মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়ার তিল্লী এলাকায় রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে গণডাকাতির ঘটনায় ছয় ডাকাতকে আটক করেছে পুলিশ।পুলিশের হাতে গ্রেফতার ছয় ডাকাতের বাড়ি দেশের বিভিন্ন স্থানে হলেও তাদের পরিচয় হয় কারাগারে। ডাকাত সর্দার কারুন মিয়া ওরফে শমসের মিয়ার (৪৭) বিরুদ্ধে অস্ত্র ও ডাকাতিসহ ১০টি মামলা চলমান রয়েছে। বাকি আসামিদের বিরুদ্ধেও দুই থেকে চারটি ডাকাতির মামলা রয়েছে।
গ্রেফতার হওয়া ডাকাত দলের কাছ থেকে ৪০টি মোবাইল ফোন, এক রাউন্ড গুলিসহ একটি পিস্তল, সোনা, রূপার জুয়েলারি, নগদ টাকা, ফ্রিজসহ বিভিন্ন ধরনের দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
রোববার বেলা ১১টার দিকে মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম গ্রেফতার হওয়া ডাকাতদের বিষয়ে প্রেস ব্রিফিং করে এসব বিষয় নিশ্চিত করেন।
পুলিশ সুপার তার ব্রিফিংয়ে জানান, কারাগারে থাকাকালীন তাদের মধ্যে নিবীড় বন্ধুত্বর সুবাদে বড় ধরনের ডাকাতির পরিকল্পনা করে দেশের বিভিন্ন স্থানসহ মানিকগঞ্জে। তারই অংশই হিসেবে ওই ডাকাত দল গত ২ জুন ও ৮ জুন রাতে সাটুরিয়া উপজেলা তিল্লী ব্রিজ এলাকায় রাস্তায় কাঠের গুঁড়ি ফেলে ডাকাতি করে।
ডাকাতির সময় বাধা দেওয়ায় আ. রাজ্জাক নামের স্থানীয় এক ভ্যানচালককে কুপিয়ে গুরুতরভাবে আহত করে ওই ডাকাত দল। আহতাবস্থায় সাভারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে এখনও চিকিৎসাধীন রাজ্জাক।
এদিকে মানিকগঞ্জ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর সাহা বলেন, ডাকাতির ঘটনার অভিযান চালিয়ে প্রথমে ডাকাত সর্দার কারুন এবং পরে পৃথক অভিযানে বাকি পাঁচ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি আরও জানান, দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার চেচুরিয়া এলাকার মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে কারুন মিয়া ওরফে শমসের মিয়া (৪৭)। অস্ত্র ও ডাকাতিসহ ১০টি মামলা চলমান রয়েছে তার বিরুদ্ধে। বিভিন্ন মামলায় কারাগারে থাকার সময়ে বন্ধুত্ব হয় কারাগারে আগত অপর পাঁচ ডাকাতের সঙ্গে।
এর পর জামিনে বের হয়ে যোগাযোগ করে দেখা-সাক্ষাত করে জামিনে থাকা অপর ডাকাতদের সঙ্গে। তাদের সঙ্গে নিয়ে ডাকাতি করে বেড়ায় দেশের বিভিন্ন এলাকায়। সর্বশেষ মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার তিল্লী ব্রিজ এলাকায় দলবেঁধে ডাকাতি করে কারুনের নেতৃত্বে একদল ডাকাত।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর সাহা আরও জানান, ডাকাত সর্দার কারুনের নেতৃত্বে থাকা গ্রেফতার হওয়া অপর ডাকাতরা হলেন- গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার তিলকপাড়া এলাকার শফি মিয়ার ছেলে সুরুজ মিয়া (২৬), গাইবান্ধা সদর উপজেলার কাশাদহ গ্রামের উজ্বল মিয়া (২৪), একই জেলার পলাশবাড়ী উপজলোর দুর্গাপুর গ্রামের জব্বার মিয়ার চেলে গোলজার ওরফে সাগর (৩৫), বগুড়া জেলার গাবতলী থানার সন্ধ্যাবাড়ি এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে শাহিন (৩০) এবং টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল উপজেলার শাহ আলমের ছেলে টুটুল মিয়া (৩০)। এর মধ্যে সুরুজের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও ডাকাতিসহ চারটি মামলা চলমান, উজ্জ্বলের বিরুদ্ধে খুন ও ডাকাতিসহ চারটি মামলা এবং শাহিনের বিরুদ্ধে দুটি মামলা চলমান রয়েছে।
গ্রেফতার হওয়া ডাকাতদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানান সাটুরিয়া থানার ওসি আশরাফুল আলম। তিনি জানান, এ ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে।