রাইসুল জানান, সমু চৌধুরী মাজার ভক্ত। কাজ না থাকলে প্রায় সময় তিনি মাজারে যান। এবার ঈদ কাটিয়েছেন যশোরে, মায়ের সঙ্গে। ঈদের ছুটি শেষে গত মঙ্গলবার যশোর থেকে ঢাকার মিরপুরের বাসায় ফেরেন তিনি। পরদিন পরিচিত একজনের সঙ্গে ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের একটি মাজারে যান, এক কাপড়ে।
রাইসুল ইসলাম বললেন, ‘এক কাপড়ে ময়মনসিংহ যাওয়াতে কোনো কারণে পরনের কাপড় ময়লা হয়। সেখানে তাঁর কয়েকজন ভক্তও ছিলেন। ময়লা কাপড় ধোঁয়ার পর তা শুকাতে দিয়ে তিনি গামছা পরে গাছের নিচে ঘুমাচ্ছিলেন। বাসায়ও তিনি সাদামাটাভাবে জিবনএভাবেই চলাফেরা করেন, লুঙ্গি ও গামছা পরে থাকেন, কখনো এভাবে রান্নাবান্নাও করেন। মাজারে গামছা পরে বিশ্রাম নেওয়ার সময় কেউ একজন ছবি তুলে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়। মুহূর্তেই তা ভাইরাল হয়। এতে তিনি ওই সময়ে মানসিকভাবে ট্রমাটাইজড হয়ে পড়েন ভাইয়া। তিনি কিন্তু সম্পূর্ণ সুস্থ, শারীরিক ও মানসিক—দুইভাবে তিনি ভালো আছেন। আমরা তাঁর কাছে যাওয়ার পর পুলিশের সামনেই বলল, আমার ভাই চলে আসছে, এখন আর কোনো সমস্যা নাই। এরপর আমরা গাড়িতে করে তাঁকে নিয়ে যশোর নিজ বাসায় চলে আসছি।
রাইসুল ইসলাম জানালেন, সকাল ১০টার দিকে সমু চৌধুরীকে সঙ্গে নিয়ে তাঁরা যশোর সদরের নতুন বাজারের আরএন রোডের বাসায় পৌঁছান। দুপুরে রাইসুল জানান, ‘সারা রাত জার্নিং করার কারণে ভাইয়া এখন বিশ্রাম নিচ্ছেন। মায়ের কাছে আছেন। অভিনেতা হলেও ভাইয়া সব সময় একদম সাদামাটা জীবনযাপন অভ্যস্ত। যশোর শহরে যাঁরা আছেন, তাঁদের কারও সঙ্গে কখনো তিনি সেলিব্রিটি ভাব দেখাননি। সব সময় সবার সঙ্গে আন্তরিকভাবেই চলেন।
সমু চৌধুরী ছাত্রজীবনে যশোর উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। টানা ১০ বছর উদীচীর হয়ে পথনাটক, মঞ্চনাটক ও গণসংগীত করেছেন। পরে ঢাকা উদীচী, ঢাকা থিয়েটার, নাগরিক নাট্যসম্প্রদায়ের সঙ্গে যুক্ত হন। ১৯৯০ সালে আতিকুল হক চৌধুরীর ‘সমৃদ্ধ অসীম’ নাটকের মধ্য দিয়ে টিভি নাটকে যাত্রা শুরু করেন। এরপর ‘জন্মভূমি’, ‘সাতপৌরে কাব্য’, ‘এই সময়ের গল্প’, ‘জিনের বাদশা’, ‘সোনালী রোদ্দুর’, ‘এবং আমি’, ‘সবুজের হলুদ ব্যাধি’, ‘দূরের আকাশ’সহ বেশ কিছু নাটকে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে জায়গা করে নেন জনপ্রিয় অভিনেতার তালিকায়।
