ভারতে হোলির সময় উচ্ছৃঙ্খল হিন্দুদের আক্রমণের শিকার হয়ে মারা গেছেন মধ্যবয়সী এক মুসলিম ব্যক্তি। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর প্রদেশের উন্নাও জেলায়। নিহত ওই ব্যক্তির নাম শরীফ। গত শনিবার, তিনি মসজিদে যাওয়ার পথে রঙ মাখানো থেকে নিজেকে বিরত রাখতে চেষ্টা করছিলেন। এসময়, তাকে জোরপূর্বক রঙ মাখানোর চেষ্টা করে উচ্ছৃঙ্খল ওই হিন্দু যুবক-কিশোরেরা। পরবর্তীতে, মধ্যবয়সী ওই ব্যক্তিকে শারীরিকভাবে হেনস্তা ও মারধরও করা হয়, যার কিছুক্ষণ পর তার মৃত্যু ঘটে। খবরটি জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আজ তাক।
নিহত শরীফের বয়স ৪৮ বছর। তিনি সাদার কাশিম নগর রাব্বান্না মসজিদের কাছে বসবাস করতেন। শরীফ সৌদি আরবে ড্রাইভার হিসেবে কাজ করতেন। গত দুই মাস আগেই তিনি দেশে ফিরেছেন।
সেদিন, মসজিদে যাওয়ার পথে মহল্লা কাশিফ আলি সরাই চুঙ্গি পাওয়ার হাউজের কাছে একদল মানুষকে হোলি খেলতে দেখেন শরীফ। ওই সময় শরীফ রোজা অবস্থায় ছিলেন এবং নামাজে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ওই দলটি তাকে রং মাখানোর চেষ্টা করলে, শরীফ তাদেরকে নিষেধ করেন। কিন্তু তারা তার কথা না শুনে আবারও তাকে রং মাখানোর চেষ্টা করে। পরে তিনি প্রতিবাদ জানালে, তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। পরবর্তীতে, যা শারীরিক আক্রমণে রূপ নেয়।
শরীফ উচ্ছৃঙ্খল ওই হিন্দু যুবক-কিশোরদের হাতে মারধরের শিকার হওয়ার পর পথচারীরা তাকে উদ্ধার করে একটি প্ল্যাটফর্মে বসিয়ে পানি পান করান। তবে, কিছু সময় পর তিনি অচেতন হয়ে পড়েন ও পরবর্তীতে মারা যান। শরীফের মৃত্যুর পর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে পালিয়ে যায়।
শরীফের অপ্রত্যাশিত মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা সড়কে নেমে এসে দোষীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানান। পরবর্তীতে পুলিশ ও বিভিন্ন স্টেশন থেকে প্রতিক্রিয়া টিম দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সদর কটওয়ালী, আছলগঞ্জ, দাহি ও মহিলা থানা পুলিশকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগ দায়েরের পর মামলা রুজু করা হবে। এছাড়া, আক্রমণকারীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এদিকে, উন্নাও পুলিশ জানিয়েছে, কটওয়ালী সাদা থানার পুলিশ শরীফের মরদেহ উদ্ধার করার পর তার পোস্টমর্টেম সম্পন্ন করা হয়েছে। শরীফের পোস্টমর্টেম রিপোর্টে মৃত্যুর কারণ হিসেবে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট উল্লেখ করা হয়।