আসলাম হোসেন, ইয়াস- পরিদর্শক, মির্জাগঞ্জঃ পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটি নিয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপ আজ শুক্রবার (১২ ফেব্রুয়ারি) একই সময়ে একই স্থানে পাল্টাপাল্টি আনন্দ মিছিল এবং বিক্ষোভ মিছিল কর্মসুচির ঘোষণা দেয়ায় উপজেলা শহরে উত্তপ্ত পরিবেশের সৃষ্টি হওয়ায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) উপজেলা ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটির সভাপতি মোঃ খায়রুল আলম শাহীন সরদার ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইমরান হাওলাদার তাদের নিজস্ব ফেসবুক আইডিতে আজ বিকাল ৩ টায় উপজেলা শহরে আনন্দ মিছিলের ঘোষণা দেয়। অপরদিকে বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক পদবঞ্চিত মোঃ রাকিব মৃধা একই স্থানে একই সময় বিক্ষোভ মিছিল করার ঘোষণা দেয়। এ নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করে ও উপজেলা শহরে উত্তপ্ত পরিবেশের সৃষ্টি হয়। এ কারণে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপজেলা শহরে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে আজ (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উভয় গ্রুপের সভা-সমাবেশ বন্ধ করে দেয় ও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেন।
এ ব্যাপারে মির্জাগঞ্জ থানার ওসি এম আর শওকত আনোয়ার ইসলাম বলেন, ছাত্রলীগের দুই গ্রুপ একই সাথে একই স্থানে মিছিল করার ঘোষনা দেয়ায় সহিংসতা এড়াতে উপজেলা শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
জানা যায়, গত মঙ্গলবার গভীর রাতে পটুয়াখালী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আগামী এক বছরের জন্য মির্জাগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটি অনুমোদন দেয়। ওই কমিটি প্রত্যাখান ও বাতিলের দাবি জানিয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক পদবঞ্চিত মো. রাকিব মৃধার নেতৃত্বে গত বুধবার দুপুরে ছাত্রলীগের একাংশ উপজেলা কোর্ট সংলগ্ন মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি উপজেলা পরিষদের গেটের সামনে এলে এতে পুলিশ বাঁধা দিলে বিক্ষোভকারিদের সাথে পুলিশের ধস্তাধস্তি হয় এবং এক পর্যায় পুলিশ তাদেরকে লাঠি চার্জ করে ছত্রভংঙ্গ করে দেয়। পুলিশের লাঠি চার্জে দশজন ছাত্রলীগ নেতাকর্মী আহত হয়।
এরপর গত বুধবার দুপুরে পদবঞ্চিতরা মির্জাগঞ্জ প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে পদবঞ্চিত সকল নেতাকর্মীদের পক্ষে লিখিত বক্তব্যে সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. রাকিব মৃধা বলেন, পটুয়াখালী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বাংলাদেশ ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুসরণ না করে অর্থের বিনিময়ে ছাত্রলীগের ত্যাগী ও সক্রিয় নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে ছাত্রদলের সদস্য, অছাত্র, বিবাহিত, মাদক ব্যবসায়ী, ঢাকায় বসবাসরত চাকুরীজীবিদর অন্তর্ভূক্ত করে নিয়ম বহির্ভূতভাবে মির্জাগঞ্জ উপজলা ছাত্রলীগর কমিটি অনুমোদন দেয়।
তিনি লিখিত বক্তব্যে আরও বলেন, নবগঠিত কমিটিতে যাকে ছাত্রলীগর সভাপতি করা হয়েছে তিনি মির্জাগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সদস্য ও ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তার বয়স উত্তীর্ণ এবং যাকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে তার বাবা সদর সুবিদখালী ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ছিলেন এবং তার বড় ভাই বিএনপির সক্রিয় কর্মী। তাই এই অবৈধ কমিটি বাতিল করে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তারা নতুন কমিটি গঠনের জন্য বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেদ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নিকট জোর দাবি জানিয়েছেন।
পরে গত বৃহষ্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলার দেউলী সুবিদখালী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি আদনান হোসেন শাওনের নেতৃত্বে, আমড়াগাছিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মো. বেল্লাল হোসেনের নেতৃত্বে, কাকড়াবুনিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আহাদুল ইসলাম রিয়াজের নেতৃত্বে ও মজিদবাড়ীয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সুমন খানের নেতৃত্বে উপজেলা ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটি বাতিলের দাবীতে স্ব স্ব ইউনিয়নে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।