মোঃ নাজমুল হুদা, রংপুর থেকেঃ রংপুরের মিঠাপুকুরে স্ত্রীকে নির্যাতন করে হত্যার পর ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রেখে পালিয়েছে স্বামী রাজু মিয়া। অভিযোগ উঠেছে, পরকীয়া ও দ্বিতীয় বিয়েতে বাধা দেয়ায় গৃহবধূ নাসরিন বেগম (৩০) হত্যা করেছে তার স্বামী। শনিবার দুপুরে মিঠাপুকুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ সুরতহাল করে। উপজেলার পায়রাবন্দ ইউনিয়নের বৈরাগীগঞ্জ কালীগঞ্জ গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটেছে। এ ঘটনার পর থেকে রাজু মিয়াসহ তার পরিবারের লোকজন পলাতক রয়েছে।
নিহতের পরিবার ও স্থানীয়রা জানান, রংপুর নগরীর দমদমা লক্ষণপাড়া গ্রামের ইলিয়াছ মুনশির মেয়ে নাসরিন বেগমের সাথে ৫ বছর আগে মিঠাপুকুরের কালীগঞ্জ গ্রামের তালেব মিয়ার ছেলে রাজু মিয়ার সাথে বিয়ে হয়। বিয়েতে ছেলের পরিবারকে ২ লাখ টাকাসহ বিভিন্ন ধরণের উপঢৌকন দেয় নাসরিনের পরিবার। জামাই রাজু মিয়া মাদক সেবন ও জুয়া খেলে টাকা উড়িয়ে দেয়। পরে আবারও টাকা দাবি করে নাসরিনের পরিবারের প্রতি চাপ সৃষ্টি করে। টাকা না পেয়ে স্ত্রীর উপর নির্যাতন চালায়।
এরই মধ্যে রাজু একই উপজেলার বলদিপুকুর গড়েরপাড় গ্রামের এক নারীর সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। এনিয়ে স্থানীয়ভাবে বেশ কয়েকবার শালিস-বৈঠক হয়। তার পর রাজু আরও বেপরোয়া হয়ে উঠে। সম্প্রতি রাজু গোপনে ওই নারীকে দ্বিতীয় বিয়ে করে। এতে নাসরিন বাঁধা দিলে তাকে নির্যাতন করে।
শুক্রবার রাতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়েছে বলে জানান তাদের প্রতিবেশী। শনিবার সকালে ওই গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয় স্থানীয়রা। এলাকাবাসী ও নিহতের পরিবারের দাবি, রাজু তার স্ত্রী নাসরিনকে পিটিয়ে হত্যা করে ঘরের মধ্যে ঝুলিয়ে রেখে পালিয়ে যায়।
নিহতের বাবা ইলিয়াছ মুনশির বলেন, তার জামাই রাজু মাদকাসক্ত ছিল। বিয়ের পর থেকেই নাসরিনকে নির্যাতন করত। বিভিন্ন নারীর সাথে তার পরকীয়ার সর্ম্পক ছিল। সম্প্রতি গোপনে এক নারীকে বিয়ে করে। বিষয়টি জানাজানি হলে স্ত্রীর সাথে ঝগড়া হয়। শনিবার সকালে মেয়ের মৃত্যুর খবর জানতে পেরে জামাইয়ের বাড়িতে এসেছি। এখানে তো কেউ নেই। সবাই পালিয়ে যায়।
মিঠাপুকুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আমিরুজ্জামান জানান, এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরির পর ময়নাতদন্তের জন্য নিহতের লাশ রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর জন্য প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।