লেবু ভিটামিন সি-তে ভরপুর। লেবুর ভিটামিন সি শরীরের নানা উপকারে আসে। ওজন কমানো, রক্তের কোলেস্টেরল কমানো ছাড়াও রক্তস্বল্পতা কমাতে লেবুর অনেক ভূমিকা রয়েছে।
লেবুতে রয়েছে পেকটিন, খাদ্য আঁশ, যা ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করে। এর ফলে ওজন কমে। দৈনন্দিন খাবারে লোহা বা আয়রন থাকে, যা শোষণের জন্য ভিটামিন সির প্রয়োজন হয়। তাই খাবারের সঙ্গে লেবু খেলে রক্তশূন্যতা বা অ্যানিমিয়া প্রতিরোধে সহায়ক হয়। গবেষণায় দেখা গেছে যে, লেবুতে থাকা ভিটামিন সি ক্যানসারের ক্ষতিকর কোষ ধ্বংস করে, ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে।
লেবু আর মধুর সঙ্গে মেশানো উষ্ণ পানি—এই তরল পানীয় অনেকের কাছে অতিপরিচিত। ওজন কমাতে প্রতিদিন অনেকেই সকালে খালি পেটে পান করেন এই পানীয়। লেবুতে রয়েছে ভিটামিন সি, যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে, আর মধুতে রয়েছে অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল এফেক্ট, যা শরীরের জন্য উপকার। বলা হয়, লেবু, মধু একসঙ্গে হালকা গরম পানি দিয়ে খেলে বিপাক (মেটাবলিজম) সক্রিয় হয়, যা ওজন কমাতে সাহায্য করে। আসলে হালকা গরম পানি মূলত এ কাজটি করে থাকে। আর লেবুর পেকটিন অনেকক্ষণ ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, তাই ওজন কমে। তবে এই মিশ্রণ ত্বককে ভালো রাখতে ও ঠান্ডা-কাশি প্রতিরোধে খুবই উপকারী।
সঠিক জীবনযাত্রা, হাঁটা ও ক্যালরি নিয়ন্ত্রণের জন্য সুষম খাবার গ্রহণ করা ছাড়া শুধু লেবু-মধু পানি খেয়ে ওজন কমানো সম্ভব নয়। এ ছাড়া যাদের মাইগ্রেন রয়েছে, তাঁরা বাইরের রোদে বের হওয়ার সময় এবং রোদ থেকে ফিরে এই মিশ্রণটি খেলে অনেক উপকার পাবেন। আবার যাঁরা মস্তিষ্কনির্ভর কাজ বেশি করে ক্লান্ত হয়ে পড়েন, তাঁরাও মিশ্রণটি খেলে অনেক উপকার পাবেন। খুব ঠান্ডা-কাশি লাগলেও এটি উপকারী।
লেবুর অনেক ঔষধি গুণ রয়েছে। মুরগির স্যুপের সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে খেলে দুর্বলতা কমে। ক্যানসার বা অস্ত্রোপচারের পর এভাবে স্যুপ খেলে দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠা সম্ভব। খেলাধুলার পর লেবুর শরবত খেলে শরীরে ইলেকট্রোলাইটসের ভারসাম্য রক্ষা হয়। তবে অনেকে বেশি ভালো ফল পাওয়ার আশায় পুরো একটা লেবু বা একাধিক লেবু একবারে খেয়ে ফেলেন, যা মোটেও ঠিক নয়। মনে রাখবেন অতিরিক্ত কিছুই স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়।
১। লেবুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে। একে অ্যাসকরবিক অ্যাসিডও বলা হয়। লেবুর রস কোলাগেন তৈরিতে সাহায্য করে। চামড়ায় ভাঁজ পড়া থেকে রক্ষা করে এই কোলাগেন। বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না এই কোলাগেন।
২। ভিটামিন বি কমপ্লেক্সে থাকা থিয়ামিন ও রিবোফ্লাবিন শরীরে এনার্জি তৈরি করে। শরীরে কোষের বৃদ্ধি ও কোষকে কার্যক্ষম করে তুলতে সাহায্য করে লেবুর রস।
৩। খাবারে থাকা সালমোনেলা জীবাণুকে মারতে সাহায্য করে লেবুর রস। এই লেবুর রসের সঙ্গে অল্প ভিনিগার মিশিয়ে বাথরুমে ঢাললে ১৫ মিনিটে তা পরিষ্কার হয়ে যায়।
৪। লেবুতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরে ক্যানসার হওয়া থেকে রক্ষা করতে পারে। লিভার, হাড়, স্টমাক, ব্রেস্ট ও কোলন ক্যানসার থেকে রক্ষা করে লেবুর রসের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।
৫। হার্টের রোগ সারাতেও কার্যকরী লেবুর রসে থাকা ফ্ল্যাভানয়েডস। শরীরের রক্ত থেকে ফ্যাট ও মিষ্টি দূর করতে সাহায্য করে এটি।
৬। মাড়ি থেকে রক্ত পরা, ফুলে যাওয়া এমন নানা কাজে আসে লেবুর রস। লেবুতে থাকা ভিটামিন সি দাঁতের মাড়িকে রক্ষা করে।