রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌরুটে ঘন কুয়াশার কারণে ৯ ঘণ্টা সাময়িক বন্ধ থাকার পর পুনরায় ফেরি চলাচল শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২ টা থেকে বুধবার সকাল সাড়ে ৯ টা পর্যন্ত ৯ ঘন্টা ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। এর জন্য দৌলতদিয়া প্রান্তে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ এলাকা পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার জুড়ে যানবাহনের লম্বা লাইন তৈরী হয়। এতে দুর্ভোগে পড়েন আটকে থাকা শত শত যানবাহনের যাত্রী এবং চালকেরা।
বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয় সূত্র জানায়, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১১ টার পর থেকে নদী অববাহিকায় কুয়াশা পড়তে থাকে। রাত ১২টার দিকে অতি মাত্রায় কুয়াশার ঘনত্ব বাড়ায় নৌদূর্ঘটনা এড়াতে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়। এরপর কুয়াশার ঘনত্ব কমে এলে ৯ ঘন্টা বন্ধ থাকার পর বুধবার সকাল ৯ টায় পুনরায় এই নৌরুটে ফেরি চলাচল শুরু করা হয়।
বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে দৌলতদিয়া প্রান্তে দেখা যায়, ফেরি ঘাট এলাকায় ৩ শতাধিক ঢাকামুখী গাড়ি নদী পাড়ি দিতে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার লম্বা লাইনে অপেক্ষা করছে। শীত ও কুয়াশায় আটকে থাকা যানবাহনের যাত্রীরা গাড়িতেই বসে আছেন। অনেকে গাড়ি থেকে নেমে বাইরে চায়ের ষ্টলে ভিড় করছেন। অনেকে গাড়ি থেকে নেমে হেটে ফেরিঘাটের দিকে এগোচ্ছেন। ফেরি ঘাটের সংযোগ সড়কসহ পন্টুনে কিছু গাড়ির সাথে বেশকিছু যাত্রী কখন ফেরিতে উঠবে সে জন্য অপেক্ষা করছেন।
কথা হয় ৭ নম্বর ফেরিঘাটে নদী পার হতে আসা সাইফুল ইসলামের সাথে। তিনি বলেন, আমার গাড়িটা ফেরিঘাট থেকে এখনও প্রায় ২ কিলোমিটার দূরে রয়েছে। তাকে দ্রুত ঢাকা যেতে হবে। তাই ঝুকি নিয়েই এক পর্যায়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ট্রলারে করে নদী পারি দিবেন।
এদিকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে যানবাহনগুলোকে সকাল ৯টার দিকেও হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা যায়। রিকশা, অটোরিকশা ও ভ্যানে করে জরুরি কাজে ছুটে চলা মানুষদেরকে যবুথবু অবস্থায় বসে চলাচল করতে দেখা যায়।
দৌলতদিয়া ৪ নম্বর ফেরিঘাট থেকে সকাল ১০ টার দিকে রো রো ফেরি ‘গোলাম মওলা’ থেকে নামছিলেন সাতক্ষীরা লাইন পরিবহনের একটি বাস । এসময় বাসের মধ্যে আলাপকালে সুপারভাইজার বাপ্পি জানান, তারা ঢাকা থেকে থেকে রাত ১০ টায় সাতক্ষীরার উদ্দেশ্যে রওয়ানা করে। রাত ১২ টার কিছু সময় আগে পাটুরিয়া ঘাটে এসে পৌছায়। রাত ১২ টার দিকে ফেরি বন্ধের খবর জানতে পারেন তিনি। তখন থেকে পরদিন সকাল ৯ টা পর্যন্ত গাড়িতেই । রাত ১ টা থেকে সকাল ৯ টা পর্যন্ত ফেরিতেই বসে থাকতে হয় তাদের। তাদের বেলা ৯ টার মধ্যে সাতক্ষিরা পৌছানোর কথা থাকলেও তারা আজ দুপুরের পর পৌছাবে বলে তিনি জানান।
বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন জানান, কুয়াশার কারণে ঘাটে ফেরিগুলো নোঙর করে ছিল। কুয়াশায় ফেরি বন্ধের ৯ ঘন্টা পর সকাল ৯ টার দিকে দৌলতদিয়া ঘাট থেকে ফেরি ছেড়ে যায়। ফেরি বন্ধের কারনে যানবাহন পারাপার ব্যাহত হওয়ায় দৌলতদিয়া প্রান্তে ২ শতাধিক বিভিন্ন ধরনের যানবাহন আটকে ছিলো। বেলা বাড়ার সাথে সাথে সিরিয়াল থাকবে না বলে তিনি জানান।