লালমনিরহাটের পাটগ্রামের দহগ্রাম সীমান্ত দিয়ে পাচারকারীদের সহায়তা অবৈধভাবে ভারতে পালিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার। পাটগ্রাম থানা পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, দহগ্রাম ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া ওলেরপাড়ার এলাকার পাচারকারী শুভ পুলিশ কর্মকর্তা বিপ্লব কুমারের পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
জানা যায়, মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাতে কোনো এক আলোচিত পুলিশ কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার ভারতে ঢোকেন। পাচারকারীদের এ সংক্রান্ত কয়েকটি কথোপকথনের অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এ নিয়ে জেলাজুড়ে তুমুল আলোচনা ও গুঞ্জনের সৃষ্টি হয়েছে।
এ ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে পাটগ্রাম ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপক পঙ্কজ কুমার মদন নামে এক ব্যক্তিকে মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে স্থানীয়রা আটক করেন। পরে তাকে পাটগ্রাম থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
তবে রাতভর তাকে (পঙ্কজকে) জিজ্ঞাসাবাদ করে নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্য না পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন পাটগ্রাম থানার ওসি আবু সাঈদ চৌধুরী। বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-৫১ রংপুর ব্যাটালিয়নের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও তা খতিয়ে দেখছেন বলে জানা গেছে।
পাটগ্রাম থানা পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, বুধবার বিকেলে পাচারকারী শুভ (৩০) রংপুরে টাকাসংক্রান্ত বিরোধের জেরে স্থানীয়দের হাতে ধরা পড়ে। ওই সময় রংপুরের স্থানীয় বিএনপির নেতারা মোবাইল ফোনে পাটগ্রামের তাদের দলীয় কয়েকজন নেতার সঙ্গে শুভর ব্যাপারে কথা বলেন। এ সময় শুভও তাদের কথোপথনে যোগ দেন। কথা বলার একপর্যায়ে শুভ বলেন, ‘মঙ্গলবার রাতে পুলিশ কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার সরকারকে দহগ্রাম সীমান্ত পথ দিয়ে ভারতে পার করে দেওয়া হয়েছে।’
মোবাইল ফোনে কথার সূত্র ধরে আরও জানা যায়, ‘ব্র্যাক ব্যাংকের পঙ্কজ ও দহগ্রামের আকছেদুল, মমিন, লম্বা শাহীন, ফারুক, রাজিব, শামীম ও মকছেদুলের সহায়তায় বিপ্লবকে সীমান্ত পার করে দেওয়া হয়। বিপ্লবকে জলঢাকা মীরগঞ্জের মিঠু, নিশাদও রুবেল পাটগ্রামে আনতে সহায়তা করে। সীমান্ত পার করার সময় দেড় লাখ টাকা নেওয়া হয়।’
এ সংক্রান্ত কয়েকটি অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এ বিষয়ে শুভ ও তার বাবা ওসমান গণির সঙ্গে কথা বলতে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাদের পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে পাটগ্রাম থানার ওসি আবু সাঈদ চৌধুরী বলেন, ‘বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে। বিজিবিও তদন্ত করছে। ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপককে শর্ত সাপেক্ষে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। পুরো বিষয় তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’