খুচরা বাজারে প্রতিটি ডিমের দাম ছুঁয়েছে ১৫ টাকা। অর্থাৎ এক হালি ডিম কিনতে গুনতে হচ্ছে ষাট টাকা। কোথাও কোথাও এর চেয়েও বেশি। খামার পর্যায়ে ডিমের দাম যাচাই করতে গিয়ে জানা গেলো অবাক করা তথ্য। কোন কোন কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান কাগজে কলমে সরকারি দর অর্থাৎ ১১ টাকা এক পয়সায় ডিম বিক্রি করছে। কিন্তু বাস্তবে আদায় করা হচ্ছে বাড়তি টাকা। এমন কারসাজির কারণে উত্তাল ডিমের বাজার।
গেলো ১৬ সেপ্টেম্বর পোল্ট্রি খাত সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের নেতাদের মতামতের ভিত্তিতে ডিম ও মুরগির যৌক্তিক দাম নির্ধারণ করে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। যেখানে ডিমের সর্বোচ্চ দাম নির্ধারণ করা হয় পাইকারি পর্যায় ১১ টাকা এক পয়সা।
অথচ, শুক্রবার পাইকারি বাজারে গিয়ে দেখা যায় প্রতিটি ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩ টাকা ২০ পয়সায়। সরকারি দরে ডিম কেনা বেচা হচ্ছে কিনা এমন রশিদ দেখতে চাইলে জানা গেলো চমকে যাবার মতো তথ্য।
কাগজে কলমে সরকারি দরেই বিক্রি হচ্ছে ডিম। অথচ বাস্তবে কোনো কোনো করপোরেট প্রতিষ্ঠান আদায় করছে বাড়তি দাম। ফলে থামছে না ডিমের বাজারের অস্থিরতা।
ডিমের দামে অসন্তোষ থাকলেও তাতে পাত্তাই দিচ্ছেন না বিক্রেতারা। ক্রেতারা জানান, গত দুই দিনের ব্যবধানে ডজন প্রতি ডিমের দাম বেড়েছে ১০ টাকা। ব্যবসায়ীদের দাবি, সিন্ডিকেট করে দাম বাড়াচ্ছেন তেজগাঁওয়ের কর্পোরেট ব্যবসায়ীরা।
বাজারে প্রতি ডজন বাদামি ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়, যা সরকারের বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে প্রায় ৩৭ টাকা বেশি। অন্যদিকে ফার্মের মুরগির সাদা ডিমের ডজনও অধিকাংশ বাজারে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কোথাও কোথাও অবশ্য ১০ টাকা কমেও পাওয়া যাচ্ছে।
গেলো মাসে বন্যার দোহাই দিয়ে যে দাম বাড়ানো হয়েছিলো সেটি তো কমার বদলে উল্টো প্রতিদিনই বাড়ছে। ব্যবসায়িদের দাবি খামার থেকে ডিম চলে যাচ্ছে গ্রামের ডিলারদের হাতে। শহরে ডিম আসছে প্রয়োজনের তুলনায় কম।
দাম বৃদ্ধির এই চোটে খুচরা বাজারে প্রতি পিস ডিমের দাম ঠেকেছে ১৫ টাকা পর্যন্ত। বাজার নিয়ন্ত্রণ করা না হলে এই দাম ভাঙতে পারে অতীতের সকল রেকর্ড।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন ডিমের দাম নিয়ন্ত্রণে পাইকারি ও খুচরা বাজার নয় বরং খামার পর্যায়ে বিশেষ কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর উৎপাদন ও সরবরাহ পর্যায়ে নজরদারি জরুরি।