” বিশ্ব শিক্ষক দিবস “-জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক ২০২৪,তারাকান্দা উপজেলার শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষক ও শ্রেষ্ঠ গুণী শিক্ষক সম্মাননা পেলেন মোহাম্মদ তৌহিদুল কবির।
শনিবার (৫ অক্টোবর) বিশ্ব শিক্ষক দিবস। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও যথাযথ মর্যাদায় দিবসটি পালিত হচ্ছে। গত ২০২৩ সালের বিশ্ব শিক্ষক দিবসের প্রতিপাদ্য ” The transformation of Education begins with teacher ” অর্থাৎ “শিক্ষার পরিবর্তন শিক্ষক দিয়ে শুরু হয় “। এবছর, ২০২৪ সালের প্রতিপাদ্য “ শিক্ষকের কন্ঠস্বর : শিক্ষায় একটি নতুন সামাজিক অঙ্গীকার। তবে এবার অন্য বারের চেয়ে বেশ জাঁকজমকপূর্ণভাবেই সরকারিভাবে বাংলাদেশে এ দিবসটি পালিত হয়েছে।
২০২৪’ উপলক্ষে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কিছু কর্মসূচি নিয়েছে । তারমধ্যে অন্যতম, শিক্ষকের অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ তাদের সম্মাননা জানানো। তারই ধারাবাহিকতায় জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক ২০২৪ এর সম্মাননায় ভূষিত
তারাকান্দা উপজেলার শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষক ও শ্রেষ্ঠ গুণী শিক্ষক সম্মাননা পেলেন মোহাম্মদ তৌহিদুল কবির।
জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক ২০২৪ এর আওতাধীন ময়মনসিংহ জেলার তারাকান্দা উপজেলার শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন তিনি।
মোহাম্মদ তৌহিদুল কবির নানান প্রতিভার অধিকারী ছোটবেলা থেকেই। বর্তমানেতিনি” চরগোপীনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে’র সহকারী শিক্ষকের দায়িত্ব পালনে ব্যস্ত জীবন পাড় করছেন ।
সূত্রমতে জানা যায়, মোহাম্মদ তৌহিদুল কবির ১৯৭৭ সালে ফুলপুর উপজেলার রূপসী ইউনিয়নের নৈহাটি গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার মা রহিমা খাতুন একজন শিক্ষিতা আদর্শ গৃহিণী ও বাবা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী।
তৌহিদুল কবির নিজ গ্রামের নৈহাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে বালিয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৯১ সালে লেটারসহ,(এস এস সি) পাস করেছেন।
এরপর ফুলপুর ডিগ্রি কলেজ থেকে ১৯৯৩ সালে (এইচ এস সি) পাশ করে পরবর্তীতে সরকারি আনন্দমোহন কলেজ থেকে রসায়নে অনার্সসহ মাস্টার্স কমপ্লিট করেন।
পরিবারের বড় ছেলে হিসেবে পরিবারের দ্বায়িত্ব পালনের জন্য লেখাপড়া শেষ কার মাত্রই ‘অপসোনিন ফার্মায়’ মেডিকেল প্রমোশন অফিসার হিসেবে চাকুরিতে যোগদান করেন।
দীর্ঘ ৬ বছর চাকরি সেখানে চাকরি করার পর শিক্ষকতা পেশাকে ভালোবেস ২০০৭ সালে শিক্ষা পেশায় দায়িত্ব পালন করতে শুরু করেন তিনি ।
শিক্ষকতা পেশার শুরু থেকে তিনি প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়নে রেখেছেন বলিষ্ঠ অবদান। তিনি প্রাথমিক বিজ্ঞান ও গণিত অলিম্পিয়াড এর একজন স্বনামধন্য মাস্টার ট্রেইনার।
তাছাড়া উপজেলার আইসিটি প্রশিক্ষণের একজন দক্ষ প্রশিক্ষক। এক সময় ক্লাস্টারের সহায়ক প্রশিক্ষক হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করতেন। ছিলেন গণিত বিষয়ের নিরীক্ষক।
ছাত্র জীবন থেকেই লেখালেখিতে অতীব আগ্রহ ছিল তার। যায় যায় দিন সাপ্তাহিক ম্যাগাজিনের একসময়কার নিয়মিত লেখক ছিলেন তিনি।
অন্যান্য সাময়িকীতেও তার অসংখ্য গল্প, কবিতা, ফিচার নিয়মিত ছাপা হয়। তিনি একজন সাবলীল কবিতা আবৃত্তিকার।
উল্লেখ্য তিনি ২০২৪ সালে তারাকান্দা উপজেলার শ্রেষ্ঠ গুণী শিক্ষক হিসাবেও স্বীকৃতি পেয়েছেন।
মেধা ও শ্রম দিয়ে বহু শিক্ষার্থীকে মেডিকেল, বিশ্ববিদ্যালয় সহ বিভিন্ন নামী-দামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নের সুযোগ করে দিয়েছেন তিনি। তার একমাত্র সন্তান ময়মনসিংহ গার্লস ক্যাডেট কলেজে অধ্যয়নরত বিধায় প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে তার আর কোন পিছুটান নেই বলে তিনি জানিয়েছেন। অবশিষ্ট জীবনে তিনি শিশুদের জন্য তথা প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করতে চান।
এখানে উল্লেখ্য যে,শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ব শিক্ষক দিবস ১৯৯৫ সাল থেকে প্রতি বছর ৫ সেপ্টেম্বর বিশ্বব্যাপী পালন করা হয়। ইউনেস্কোর মতে, বিশ্ব শিক্ষক দিবস শিক্ষা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে শিক্ষকদের অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ পালন করা হয়। বিশ্বের ১০০টি দেশে এই দিবসটি পালিত হয়ে থাকে। এই দিবসটি পালনে এডুকেশন ইন্টারন্যাশনাল ও তার সহযোগী ৪০১টি সদস্য সংগঠন মূল ভূমিকা রাখে। দিবসটি উপলক্ষে ইআই প্রতি বছর একটি প্রতিপাদ্য বিষয় নির্ধারণ করে থাকে যা জনসচেতনতা বৃদ্ধির সাথে সাথে শিক্ষকতা পেশার অবদানকেও স্মরণ করিয়ে দেয়।