হারুনুর রশিদ (হারুন), বদলগাছী প্রতিনিধিঃ নওগাঁর বদলগাছীতে শিশু নাজমুল (১৪) অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে বদলগাছী থানা পুলিশ। সেই সাথে পুলিশ একটি উদীয়মান গ্যাং এর কার্যক্রমকে নিষ্ক্রিয় করেছে। এ বিষয়ে একটি প্রেস রিলিজ দিয়েছে থানা পুলিশ।
বদলগাছী থানা ও প্রেস রিলিজ সূত্রে জানা যায়, গত ৬ নভেম্বর উপজেলার পূর্ব খাদাইল গ্রামের শিশু নাজমুল হোসেন তার পরিবারের সাথে প্রতিবেশী চাচার মেয়ের বিয়েতে যায়। খাওয়া-দাওয়া শেষে সাড়ে সাতটার দিকে পরিবারের সদস্যরা তাকে দেখতে না পেয়ে তার মোবাইলে ফোন করে। কিন্তু মোবাইল ফোনটি বন্ধ পায়। পরবর্তীতে আত্মীয়-স্বজনদের সাথে যোগাযোগ করেও কোনো খোঁজ পাওয়া না গেলে এলাকায় মাইকিং করে। পরের দিন (৭ নভেম্বর) সকাল ১০ টার দিকে অপহরণকারীরা নাজমুলের ফোন থেকে তার বাবার মোবাইলে ফোন করে ১৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে। নাজমুলের বাবা মুক্তিপণ দিতে রাজি হয় এবং বিকাশ নম্বর চায়। অপহরণকারীরা পরে দিবে বলে ফোন কেটে দেয়। কিন্তু তারা আর যোগাযোগ করেনি।
পরবর্তীতে ৮ নভেম্বর নাজমুলের বাবা বাদী হয়ে বদলগাছী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ৫। আসামীরা হলো বদলগাছী থানার খাদাইল গ্রামের আজম মন্ডলের ছেলে মো. মিশু মন্ডল (১৯), মিশুর বাবা মো. আজম মন্ডল (৪৮), মিশুর মা মোছা. রিনা বেগম এবং নওগাঁ সদর থানার রাইঝোড় গ্রামের মৃত উম্মত মন্ডলের ছেলে মো. সোহাগ হোসেন (৩৫) সহ অজ্ঞাতনামা আরো ৪/৫ জন। পুলিশ ঐ চারজন আসামীকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করে।
এমতাবস্থায় গত ১১ নভেম্বর সকাল সাড়ে নয় টার দিকে জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর থানার কেসের মোড়ের পশ্চিমে রেলগেটের পাশের একটি ডোবাতে নাজমুলের মৃতদেহ বস্তাবন্দি অবস্থায় উদ্ধার করে আক্কেলপুর থানা পুলিশ।
প্রযুক্তির সহায়তায় এবং বিভিন্নভাবে ব্যাপক তৎপরতার মাধ্যমে পুলিশ ঘটনার সাথে আসামী মিশু মন্ডলের সম্পৃক্ততা খঁুজে পায়। একপর্যায়ে মিশু মন্ডল অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডের সাথে তার জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।
আসামী মিশু মন্ডল, পূর্ব খাদাইল গ্রামের মো. শফিকুল ইসলামের স্ত্রী মোছা. পিংকি বেগম (৩০), একই গ্রামের মো. কালাম হোসেনের ছেলে মো. হুজাইফা (১৪) ও চকতাহের গ্রামের মো. মিলন হোসেনের ছেলে মো. সাজু আহম্মেদ ওরফে সবুজ (১৪) মিলে অপহরণপূর্বক মুক্তিপণ আদায়ের একটি গ্যাং গড়ে তোলে।
উদীয়মান এই গ্যাং এর সদস্য পিংকি বেগম মোবাইল ফোনে কাউকে প্রেমের ফঁাদে ফেলে নির্জন স্থানে ডেকে নিয়ে আসতো। আর মিশু মন্ডল, হুজাইফা ও সাজু তাকে আঘাতপূর্বক অজ্ঞান করে গোপন স্থানে আটকে রেখে মুক্তিপণ দাবী করতো।
নাজমুলকে পিংকি বেগম কৌশলে মোবাইল ফোনে প্রেমের ফাঁদে ফেলে গত ৬ নভেম্বর আনুমানিক বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে নারিকেল বাড়ী রোডে ডেকে নিয়ে যায়। সেখান থেকে আবার মোবাইল ফোনে জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর অ, পিংকি বেগম, মো. হুজাইফা ও মো. সাজু আহম্মেদ ওরফে সবুজ প্রত্যেকে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে।
এএসবিডি/আরএইচএস