জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সহকারী প্রক্টর শামীমা নাসরিন জলির বোরকা নিয়ে কটূক্তি করেছেন শাখা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি নবীনুর রহমান নবীন। মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুরাদ চত্বর সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
থার্টি ফার্স্ট নাইটে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অভিযান চালাচ্ছিল। এ সময় ৮-১০ জনের একটি প্রাইভেট কারের মাধ্যমে সন্দেহজনকভাবে চলাচল করছিল। গাড়িটি থামিয়ে পরীক্ষা করা হলে, সেখানে একজন নারী শিক্ষার্থী নিজেকে ৫০ ব্যাচের শিক্ষার্থী হিসেবে পরিচয় দেন। জাবি ছাত্রদল নেতা নবীনুর রহমান ওই শিক্ষার্থীকে চলে যেতে বলেন। সহকারী প্রক্টর শামীমা নাসরিন তার পরিচয় জানতে চাইলে নবীন আক্রমণাত্মক ভাষায় কথা বলেন এবং সহকারী প্রক্টরের পোশাক নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন।
এ ঘটনায় প্রতিবাদে বুধবার (০১ জানুয়ারি) রাত ১০টায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন। শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, ‘‘গণঅভ্যুত্থানের পর স্বাধীন বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন আচরণ মেনে নেওয়া যায় না।
শামীমা নাসরিন জলি এ ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘আমরা দায়িত্ব পালন করছিলাম। একজন ড্রাইভিং লাইসেন্স ব্যতীত গাড়ি চালাচ্ছিল। আমরা ক্যাম্পাসে এটি আপাতত নিষেধ বলে বুঝানোর চেষ্টা করছিলাম। তখন নবীন এসে তাদের চলে চেতে বলে। আমি খুবই নমনীয় ভাষায় তার পরিচয় জানতে চাইলে তিনি আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে আমার সাথে কথা বলেন। আমার পোশাক নিয়ে কটূক্তি করেন। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী নতুন বাংলাদেশে কেন পোশাক নিয়ে হেনস্তার শিকার হতে হবে? নতুন স্বাধীনতার পর এমন ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত।
অন্যদিকে, সাবেক ছাত্রদল নেতা নবীন অভিযোগের বিষয়ে বলেন, আমরা কয়েকজন হাঁটছিলাম তখন দেখলাম একটি গাড়িয়ে থামিয়ে জিজ্ঞসাবাদ করা হচ্ছে এবং একজন শিক্ষার্থীকে হেনস্তা করা হচ্ছে। আমি ক্যাম্পাসের সাবেক একজন শিক্ষার্থী হিসেবে সেখানে কথা বলছিলাম পরিস্থিতি ঠিক করার জন্য। আমরা সবাই মিলেই তো ক্যাম্পাসকে নিরাপদ রাখবো তাইনা? সাবেক হয়েছি বলে কি থার্টিফার্স্ট নাইটে নিজেদের মতো ঘুরতে পারি না? আগে তো আমরা সবাই মিলে ঘোরাঘুরি করতাম। আমরা তো ক্যাম্পাসে কোন অপকর্ম করতে আসিনি, আমাদের গাড়ির কাগজপত্র দেখিয়েছিলাম সেখানে। সে সময় আমি বলি তাহলে কি আমরা বোরকা পড়ে বসে থাকবো নাকি এবং এটি আমি তাকে উদ্দেশ্য করে বলি নাই বরং বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের স্বাধীনতাকে উদ্দেশ্য করে বলেছি।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম জানান, ‘‘যদি ভুক্তভোগী লিখিত অভিযোগ দেন, তবে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’’