ঈদের ছুটির একদিন যদি পরিবার বা প্রিয়জনের সঙ্গে ঢাকার মধ্যেই একটু ভিন্ন স্বাদের কোথাও সময় কাটাতে চান, তাহলে ঘুরে আসতে পারেন বিমান বাহিনী জাদুঘর থেকে। ঢাকার তেজগাঁওয়ে অবস্থিত স্থানটি সাধারণ মানুষের কাছে ‘পুরোনো বিমানবন্দর মাঠ’ বা ‘বিমানবন্দর পার্ক’ নামে পরিচিত।
ফটোস্যুটের আকর্ষণীয় লোকেশন : বর্তমানে বিনোদনকেন্দ্রটি ভীষণ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বিস্তীর্ণ খোলা মাঠ, মনোমুগ্ধকর সাজানো পরিবেশ, নানা রকম রাইড, স্ট্রিট ফুড আর ছবি তোলার আকর্ষণীয় লোকেশন—সব মিলিয়ে এটি এখন ঢাকাবাসীর কাছে ঈদের ছুটিতে ঘোরার জন্য চমৎকার এক গন্তব্য।
বিশাল বিশাল বিমান : জাদুঘরে প্রবেশ করতেই চোখে পড়বে বিশাল বিশাল বিমান। বিশেষ করে বিভিন্ন ধরনের যুদ্ধবিমান, প্রশিক্ষণ বিমান, হেলিকপ্টার। এর মধ্যে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধে ব্যবহৃত মিগ-২১, এফ-৭ যুদ্ধবিমান, মিগ-১৯ বিমান এবং সুখোই-৩০ এমকে যুদ্ধবিমান। এ ছাড়া জাদুঘরে রয়েছে এল-৪০১ এবং এল-৩৫০ এর মতো প্রশিক্ষণ বিমান। বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, বাংলাদেশের প্রথম যাত্রীবাহী বিমান ‘বলাকা’।
শিশু ও বড়দের জন্য কিছু রাইড : চোখে পড়বে বিশাল খোলা রানওয়ে, যেখানে একসময় প্লেন ওঠানামা করতো। বর্তমানে এটি শিশুদের সাইকেল চালানো, পরিবার নিয়ে হাঁটাহাঁটি কিংবা প্রাকৃতিক আলোয় ছবি তোলার জন্য অত্যন্ত জনপ্রিয়। মাঠের এক প্রান্তে বসানো হয়েছে বিভিন্ন রকমের চমৎকার রাইড, নাগরদোলা, ট্রেন, শিশুদের কার রাইড, হেলিকপ্টার রাইড ইত্যাদি। রাইডগুলো মূলত শিশুদের জন্য হলেও বড়রা কিছু কিছু রাইড উপভোগ করতে পারেন। প্রত্যেক রাইডের জন্য আলাদা করে টিকিট কাটতে হয়।
মুক্ত আকাশের নিচে পরিবারসহ পিকনিক স্পট : পুরোনো বিমানবন্দর মাঠটির সৌন্দর্য অনেকটা মুক্ত আকাশের নিচে নিঃশ্বাস নেওয়ার মতো। এখানে পরিবারগুলো পিকনিকের মতো করে বসে পড়ে, কেউ কেউ ফুটবল খেলছে, কেউ ঘুড়ি উড়াচ্ছে, আবার অনেকে প্রিয় মানুষকে নিয়ে হাঁটছেন হাত ধরাধরি করে।
মুখরোচক খাবার : খাবারপ্রেমীদের জন্যও পুরোনো বিমানবন্দর এলাকা দারুণ এক স্পট। মাঠের আশপাশে রয়েছে বাহারি স্ট্রিট ফুড—ফুচকা, চটপটি, নানরুটি-কাবাব, আইসক্রিম, কোমলপানীয় ও নানা রকম ভাজাভুজি। এখানে বসেই পরিবার নিয়ে খোলা আকাশের নিচে আড্ডা দিতে দিতে খাওয়া-দাওয়া করার আলাদা এক আনন্দ আছে।
সন্ধ্যার পরে রঙিন বাতি : বিশেষত ঈদের সময়, বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামতেই এখানে মানুষের ভিড়ে যেন মেলার পরিবেশ তৈরি হয়। তখন পুরো জায়গাটি রঙিন বাতিতে আলোকিত হয়ে ওঠে। এ ছাড়া জায়গাটির সৌন্দর্য, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং নিরাপত্তার বিষয়টি বেশ উন্নত হওয়ায় পরিবার নিয়ে নির্ভয়ে সময় কাটানো যায়।
যেভাবে যাবেন : মিরপুর, আগারগাঁও, মহাখালী, ফার্মগেট—এসব জায়গা থেকে রিকশা বা বাসে সহজেই পৌঁছানো যায়। তেজগাঁও রেলস্টেশন ও বিজয় সরণির কাছাকাছি হওয়ায় যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো।