জুলাই-আগস্টে শহীদ পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেয়া শুরু করেছে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) সকালে নগরীর তারেক স্মৃতি অডিটোরিয়ামে এ অনুষ্ঠান শুরু হয়।
অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন, ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ ও সাধারণ সম্পাদক, সারজিস আলম।
জানা যায়, জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন ময়মনসিংহ বিভাগ থেকে এ পর্যন্ত ৯৩ জন শহীদের তালিকা করেছে। এর মধ্যে প্রথম ধাপে আজ ৫৫ জনের পরিবার পাচ্ছে সহায়তা। প্রত্যেক শহীদ পরিবারকে পাঁচ লাখ এবং আহত পরিবারকে ১ লাখ টাকার চেক প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তব্যের শুরুতে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম বলেন, আজকে যারা বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে রাষ্ট্রযন্ত্র পরিচালনা করছে, আজ থেকে চার মাস আগে তারা তাদের এই সার্ভিসের সবচেয়ে বেশি বৈষম্যের শিকার হয়েছিল। আন্দোলনের মাধ্যমে, যাদের প্রাণ ও রক্তের বিনিময়ে এত বড় একটা অর্জন, এত বড় একটা পরিবর্তন ঘটেছে, তাদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। আমরা আপনাদের কাছে ক্ষমা চাই এই কারণে যে যত দ্রুত আপনাদের পাশে আমাদের দাঁড়ানো প্রয়োজন ছিল আমরা সেটা করতে পারিনি।
তিনি আরো বলেন, জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন আপনাদের ফাউন্ডেশন। এর মাধ্যমে এ ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহযোগিতা শুরু হলো, ধাপে ধাপে আরো আর্থিক সহযোগিতা দেওয়া হবে। শহীদ পরিবারের অন্তত একজনের চাকুরীর ব্যবস্থা করা, আমাদের যে আহত যোদ্ধারা অনেকদিন ধরে এই বিষয়টা নিয়ে ভুগবে কিংবা যে ভাই আমাদের চোখ হারিয়েছে, হাত-পা হারিয়েছে, তাদেরকে একটা পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা এই ফাউন্ডেশনরই কাজ হবে। এটা রাষ্ট্রের দায়বদ্ধতা, আমাদের দায়বদ্ধতা। আমাদের এ পরিকল্পনাগুলো সাজানো হচ্ছে। ডিসেম্বরের মধ্যে ভেরিফিকেশনগুলো কমপ্লিট হলে আমরা আমাদের প্রাথমিক সকল সহযোগিতা পৌঁছে দিব এবং আমাদের জায়গা থেকে অন্যান্য প্রক্রিয়াগুলো শুরু করব।
অনুষ্ঠানে ময়মনসিংহের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মোঃ ইউসুফ আলী বক্তৃতায় বলেন, আমরা সবাই মিলে একটি বৈষম্যবিরোধী বাংলাদেশ গড়ে তুলবো। যার যতটুকু ন্যায্য হিস্যা, যতটুকু যোগ্যতা, যতটুকু পাওনা, এটি আমরা সবাই মিলে নিশ্চিত করবো।
অনুষ্ঠানে মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধের সঞ্চালনায়, আরো বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত ডিআইজি মোঃ শরিফুর রহমান, জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মোঃ শামীম হোসেন এবং শহীদ শাফিক উদ্দিন আহম্মেদ আহনাফের আম্মা।
প্রত্যেক শহীদ পরিবারের হাতে অনুদানের চেক দেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলমসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। চেক পেয়ে শহীদ পরিবারের সদস্যরা আপ্লুত হয়ে পড়েন।
উপস্থিত ছিলেন , ময়মনসিংহ বিভাগের চার জেলার শহীদ পরিবারের সদস্য, ছাত্র, শিক্ষক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, প্রিন্ট ও ইলেকট্রিক মিডিয়ার সাংবাদিকসহ জেলা ও উপজেলা সমূহের সাধারণ মানুষ।