মুকুটহীন সম্রাটখ্যাত আনোয়ার হোসেন ও নবাব সিরাজউদ্দৌলা
দুঃখের বিষয় হচ্ছে ,আজকাল দেখতে পাচ্ছি,বিভিন্ন চলচ্চিত্রের মাধ্যমে ইতিহাস কে বিকৃত করার একটা অপচেষ্টা চলছে। আমাদেরকে তাই এই ঐতিহাসিক চরিত্রগুলোকে নিয়ে গবেষণা করে আরো সঠিকভাবে এই চরিত্রগুলোকে চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তুলে ধরতে হবে।
আমাদের কাজ আমাদেরকেই করতে হবে।
———————————————————————–
বাংলা চলচ্চিত্রে নবাব সিরাজউদ্দৌলা ১৯৬৭ সালে মুক্তি পাওয়া একটি ঐতিহাসিক নাট্যধর্মী চলচ্চিত্র। এটা একটি ঐতিহাসিক গল্পের চলচ্চিত্রায়ন। নবাব সিরাজউদ্দৌলার উপরে চিত্রায়িত এই কাহিনী আজও আমাদের প্রত্যেকের মনে এক বিষাদের সুর নিয়ে আসে।
এই চলচ্চিত্রটি পরিচালানা করেন বাংলাদেশের বিখ্যাত চলচ্চিত্রকার এবং সংগীত পরিচালক খান আতাউর রহমান।আর এই চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন আনোয়ার হোসেন।
আনোয়ার হোসেন বাংলা চলচ্চিত্রের একজন নন্দিত অভিনেতা। রুপালী পর্দায় তিনি বাংলার নবাব সিরাজউদ্দৌলা হিসেবেই খ্যাত।
এই চলচ্চিত্রের মাধ্যমে ঢাকার চলচ্চিত্রে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের গান প্রথম ব্যবহার করা হয়। চলচ্চিত্রের দু’টো বিখ্যাত গান ‘পথ হারা পাখি, কেঁদে ফিরে একা,’ আর ফেরদৌসী রহমানের গলায় বাইজি আলেয়ার ঠোঁটে, এবং আব্দুল আলিমের কন্ঠে গাওয়া মাঝির ঠোঁটে ‘একূল ওকূল গড়ে এইতো নদীর খেলা’ ব্যবহার করা হয়েছিল।
নবাব সিরাজউদ্দৌলা কে বৃটিশ ঔপনিবেশিক আমলে যে ভাবে চরিত্রায়িত করা হয়েছিল তা’ ছিল মানুষের মনে নবাব সিরাজউদ্দৌলার জায়গাটাকে নষ্ট করার এক ঘৃণ্য প্রচেষ্টা।
পূর্ব পাকিস্তানের এই সিরাজউদ্দৌলা চলচ্চিত্রের মাধ্যমে আনোয়ার হোসেন এমন ভাবে সত্য ঘটনা কে একটু নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে তুলে এনে ছিলেন যে, একদিকে আনোয়ার হোসেন হয়ে গিয়েছিলেন সিরাজউদ্দৌলার চরিত্রের সিরাজউদ্দৌলা। সেই সাথে সাথে আমাদের মনে সিরাজউদ্দৌলা সর্ম্পকে যে সকল নেতিবাচক গল্পগুলো প্রচলিত ছিল, ছবিটা দেখে সেখান থেকে আমরা বের হয়ে আসতে পেরেছি।আমরা যেন একেবারে এর সাথে নিজেকে একাত্ব করতে পেরেছি। দুঃখের বিষয় হচ্ছে ,আজকাল দেখতে পাচ্ছি,বিভিন্ন চলচ্চিত্রের মাধ্যমে ইতিহাস কে বিকৃত করার একটা অপচেষ্টা চলছে। আমাদেরকে তাই এই ঐতিহাসিক চরিত্রগুলোকে নিয়ে গবেষণা করে আরো সঠিকভাবে এই চরিত্রগুলোকে চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তুলে ধরতে হবে।
আমাদের কাজ আমাদেরকেই করতে হবে।
“স্টে কিউরিয়াস” খুব চেষ্টা করছে ঠিক সেই কাজটিই করতে।।
দীপা, সুমি ও দিবা