বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ১০:১৩ অপরাহ্ন

ঠিকাদার পলাতক, চরম ভোগান্তিতে এলাকাবাসী

মিনহাজ দিপু,কয়রা প্রতিনিধি।
  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৫
খুলনার কয়রা উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের গ্র্যাজুয়েট মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে হায়াতখালি বাজার পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প ২০২৩ সালের এপ্রিলে শুরু হলেও, দীর্ঘ এক বছর পেরিয়ে গেলেও কাজের অগ্রগতি নেই বললেই চলে। সড়কের শুরুতে কিছু নিম্নমানের খোয়া ও বালু ফেলে কাজ শুরু করলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স এস আর ট্রেডার্স হঠাৎই গা ঢাকা দেয় গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, শুধু বালির কাজ করেই প্রায় ১ কোটি ৫৫ লাখ টাকার বিল উত্তোলন করেছে ঠিকাদার মো. শহিদুল ইসলাম সোহেল (ওরফে পিল সোহেল)। অভিযোগ রয়েছে, সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের প্রভাব খাটিয়ে এবং অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে বিল আদায় করেন তিনি। নিম্নমানের কাজের প্রতিবাদ করলে স্থানীয়দের হুমকি ও চাঁদাবাজি মামলার ভয় দেখানো হতো বলেও অভিযোগ তাদের।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ৩.৭৭৫ কিমি দীর্ঘ সড়কজুড়ে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। বর্ষা মৌসুমে এসব গর্তে পানি জমে চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। শুকনো মৌসুমে ধুলার কারণে নাকাল হচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও পথচারীরা। বিশেষ করে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী ও ছোট শিশুরা প্রতিনিয়ত ঝুঁকির মধ্যে পথ চলতে বাধ্য হচ্ছে।
মঠবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা মাস্টার হারুন অর রশিদ বলেন, “অনেক বছর ধরে এই রাস্তায় যাতায়াত করি, কিন্তু এমন দুরবস্থা আগে কখনো দেখিনি। বর্ষায় কাদা, শুকনোয় ধুলো। কাজের নামে মানুষকে বিপদে ফেলেছে ওরা।”
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রকল্পটির জন্য ৪ কোটি ৭৩ লাখ ৭৬ হাজার ৭৪৪ টাকার চুক্তি হয়। কাজ শেষ করার নির্ধারিত সময় ছিল ৫ এপ্রিল ২০২৪। তবে এলজিইডির তথ্যমতে, একাধিকবার তাগিদ ও ২৮ দিনের চূড়ান্ত নোটিশ দিয়েও কোনো সাড়া মেলেনি ঠিকাদারের পক্ষ থেকে। ফলে এলজিইডি ইতোমধ্যে কাজ বাতিলের সুপারিশ করেছে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মালিক মো. শহিদুল ইসলাম সোহেল বর্তমানে একাধিক মামলার পলাতক আসামি। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও বন্ধ রয়েছে বলে জানা গেছে।
এলাকাবাসীর দাবি, দ্রুত এ সড়কটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করে তাদের দীর্ঘদিনের ভোগান্তির অবসান ঘটানো হোক এবং সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার ও দায়িত্বপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
কয়রা উপজেলা প্রকৌশলী মো. দারুল হুদা বলেন, কাজ শেষ করতে আমরা ঠিকাদারকে বার বার তাগিদপত্র ও ২৮ দিনের চূড়ান্ত নোটিশ দেয়ার পরও ঠিকাদার কোন উদ্যোগ গ্রহন করেনি । ফলে আমরা কাজটি বাতিলের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট সুপারিশও করেছি।
আপনার মন্তব্য লিখুন

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ
  • © All rights reserved © 2019 alokitoswapner-bd.com - It is illegal to use this website without permission.
Design & Developed by Freelancer Zone
themesba-lates1749691102