শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:০০ পূর্বাহ্ন

প্রথম বাংলাদেশি নারী হিসেবে মহাকাশচারী প্রার্থী সারাহ করিম

আলোকিত স্বপ্নের বিডি
  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫

বাংলাদেশের জন্য এক গর্বের মুহূর্ত সৃষ্টি হয়েছে। প্রথমবারের মতো একজন বাংলাদেশি নারী আন্তর্জাতিক মহাকাশ মিশনের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নাম সারাহ করিম। তিনি টাইটানস স্পেস ইন্ডাস্ট্রিজের ২০২৬–২০৩০ মেয়াদের মহাকাশচারী প্রার্থী দলের অংশ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন, যা বাংলাদেশের বিজ্ঞান ও মহাকাশ অনুসন্ধানে নতুন অধ্যায় উন্মোচিত করেছে।

সারাহ করিম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার এই অর্জনের কথা জানিয়ে লিখেছেন, ‘আমি বিনীত ও সম্মানিত বোধ করছি যে আমাকে টাইটানস স্পেস ইন্ডাস্ট্রিজের মহাকাশচারী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছে।’

তার ভাষায়, এটি শুধু ব্যক্তিগত অর্জন নয়, বরং বাংলাদেশের জন্য ঐতিহাসিক মুহূর্ত। কারণ ভবিষ্যতে সবকিছু ঠিক থাকলে তিনি হবেন সেই প্রথম বাংলাদেশি যিনি মহাকাশে দেশের পতাকা বহন করবেন।

শৈশবেই সারাহর মহাকাশপ্রীতি জন্ম নেয়। তিনি স্মরণ করেন, মাত্র নয় বছর বয়সে সুনিতা উইলিয়ামসকে মহাকাশ মিশন শেষে পৃথিবীতে ফিরে আসতে দেখে তার ভেতরে এমন একটি আগ্রহ জন্ম নেয়, যা কখনো ম্লান হয়নি। সেই শিশুসুলভ বিস্ময়ই তাকে আজ মহাকাশের দোরগোড়ায় এনে দাঁড় করিয়েছে। সেই স্বপ্ন আজ বাস্তবে রূপ নিতে শুরু করেছে, ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন তিনি।

আগামী বছর থেকেই সারাহ করিম আনুষ্ঠানিকভাবে মহাকাশচারী প্রশিক্ষণ শুরু করবেন। প্রশিক্ষণ শেষে ২০২৯/৩০ সালে তিনি অংশ নেবেন টাইটানস জেনেসিস মহাকাশযানের কক্ষপথ মিশনে। এই অভিযানের নেতৃত্ব দেবেন নাসার প্রবীণ মহাকাশচারী ও টাইটানস স্পেস মিশনের প্রধান কমান্ডার বিল ম্যাকআর্থার। পৃথিবীর ৩০০ কিলোমিটার ওপরে পরিচালিত এই ঐতিহাসিক অভিযানে তার অংশগ্রহণ বাংলাদেশের মহাকাশ গবেষণাকে নতুন গতি দেবে।

সারাহ করিম তার অর্জনকে প্রতিটি বাংলাদেশি মেয়ের স্বপ্নের প্রতীক হিসেবে দেখেন। তিনি লিখেছেন, ‘এটি শুধু আমার মুহূর্ত নয়; প্রতিটি বাংলাদেশি মেয়ের মুহূর্ত, যারা চুপচাপ বড় স্বপ্ন দেখে। প্রতিটি শিশুর জন্য যারা আকাশের দিকে তাকিয়ে বিস্মিত হয়।’ তার মতে, এই সাফল্য প্রমাণ করে যে স্বপ্ন দেখলে অসম্ভবও সম্ভব।

নিজের সাফল্যের কৃতিত্ব তিনি ভাগ করে নিয়েছেন পরিবার, স্বামী এবং শুভাকাঙ্ক্ষীদের সঙ্গে। তিনি লেখেন, ‘আমার স্বামী, আমার পৃথিবীকে একত্রিত করে রাখার জন্য ধন্যবাদ। যারা আমাকে সমর্থন করেছেন, আপনাদের প্রার্থনা আমাকে এই পর্যায়ে পৌঁছাতে সাহায্য করেছে।’ একই সঙ্গে তিনি টাইটানস স্পেস ইন্ডাস্ট্রিজকে ধন্যবাদ জানিয়ে লিখেছেন, ‘স্বপ্ন ছাড়া আর কিছু না থাকা এক মেয়েকে বিশ্বাস করার জন্য।’

টাইটানস স্পেস ইন্ডাস্ট্রিজ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাণিজ্যিক মহাকাশ গবেষণা ও কক্ষপথ মিশনে নিজেদের গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান তৈরি করেছে। বহু দেশের তরুণ প্রতিভা নিয়ে গঠিত তাদের প্রোগ্রামে সারাহ করিমের অন্তর্ভুক্তি শুধু তার নয়, বাংলাদেশের জন্যও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বড় এক স্বীকৃতি।

বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের মাধ্যমে মহাকাশ প্রযুক্তিতে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে। এবার একজন বাংলাদেশির সম্ভাব্য মানব মহাকাশযাত্রা দেশের বিজ্ঞানচর্চা, স্টিম শিক্ষা এবং ভবিষ্যৎ গবেষণাকে আরও এগিয়ে নেবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

সারাহ তার পোস্টের শেষ লাইনে লিখেছেন, ‘মহাকাশে বাংলাদেশের পতাকা বহন করার সম্মান আমাকে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ। একটি ছোটবেলার স্বপ্ন অবশেষে বাস্তবে পরিণত হচ্ছে। এটি কেবল শুরু।’

আপনার মন্তব্য লিখুন

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ
  • © All rights reserved © 2019 alokitoswapner-bd.com - It is illegal to use this website without permission.
Design & Developed by Freelancer Zone
themesba-lates1749691102