বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:৫৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
সৈয়দপুর প্রিমিয়ার লীগ সিজন-৫ এর খেলোয়ার ড্রাফস সম্পন্ন। যেকোনো সময় বন্ধ হয়ে যেতে পারে সাত ব্যাংক। হলো যুদ্ধবিরতির চুক্তি, তবুও ইসরাইলি হামলায় ২০ ফিলিস্তিনি নিহত। বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে শিশুশ্রম নিরসনে বিশেষ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত। চুলকাটিতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির লিফলেট বিতরণ। সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটি মিডিয়া এন্ড জার্নালিজম ক্লাবের প্রথম সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত। এক পদে দুইবারের বেশি নয়; রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ ৪ বছর। ৪০ শতাংশ ভোট না পড়লে আবারও নির্বাচনের প্রস্তাব। কালীগঞ্জে জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ উদযাপিত হচ্ছে। চীনের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে গণঅধিকার পরিষদের বৈঠক।

ভয়াবহ বন্যায় ঘরবাড়ি হারিয়ে দিশেহারা তিন প্রতিবন্ধী। 

এ এম রিয়াজ কামাল হিরণ- চট্টগ্রাম জেলা। 
  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৩
ভয়াবহ বন্যায় ঘরবাড়ি হারিয়ে দিশেহারা তিন প্রতিবন্ধী। 
দক্ষিন চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় কয়েকদিনে টানা বর্ষণে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ঘরবাড়ি হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কলাউজান তিতারচর এলাকার মৃত রহিম বকসুর তিন প্রতিবন্ধী সন্তান। পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় মাথা গোঁজার ঠাই হারিয়ে বর্তমানে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন এই হতদরিদ্র তিন পরিবারের সদস্যরা। এই অবস্থায় সমাজের বিত্তবানদের আর্থিক সহযোগিতার দিকে তাকিয়ে আছেন তারা।
গত ৬ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া টানা অতি বর্ষণে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যায় ক্ষত-বিক্ষত হয় লোহাগাড়ার বিভিন্ন রাস্তাঘাট। পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যার পানি নদী-খালের বিপৎসীমা মাড়িয়ে ঢুকে পড়ে মানুষের ঘর-বাড়িতে। ছাড় দেয়নি ধনী-গরিব কাউকে। সেই বন্যার পানিতে ভেঙে যায় কলাউজান তিতারচর এলাকার হতদরিদ্র মৃত রহিম বকসুর তিন প্রতিবন্ধীর সন্তান বধির মোজাহের মিয়া (৭০), আবদুল্লাহ (৫০) ও মানসিক প্রতিবন্ধী সব্বির আহমদ (৫৪) এর মাটির ঘরটিও। তবে বন্যা পরবর্তী এলাকার সামর্থ্যবানরা তাদের বাড়ি নতুন করে নির্মাণ করে বসবাস করলেও উল্টো চিত্র প্রতিবন্ধীদের পরিবারগুলো বেলায়। রাত যাপনের শেষ আশ্রয়স্থলটুকু হারিয়ে বর্তমানে খোলা আকাশে দিন কাটাচ্ছেন তারা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, টংকাবতী নদীর একশ ফুট দূরেই মাটির তৈরি এক বাড়িতে বসবাস করে তিন ভাই। বন্যার পানি বাড়িতে ডুকে মাটির দেওয়াল ভেঙে পড়ে যায়। তার আগে ছেলে-মেয়েদের নিয়ে বের হয়ে যাওয়ায় বেঁচে যান তারা। না হলে এরপর পরপরই ধসে পড়া দেয়ালের নিচে চাপা পড়ে প্রাণহানির শঙ্কা ছিল তাদের।
এই প্রতিবেদককে দেখে টেনে নিয়ে যায় বধির আবদুল্লাহ। বন্যার ভেঙে যাওয়া বাড়ি দেখিয়ে হাউমাউ করে কেঁদে নানা ইঙ্গিতে বাড়ি ভাঙ্গার অংশ ও পানির তীব্র স্রোতের বিষয়ে জানান। পাশে থাকা তার স্ত্রী কথাগুলো বুঝিয়ে বলেন। তাদের সংসারে ২ মেয়ে ও ১ ছেলে সন্তান রয়েছে। কৃষি কাজ করে জীবন নির্বাহ করেন তারা। বন্যার পানিতে ভেসে যায় রোপনকৃত বিভিন্ন ফসল। এখন খোলা আকাশের নিচে পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন তারা। তার মধ্যে দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে তার একমাত্র ছেলেটিও প্রতিবন্ধী।
আরেক ভাই সাব্বির আহমদ মানসিক প্রতিবন্ধী। তার সংসারে মা হারা এক মেয়ে রয়েছে। ভিক্ষা ও মানুষের দেওয়া সাহায্যে চলে তার সংসার।
অপরদিকে, বয়োবৃদ্ধ কৃষক মোজাহের মিয়া কানে শোনেন না। তিনি জানান, সংসার চালানো যেখানে তাদের কষ্টসাধ্য সেখানে নতুন বাড়ি কীভাবে তৈরি করবেন। টংকাবতি নদীর পানি তাদের স্বপ্ন শেষ করে দিল বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
তিনি বলেন, রাত ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে বাড়তে থাকে নদীর পানি। এক পর্যায়ে বাড়ি পরিপূর্ণ হয় হাঁটু পরিমাণ পানিতে। জীবন বাঁচানোর তাগিদে পরিবার পরিজন নিয়ে ঘর থেকে বের হওয়ার সাথে সাথেই ভেঙে পড়ে পুরো বাড়িটি। গায়ের কাপড় ছাড়া কিছুই বের করতে পারিনি। নতুন বাড়ি তৈরি করার সামর্থ্য আমাদের কারো নেই।
কলাউজান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এমএ ওয়াহেদ বলেন, তিতারচর এলাকায় বন্যাকবলিত এলাকায় সরকারি সব ধরনের ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। তিনজন প্রতিবন্ধীর বাড়িটি ভেঙে গেছে। তাদের সাহায্যার্থে তালিকা প্রস্তুত করে উপজেলা প্রশাসনের কাছে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া বেসরকারি সহযোগিতাও তাদের দেওয়া হয়েছে। তবে সমাজের বিত্তবান কেউ এগিয়ে আসলে তাদের বাড়িটি দ্রুত তৈরি করা সম্ভব হবে। এ ব্যাপারে বিত্তবানদের তাদের মানবিক সহযোগিতায় এগিয়ে আসার আহবান জানাচ্ছি।
আপনার মন্তব্য লিখুন

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ
  • © All rights reserved © 2019 alokitoswapner-bd.com - It is illegal to use this website without permission.
Design & Developed by Freelancer Zone
themesba-lates1749691102