি।
১৯৯৩ সালে সোহানুর রহমান সোহানের ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ সিনেমার মাধ্যমে তিনি চলচ্চিত্রে আসেন। প্রথম সিনেমাই সালমান শাহ দর্শকের মাঝে তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। এ সিনেমার মাধ্যমে চিত্রনায়িকা মৌসুমীও চলচ্চিত্রে আসেন। সালমান-মৌসুমী জুটি অল্প সময়ে ভক্তদের হৃদয়ে জায়গা করে নেয়। পরবর্তীতে এ জুটি ‘অন্তরে অন্তরে’, ‘দেনমোহর’ সিনেমায় অভিনয় করে বিপুল জনপ্রিয়তা পায়।
এরপর শাবনূরের সঙ্গে জুটি বাঁধেন সালমান শাহ। এ জুটিও অসামান্য জনপ্রিয়তা পায়। প্রায় এক ডজন সিনেমায় তারা অভিনয় করেন।
সালমান শাহ অভিনীত উল্লেখযোগ্য কয়েকটি সিনেমা হলো, ‘তুমি আমার’, ‘স্বপ্নের পৃথিবী’, ‘বিচার হবে’, ‘স্বপ্নের ঠিকানা’, ‘সুজন সখি’, ‘স্বপ্নের নায়ক’, ‘চাওয়া থেকে পাওয়া’, ‘আনন্দ অশ্রু’, ‘জীবন সংসার’, ‘বিক্ষোভ’, ‘বুকের ভেতর আগুন’ ইত্যাদি।