রফিকুল ইসলামঃপটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার আগুনমুখা নদীতে যাত্রীবাহী স্পিডবোট ডুবির ঘটনায় পুলিশ সদস্য ও ব্যাংক পরিদর্শক সহ ৫ জন নিখোঁজ রয়েছেন। ঘটনার ২৪ ঘন্টা পেরালেও তাদের উদ্ধার করা যায়নি। বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায় আগুনমুখা নদীতে এ দুর্ঘটনা ঘটেছিল। দুর্ঘটনাকালে নদী বন্দরে ২নং সতর্ক সংকেত ও সমুদ্র বন্দরে ৩নং সতর্ক সংকেত জারি ছিল।
নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে দূর্যোগপূর্ণ এ আবহাওয়ার মধ্যে ১৮ জন যাত্রী নিয়ে রুমেন-১ নামের স্পীডবোটটি কোড়ালীয়া থেকে পানপট্টির উদ্দ্যেশ্যে ছেড়ে যায়। মাঝপথে আগুনমুখা নদীর ঢেউয়ের আঘাতে স্পীডবোট উল্টে গেলে যাত্রীরা নদীতে পরে যায়। এসময় সাঁতার কেটে ও স্থানীয়দের সহযোগীতায় চালক সহ ১৩ জন জীবিত উদ্ধার হয়। বাকি ৫ জন নিখোঁজ রয়ে যায়। নিখোঁজ ব্যাক্তিরা হলেন- রাঙ্গাবালী থানার পুলিশ কনেষ্টবল মো.মহিব্বুল্লাহ ও কৃষি ব্যাংক বাহেরচর শাখার পরিদর্শক মো.মোস্তাফিজুর রহমান, আশা ব্যাংকের খালগোড়া শাখার কর্মকর্তা কবির হোসেন, বিদ্যুতের কাজে আসা দিনমুজুর মো. ইমরান ও মো.হাসান মিয়া।
নিখোঁজদের সন্ধানে নদীতে অভিযান চালাচ্ছেন পুলিশ ও কোস্টগার্ডের কয়েকটি টিম। উদ্ধার তৎপরতায় অংশ নিত পটুয়াখালী সদর থেকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ঘটনাস্থেল আসার কথা।
প্রত্যক্ষদর্শী কৃষি ব্যাংক বাহেরচর শাখার ব্যবস্থাপক মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, নদীর মাঝখানে স্পীডবোট উল্টে গেলে সে নিচে চাপা পরেন। আরো কয়েকজন এভাবেই চাপা পরে। কিছুক্ষণ পরে সেখান থেকে তারা বেড় হতে সক্ষম হন। পরে সাঁতার কাটতে শুরু করেন। সাঁতার কেটে পাশের একটি চরে গিয়ে উঠলে, স্থানীয়দের সহযোগীতায় তারা উদ্ধার হন। তখন যারা উঠতে পারেনি, তারাই নিখোঁজ। তাদেরকে পরবর্তিতে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।
নিখোঁজদের মেধ্য রাঙ্গাবাী থানার কনেষ্টবল মো: মহিব্বুল্লাহর মা অসুস্থ। তাই ছুুঁটি নিয়ে বাড়ি যাচ্ছিলন। তার বাড়ি বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলায়। দুর্ঘটনার খবর পেয় তাৎক্ষনিক রাঙ্গাবালীর ইউএনও মাশফাকুর রহমান, থানার ওসি আলী আহম্মেদ ও ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুজ্জামান মামুন সহ পুলিশ ঘটনাস্থেল পৌঁছে উদ্ধার অভিযান চালায়। বর্তমানে উপেজলা প্রশাসন ও থানা পুলিশর উদ্যোগে উদ্ধার তৎপরতা চলেছ। বৈরী আবহাওয়ার কারণে উদ্ধার তৎপরতা অনেকটা ব্যাহত হচ্ছে। কোষ্টগার্ডও ঘটনাস্থলে অভিযান অব্যাহত রাখছেন। খবর দেয়া হয়েছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলকে।
রাঙ্গাবালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.আলী আহম্মেদ জানান, বৃহস্পতিবার সকাল থেকই বৈরী আবহাওয়া ছিল। নদী বন্দের ২ নম্বর ও সমুদ্র বন্দের ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত বহাল ছিল। এর মেধ্য লাইফ জ্যাকেট ছাড়া স্পিডবাট চালানোর দায়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। বর্তমানে মামলা প্রক্রিয়াধীন।
রাঙ্গাবালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাশফাকুর রহমান জানান, নিখোঁজ ব্যক্তিদের উদ্ধারের জন্য প্রশাসনের কয়েকটি টিম কাজ করছেন। ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল খবর দেয়া হয়েছে। তারা পৌঁছালে উদ্ধার অভিযান জোড়ালো হবে। তিনি আরও জানান, নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে স্পিডবোট চালানো কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। দোষীদের কোনভাবেই ছাড় দেয়া হবেনা। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।