নাটকের পাশাপাশি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন সমু চৌধুরী। ১৯৯৫ সালে আমজাদ হোসেন পরিচালিত ‘আদরের সন্তান’ ছবির মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে অভিষেক। এরপর ‘দোলন চাঁপা’, ‘শত জনমের প্রেম’, ‘মায়ের অধিকার’, ‘দেশ দরদী’, ‘মরণ নিয়ে খেলা’, ‘প্রেমের নাম বেদনা’, ‘যাবি কই’, ‘সুন্দরী বধূ’সহ বেশ কিছু ছবিতে অভিনয় করেন। অভিনয়ের নতুন মাধ্যম ওটিটিতেও নিয়মিত কাজ করেছেন এই অভিনয়শিল্পী। ৩৫ বছরের অভিনয় জীবনে মাঝে কয়েক বছর অভিমানে অভিনয় থেকে দূরে সরে ছিলেন। এখন কয়েক বছর ধরে আবার নিয়মিত তিনি।
সমু চৌধুরী বিয়ে করেনাই। তিন ভাইবোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। জানা গেছে, তাঁর ভাই-বোন দুজনেই মারা গেছেন। বাবাও বেঁচে নেই। মা-ই শুধু এখন বেঁচে আছেন। এদিকে রাইসুল ইসলাম বললেন, ‘কোনো কিছু না জেনে, মনগড়া কথাবার্তা দিয়ে একটা পক্ষ সমু চৌধুরীকে মাজারের বিশ্রামের বিষয়কে ইস্যু বানিয়ে নানান কনটেন্ট বানানোর চেষ্টা করেছেন, এটা খুবই অন্যায়। কিছু না জেনে এভাবে একজন অভিনয়শিল্পীকে উপস্থাপন করা মোটেও উচিত হয়নি। চতুর্দিক থেকে যার যার মতো করে মনগড়া কথাবার্তা ছড়াতে শুরু করেছিল। সবাইকে বলতে চাই, সমু ভাই ভালো আছেন, সুস্থ আছেন শারীরিক ও মানসিক দুইভাবেই। মায়ের কাছে আছেন
অভিনেতা সমু চৌধুরী জীবন বৃত্তান্ত -জন্ম ৮ই জুন ১৯৬৪ সালে যশোরের বিখ্যাত চৌধুরী পরিবারে। যশোর জিলা স্কুল হতে ১৯৮১ সালে এসএস সি ঢাকা কলেজ হতে এইচ এস সি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে ১৯৮৯ সালে এম এস এস ডিগ্রী অর্জন করেন। ৯০ দশকে বেড়ে উঠা প্রজন্মের নিকট তিনি ছিলেন স্বপ্নের মানুষ সুদর্শন স্মার্ট এক পুরুষ। ১৯৯০ সালে আরিফুল হক চৌধুরীর সমৃদ্ধ অসীম নাটক দিয়ে ওনার শোবিজে আগমন।অতঃপর জন্মভূমি,বিবর্ণ প্রজাপতি,দূরের আকাশ,কালো জোছনা সহ অসংখ্য নাটক।বিজ্ঞাপন নির্মাতারা তো ওনার শিডিউল নিতে পারতেন না চলচ্চিত্রের পরিচালকদের অনুরোধ রক্ষার্থে ওনি অভিনয় করেছেন জিনের বাদশা,আদরের সন্তান,মায়ের অধিকার, সুন্দরী বধূ সহ অনেক মুভি। অভিনয় কে যারা সাধনা হিসাবে গ্রহন করেছেন,সমুদা তাঁদের একজন। কিন্তু সমুদার কেন জানি সংসার করা হলনা,ওনি সূফি মতাদর্শে বিশ্বাসী হতে শুরু করলেন,শান্তির বদলে প্রশান্তি খোঁজতে শুরু করলেন। সৃষ্টি কর্তা আমাদের সমুদা কে প্রশান্তিতে রাখুন সে প্রত্যাশা করি।