সোমবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:২১ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
কিশোর গ্যাংয়ের ১১ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে সেনাবাহিনী। ফেরারির মতো ছুটছি, সামনে কোনো ভবিষ্যৎ নেইঃ ছাত্রলীগ নেতা। বিএনপি-জামায়াতের বাড়িঘরে হামলার নির্দেশ দিলেন হাসিনা। গোয়ালন্দে যুবদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে দুই গ্রুপের পৃথক কর্মসূচি পালন। সাবেক গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন গ্রেফতার। সনাতন ধর্মাবলম্বী দুপক্ষের সংঘর্ষে প্রতিমা ভাঙচুর। সাবেক ডিএমপি কমিশনার গোলাম ফারুককে আটকে দিল ইমিগ্রেশন পুলিশ। তারাকান্দা নেতৃবৃন্দের সাথে যুক্তরাজ্য বিএনপি’র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ’র সাথে  মতবিনিময় সভা। তারাকান্দা সদর ইউনিয়ন কৃষক দলের উদ্যোগে কর্মী সভা অনুষ্ঠিত। শাবিপ্রবিতে প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু ৩ নভেম্বর।

প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ৩৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগ।

মোঃ মোয়ান্নাফ হোসেন শিমুল, নিজস্ব প্রতিবেদক জয়পুরহাট,
  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ৮ জুন, ২০২৪
প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ৩৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগ।
জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলায় এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ৩৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগ করেছেন  ওই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি।
সেই অভিযোগে প্রেক্ষিতে ওই প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত ও করেছেন প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি।
এমনই এক ঘটনা ঘটেছে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার তিলকপুর আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে।
গত বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে,
প্রধান শিক্ষকের কক্ষে বসে দায়িত্ব পালন করছেন আমিরুল ইসলাম সুইট। আবার ঠিক তার পাশের কক্ষে বসে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককের দায়িত্ব পালন করছেন আরেকজন সহকারি শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ।
তবে আমিরুল ইসলামের দাবি তিনি আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে হওয়া একটি সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করছেন।
অপর দিকে সহকারি শিক্ষক আবুল কালাম আজাদের দাবি তিনি সভাপতির স্বাক্ষরিত একটি চিঠির ভিত্তিতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন ।
মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস এবং ওই বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, তিলকপুর বাজার এলাকার বাসিন্দা শহীদুল ইসলাম আজাদ দীর্ঘ ১১ বছর থেকে ওই বিদ্যালয়ের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন। আর্থিকসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রধান শিক্ষক আমিরুল ইসলাম সুইটের সাথে বনিবনা হচ্ছিলনা তার। এর জের ধরে গত ৬ মাস থেকে টাকা উত্তোলনের জন্য ব্যাংকের চেকও স্বাক্ষর করেননি সভাপতি।
কিছুদিন পর প্রধান শিক্ষক আমিরুল ইসলাম গত ১০ বছর ধরে ৩৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ এনে তাঁকে গত ০৬ মার্চ সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেন ম্যানেজিং কমিটি । তবে বরখাস্ত করার পূর্বে বিধি অনুযায়ী কারণ দর্শানো নোটিশ, কমিটি গঠন করে অভিযোগ তদন্ত এবং আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়ার কথা থাকলেও তা করা হয়নি।  এমনকি বিষয়টি রেজুলেশনভুক্তও করেননি সভাপতি।
পরে বিদ্যালয়ের ইংরেজী বিষয়ের শিক্ষক আবুল কালাম আজাদকে স্মারক নম্বর ছাড়াই একটি চিঠি দিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেন সভাপতি।
কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষককের সেই দায়িত্ব পাওয়ার কথা থাকলেও সেই বিধি মান্য করা হয়নি। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে গত কয়েক দিন আগে ওই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি, শিক্ষক, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, উপজেলা চেয়ারম্যান নিয়ে একটি সভা হয়েছে। সেই সভায় বরখাস্ত প্রক্রিয়া বিধি সম্মত হয়নি জানিয়ে সভাপতির বরখাস্ত কার্যক্রম অবাঞ্ছিত ঘোষনা করা হয়। পরে আমিরুল ইসলামকে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন এবং আর্থিক অনিয়মের অভিযোগটি তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয় ওই সভায়।
প্রধান শিক্ষক আমিরুল ইসলাম সুইট বলেন, আমার বিরুদ্ধে সভাপতির আনীত অভিযোগগুলো সত্য নয়। প্রতিষ্ঠান থেকে আমারই উল্টো ৭২ হাজার টাকা পাওনা আছে। সভাপতির বিভিন্ন অনিয়মে আমি সঙ্গ না দেওয়াই আমাকে প্রতিষ্ঠান থেকে বাহির করে দেওয়ার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন মিথ্যা অভিযোগ এনে বিধি বহির্ভূতভাবে বরখাস্ত করেছে। মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস ও ইউএনও স্যারের নির্দেশে আমি দায়িত্ব পালন করছি।ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিদ্যালয়ের সভাপতি আমাকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেন। তাই আমি দায়িত্ব পালন করছি। এর বেশি কিছু জানি না।
সভাপতি শহীদুল ইসলাম আজাদের ভাষ্য, দীর্ঘ ১০ বছর থেকে প্রধান শিক্ষক আমিরুল ইসলাম ৩৪ লাখ টাকা আত্মসাত করেছেন। তিনি অনেক বেপরোয়া হয়ে যাওয়াই তাকে থামাতে সাময়িক বরখাস্ত করে আবুল কালাম আজাদ সাহেবকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সেই অনুযায়ী তিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। সাময়িক বরখাস্ত বিধি সম্মত হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বরখাস্ত বিধি সম্পর্কে আমার ধারণা নেই। তবে ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে বরখাস্ত করে ইউএনও সাহেবকে জানানো হয়েছে।
৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী সুমাইয়া  বলেন, আমাদের স্কুলে হেড স্যার নিয়ে একটি ঝামেলা চলছে। সুইট স্যার আগে থেকেই হেড স্যার ছিলেন। কয়েক মাস থেকে আজাদ স্যারও হেডস্যারের দায়িত্ব পালন করছে। বিষয়গুলো বুঝতে পারছিনা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, এক প্রতিষ্ঠানে দুই জন ব্যক্তি প্রধানের দায়িত্ব পালন করায় আমরা পাঠদানে বিভ্রান্ত হচ্ছি। এতে শিক্ষার পরিবেশ ব্যহত হচ্ছে। অতি দ্রুত বিষয়টি সমাধান না করতে পারলে বিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রম ভেঙ্গে পড়ার আশংকা রয়েছে।
ভারপ্রাপ্ত উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জাবেদ ইকবাল হাসান বলেন, একই প্রতিষ্ঠানে দুইজন প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালনের কোন সুযোগ নেই। সভাপতি যেটি করেছেন সেটি বিধি বহির্ভূত। আমিরুল ইসলামই প্রধান শিক্ষক এমনই সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে তার আর্থিক অনিয়মের অভিযোগটি তদন্ত করে দেখা হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনজুরুল আলম বলেন, প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত প্রক্রিয়া বিধি সম্মত হয়নি। হটকারিতার মাধ্যমে কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক নয়। আমিরুল ইসলামকে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ তদন্তে প্রমানিত হলে তখন ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে একই প্রতিষ্ঠানে দুই জন প্রধান শিক্ষক থাকার কোন সুযোগ নেই।
আপনার মন্তব্য লিখুন

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ
  • © All rights reserved © 2019 alokitoswapner-bd.com - It is illegal to use this website without permission.
Design & Developed by Freelancer Zone
themesba-lates1749691102