পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, বঙ্গমাতা ও বঙ্গবন্ধু পরিবারের হত্যাকারীরা যেসব দেশে পালিয়ে আছে, সেসব দেশের সরকার তাদের ফিরিয়ে দিচ্ছে না।
এ ঘটনায় দু:খপ্রকাশ করে মন্ত্রী জানান, তাদের ফেরাতে সর্বোচ্চ কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত রাখবে সরকার।
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, ঘাতকদের বিচার নিশ্চিতের দাবিও জানিয়ে যাবে ঢাকা। দেশপ্রেমের অগ্নি পরিক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তার রাজনৈতিক আন্দোলন ও সংগ্রামে বঙ্গমাতা নিজেকে যুক্ত করেছেন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
তিনি বলেন, খুবই দুঃখের বিষয় হলো বঙ্গবন্ধুকে যখন হত্যা করা হয়, একই সঙ্গে বঙ্গমাতাকে হত্যা করা হয়। এটা বাঙালি জাতির জন্য কলঙ্ক। বঙ্গমাতা আজীবন বঙ্গবন্ধুর পাশে থেকে বাঙালির মুক্তির প্রেরণা ও সাহস যুগিয়ে গেছেন। তিনি নিজের গয়না বিক্রি করে ছাত্রলীগের সম্মেলনের টাকা দিয়েছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রনায়ককে হত্যা করা হয়। খুব অল্প দেশে এ ধরনের উদাহরণ আছে যেখানে সেই রাষ্ট্রনায়কের সঙ্গে সঙ্গে তার স্ত্রী, ছেলে, পরিবারের প্রায় ১৭ জনকে হত্যা করা হয়। এমনকি ১০ বছরের ছোট্ট শিশুকেও হত্যা করা হয়। এটা বাঙালি জাতির জন্য একটা কলঙ্ক।
তিনি বলেন, যারা স্বীকৃত খুনি, যারা পরিবারের ঘনিষ্ঠ ছিল- তাদের পাঁচজন ধরা পড়েনি। তাদের এখনো কোনো বিচার হয়নি। এটা আমাদের জাতির জন্য দুঃখের বিষয়। আমরা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবো। পাঁচজনের মধ্যে তিনজন কোথায় আছে আমরা জানি না। বাকি দুইজনের আমরা খবর জানি। কিন্তু দুঃখের বিষয় তারা যেসব দেশে আছে সেসব দেশ বিভিন্ন অজুহাতে তাদের বিচারের সম্মুখীন করছে না। আজ আমাদের দাবি হবে ঘাতকদের বিচার। ঘাতকরা যেন বিচারের সম্মুখীন হয়, সে ব্যবস্থার জন্য আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিশেষ উদ্যোগ নেবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
আব্দুল মোমেন বলেন, বঙ্গমাতা তার উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সম্পত্তি থেকে অনেক মেয়ের বিয়ের ব্যবস্থা করেছিলেন। এ ছাড়াও দলীয় কার্যক্রম, আন্দোলন, সংগ্রামে নিজের অর্থ সম্পদ দিয়ে সাহায্য করেছেন তিনি সংগঠনকে সব ধরনের সহযোগিতা করেছেন, সংগঠনের বিভিন্ন প্রান্তের নেতাদের সঙ্গে সবসময় যোগাযোগ ছিল।
এসময় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, বঙ্গমাতা আত্মত্যাগের প্রতীক। দেশের প্রথম ফাষ্ট লেডি হওয়া সত্ত্বেও সাদামাটা জীবন যাপন করেছেন তিনি। বঙ্গবন্ধুর রাজনীতির পথে সারা জীবন ছায়া হয়ে থেকেছেন বঙ্গমাতা।
আলোচনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। বঙ্গমাতাকে নিয়ে রচিত বই স্কুলের পাঠ্যসূচীতে অর্ন্তভূক্তের প্রস্তাব তোলেন তিনি।