শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:১৭ অপরাহ্ন

মায়ের সঙ্গে মাংস কিনতে গিয়ে আর বাসায় ফেরা হলো না রাফিউলের

আলোকিত স্বপ্নের বিডি
  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৫

রাজধানীতে ভূমিকম্পের ধাক্কায় মুহূর্তেই থেমে গেল স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী রাফিউল ইসলাম রাফির জীবন। মা নুসরাত বেগমের সঙ্গে মহিষের মাংস কিনতে বেরিয়েছিলেন তিনি।

শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটের সময় রাজধানীর পুরান ঢাকার বংশালের কসাইটুলীতে একটি ভবনের নিচতলায় নয়নের মাংসের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন তারা। হঠাৎ ভূমিকম্প শুরু হয়। তীব্র ঝাঁকুনিতে দোকানের সামনে থাকা ক্রেতাদের ওপর ভবনের ছাদের রেলিং ভেঙে পড়ে।এ ঘটনায় গুরুতর আহত হন রাফিউল ও তার মা নুসরাত। স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে যান। রাফিউলকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। তার মা নুসরাত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তিনি মাথায় আঘাত পেয়েছেন।

 

বংশালের কসাইটুলীর যে ভবনটির ছাদের রেলিং ভেঙে পড়েছে, সেটিতে থাকেন সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থী মো. রাওনাক। তিনি বলেন, ভূমিকম্পে পুরো বিল্ডিং দুলছিল। ওপর থেকে কিছু পড়ার আওয়াজ শুনে তিনি নিচে যান। দেখেন, নিচের গলিতে একজন শিশুসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের কয়েকজন ধরে দ্রুত রিকশা ও ভ্যানে হাসপাতালে নিয়ে যান। ততক্ষণে নিচের অনেক লোক জড়ো হয়ে গেছেন।মাংসের দোকানটিতে আজ মহিষ জবাই করে বিক্রি করা হয়। এই মাংস কিনতে ভবনটির নিচে অনেকে ভিড় করেছিলেন।

 

বেলা একটার দিকে দেখা যায়, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালের মর্গের সামনে বসে কান্না করছেন রাফিউলের সহপাঠী ইমতিয়াজ উদ্দিন নাদিম। তিনি বলেন, ‘শুনেছি, রাফিউল তার মায়ের সঙ্গে বাজার করতে গিয়েছিল। সকালে ফেসবুক গ্রুপে দেখলাম। রাফিউলের একটা ছবি দেওয়া। মুখ থেকে রক্ত বের হচ্ছে। এখানে এসে দেখি, সে আর নেই। ওর মা গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন।’রাফিউলের আরেক বন্ধু অপু বলেন, ‘সে (রাফিউল) খুবই শান্তশিষ্ট একটা ছেলে ছিল। আমাদের সঙ্গে একসঙ্গে ক্লাস করেছে। তার মারা যাওয়ার ঘটনা আমরা কোনোভাবেই মানতে পারছি। কী বলব ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না।’জানা গেছে, রাফিউলের গ্রামের বাড়ি বগুড়া। তারা দুই ভাই-বোন। বাবা চাকরি করেন দিনাজপুরে। হলে সিট পেলেও মা ও বোনের সঙ্গে বংশালের বাসায় থাকতেন তিনি।ভূমিকম্পে হতাহতের খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে যান রাফিউলের একমাত্র বোন।স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাজহারুল ইসলাম খান বলেন, ২০ জনের মতো আহত ব্যক্তি এখানে আসেন। এর মধ্যে তিনজন মারা গেছেন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে একজনকে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।মিটফোর্ড হসপিটালে চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে রয়েছেন নিহত রাফিউলের মা নুসরাত। দায়িত্বরত চিকিৎসক লুৎফুন নেসা বলেন, ‘নুসরাতের সিটি স্ক্যান করেছি। তেমন বড় কোনো ইনজুরি আমরা পাইনি। তিনি মোটামুটি শঙ্কামুক্ত বলা যায়।’

আপনার মন্তব্য লিখুন

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ
  • © All rights reserved © 2019 alokitoswapner-bd.com - It is illegal to use this website without permission.
Design & Developed by Freelancer Zone
themesba-lates1749691102