চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বহুল প্রত্যাশিত ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল’ উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার (২৮ অক্টোবর) বেলা ১১ টা ৪০ মিনিটে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
কর্ণফুলী টানেলটি চট্টগ্রাম বন্দরকে সরাসরি আনোয়ারা উপজেলার সাথে সংযুক্ত করা ছাড়াও সরাসরি কক্সবাজারকে চট্টগ্রামের সাথে সংযুক্ত করবে।
বঙ্গবন্ধু টানেল চট্টগ্রাম নগরের পতেঙ্গা থেকে কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে আনোয়ারা উপজেলাকে যুক্ত করেছে। ফলে দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে সাগর উপকূল ঘিরে শিল্পের নতুন দুয়ার খুলে গেছে। এর মধ্য দিয়ে ইতিহাসের সাক্ষী হলো চট্টগ্রামবাসী।
তিন দশমিক ৩২ কিলোমিটার দীর্ঘ এই টানেল নিয়ে বাড়তি উচ্ছ্বাস অর্থনীতি ও যোগাযোগ খাতে। কেননা, এতে করে নদীর দক্ষিণাংশে শিল্পায়ন, রাজধানীর সঙ্গে দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের দূরত্ব কমে আসা, পর্যটনখাতের বিকাশ, গভীর সমুদ্র বন্দর কেন্দ্রিক পণ্য আনা নেয়া, এশিয়ান হাইওয়ে নেটওয়ার্কসহ নানা ক্ষেত্রে বড় এক সম্ভাবনার দুয়ার খুলে গেছে।
এই টানেল শুধু অভ্যন্তরীণ সুবিধাই বাড়াবে না, বহির্বিশ্বে জানান দেবে বাংলাদেশের নির্মাণ সক্ষমতারও। এতে সম্ভাবনা জাগছে অন্যান্য নদীর তলদেশে নতুন টানেল নির্মাণের। তাই এখন বঙ্গবন্ধু টানেলের সুফল সার্বিকভাবে পেতে আরও কিছু অবকাঠামো সুবিধা বাড়ানোর ওপর দিচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।
বঙ্গবন্ধু টানেলের মেয়াদ হবে অন্তত একশ বছর। যা প্রথম পাঁচবছর রক্ষণাবেক্ষণ করবে চীনা প্রতিষ্ঠান। এরপর প্রশিক্ষণ আর রক্ষণাবেক্ষণ সক্ষমতা অর্জনের মাধ্যমে তার পরিচালনার দায়িত্ব নেবে বাংলাদেশ। এই টানেলের কারণে জিডিপি হওয়ার কথা প্রবৃদ্ধি শূন্য দশমিক ১৬৬ শতাংশ।
জানা গেছে, ১২ ক্যাটাগরির যানবাহন চলতে পারবে বঙ্গবন্ধু টানেলে। যার টোল হারও চূড়ান্ত করেছে সেতু বিভাগ। টোলের অঙ্ক সর্বনিম্ন ২০০ থেকে সর্বোচ্চ ১ হাজার টাকা পর্যন্ত। তবে চলাচল করতে পারবে না মোটরসাইকেল বা তিন চাকার যান।
টানেলে টোল পরিশোধের জন্য ১৪টি বক্স বসানো হয়েছে আনোয়ারা প্রান্তে। সেতু বিভাগের পূর্বাভাস অনুসারে, চালুর পর প্রথম বছরে প্রতিদিন এই টানেল পার হবে ১৭ হাজার ৩৭৪টি গাড়ি। যার মধ্যে ৩ হাজার ২১৮টি ভারী যান। ২০২৫ সালে প্রতিদিন পার হওয়া যানবাহনের সংখ্যা দাঁড়াবে ২৮ হাজার ৩০৫টিতে।