শরতের কাশফুল আর দু দিনের টানা গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির মাঝে কারিগরদের প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ততা জানিয়ে দিচ্ছে দেবী দুর্গার আগমনী বার্তা।
হিন্দু ধর্মাবলম্বীর সর্ব বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। মালির হাত ও কামকাঠির নিপুণ ছোয়ায় ফুটে উঠছে প্রতিমার রূপ! সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, দুষ্টের দমন আর শিষ্টের পালনের জন্যই স্বর্গ থেকে মর্ত্যলোকে দেবী দুর্গার আগমন ঘটে। এরই ধারাবাহিকতায় সনাতন ধর্মাবলম্বীরা প্রতিবছর শারদীয় উৎসব হিসেবে দুর্গাপূজা উদযাপন করে আসছে।শেষ মুহূর্তে প্রতিমা তৈরির কারিগরদের হাতের ছোঁয়ায় মূর্ত হয়ে উঠছে দেবীর রূপ। এর পরেই শুরু হবে রং তুলির আঁচর ।অন্যদিকে মণ্ডপের সাজসজ্জাসহ সার্বিক প্রস্তুতি দ্রুত এগিয়ে নিচ্ছেন আয়োজক ও পূজা উদযাপন কমিটি।
কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের মৎশিল্পী ধরনী কান্ত বর্মনের বাড়ীতে গিয়ে দেখা যায় পরিবার পরিজন নিয়ে প্রতিমা তৈরীতে র্নিঘুম দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে।তিনি জানান,প্রতিমা তৈরিতে যে টাকা আয় হয় তা দিয়ে সংসার চলে না। তেমন আর্থিক ভাবে লাভবান না হলেও অনেকেই বাপ-দাদার পেশা ধরে রাখতেই প্রতিমা তৈরীতে কাজ করছেন । মূলত প্রতিমা তৈরী করেই চলে তাদের সংসার।পূজার এক থেকে দেড় মাস আগেই শুরু হয় প্রতিমা তৈরীর কাজ। বাঁশ,রশি, খর ও রংয়ের দাম বাড়লেও সে হারে প্রতিমা তৈরির দাম বাড়েনি। প্রতিটি প্রতিমার ১৫ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা দরে চুক্তি হয়েছে। সহযোগীদের মজুরী ও অন্যান্য খরচ মিটিয়ে প্রতিটি প্রতিমা তৈরীতে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা আয় হবে। এ শিল্প থেকে যা আয় হয় তা দিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম থেতে হচ্ছে তাদের।
নওদাবশ গ্রামের মৃৎ শিল্পী তরনীকান্ত জানান,দূর্গাপূজায় প্রতিটি মন্ডপে আলোক বাহারী সজ্জা,বাদ্যবাজনাসহ আনুষাঙ্গিক বাবদ পূজা কমিটি অঢেল টাকা খরচ করলেও এ শিল্পের সঙ্গে জড়িতদের মজুরী বাবদ প্রয়োজনীয় অর্থ দিতে চান না। তিনি এশিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে সরকারের কাছে প্রয়োজনীয় আর্থিক সহযোগিতা কামনা করেছেন।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি কার্ত্তিক চন্দ্র সরকার ও বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অনীল চন্দ্র রায় জানান, এ বছরেও ৬৭ টি পূজা মন্ডপের শারদীয় দূর্গোৎসব শান্তির্পূণ ভাবে পালিত হবে। আগামী ৯ অক্টোবর বুধবার মহা ৬ষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে ১২ অক্টোবর শনিবার পর্যন্ত বিজয়াদশমী মধ্য দিয়ে পাঁচদিন ব্যাপী এ দূর্গোৎসব পালিত হবে।
প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রেহেনুমা তারান্নুম জানান, এ বছর পূজা মন্ডপগুলোতে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোড়দার করা হবে। প্রতিটি পূজা মন্ডপে আনসার বাহিনীর সঙ্গে পুলিশ ,র্যাব বাহিনীসহ আয়োজক কমিটির সদস্যরা সার্বক্ষনিক নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে।