ট্রেনে পদ্মা সেতু হয়ে ৪ ঘণ্টায় ঢাকা-খুলনা।
পদ্মা সেতু দিয়ে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী জংশন হয়ে ঢাকা থেকে খুলনা ও বেনাপোল পর্যন্ত দুটি নতুন আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল শুরু হচ্ছে; এতে এ দুই পথে যেতে সময় লাগবে চার ঘণ্টার কম।
আগামী মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) জাহানাবাদ এক্সপ্রেস ও রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস নামের ট্রেনগুলো নিয়মিত চলাচল শুরু করবে।
শনিবার থেকে দুটি ট্রেনের টিকিট বিক্রি শুরু হবে। টিকেট কেনা যাবে অনলাইনে এবং নির্ধারিত স্টেশনের কাউন্টার থেকে। দুটি ট্রেনই সপ্তাহে বন্ধ থাকবে সোমবার।
বুধবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রেলপথ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এ দুটি ট্রেন চলাচল উদ্বোধন করবেন।
ঢাকা থেকে খুলনা রুটের ট্রেনের নাম হবে জাহানাবাদ এক্সপ্রেস এবং বেনাপোল রুটের ট্রেনের নাম রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস।
বর্তমানে ঢাকা থেকে খুলনার পথে দুটি আন্তঃনগর ট্রেন সুন্দরবন এক্সপ্রেস ও চিত্রা এক্সপ্রেস চলাচল করে। এরমধ্যে সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেন পদ্মা সেতু হয়ে এবং চিত্রা এক্সপ্রেস বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে চলাচল করছে। ২০২৩ সালের ১ নভেম্বর থেকে ঢাকা-খুলনা রুটে নকশীকাঁথা নামে একটি কমিউটার ট্রেন চলছে।
এর আগে ঢাকা থেকে বেনাপোল রুটের বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেন বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে চলাচল করত। এটি এখন পদ্মা সেতু হয়ে ভাঙ্গা, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, দর্শনা, যশোর হয়ে বেনাপোলে যায়।
রেলের কর্মকর্তারা বলেন, নতুন ট্রেনের পাশাপাশি আগেরগুলোও যথারীতি চলবে।
জাহানাবাদ এক্সপ্রেস সকাল ৬টায় খুলনা থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হবে এবং ঢাকার কমলাপুরে পৌঁছাবে বেলা ৯টা ৪৫ মিনিটে। আবার ঢাকা থেকে ট্রেনটি ছাড়বে রাত ৮টায়, খুলনায় পৌঁছাবে রাত ১১টা ৪০ মিনিটে।
ট্রেনটি আসা-যাওয়ার পথে নোয়াপাড়া, সিঙ্গিয়া জংশন, নড়াইল, লোহাগড়া, কাশিয়ানী জংশন, ভাঙ্গা জংশন স্টেশনে থামবে।
অপরদিকে রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঢাকার কমলাপুর থেকে বেলা ১০টা ৪৫ মিনিটে রওনা হবে। বেনাপোল পৌঁছাবে বেলা ২টা ৩০ মিনিটে।
আবার বেনাপোল থেকে বেলা ৩টা ৩০ মিনিটে রওনা হয়ে ঢাকায় পৌঁছাবে সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটে। এটি চলাচলের পথে যশোর, নড়াইল, কাশিয়ানী, ভাঙ্গা স্টেশনে থামবে।
শুরুর দিকে দুটি ট্রেনেই মোট ১১টি কোচ, মোট আসন সংখ্যা ৭৬৮টি রাখা হচ্ছে বলে তথ্য দিয়েছে রেলওয়ে।
পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের আওতায় ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার ব্রডগেজ রেলপথ নির্মাণ করেছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। এ প্রকল্পের আওতায় ১৪টি নতুন স্টেশন ভবন ও ছয়টি স্টেশন পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে।
এই রেললাইনে ৬৬টি গুরুত্বপূর্ণ সেতু এবং ২৪৪টি ছোট সেতুও নির্মাণ করা হয়েছে।
নতুন এ রেলপথ নির্মাণ করায় ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু এবং গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী হয়ে যশোর–খুলনা রেলপথে যাতায়াতের দূরত্বের সময় কমবে প্রায় সাড়ে ৩ ঘণ্টার মত; যশোর–বেনাপোল রেলপথে ৪ ঘণ্টার মত। প্রতিটি সেকশনে পথ কমবে অর্ধেকের বেশি।