বাধ্য হয়ে প্রত্যন্ত অঞ্চলের সাধারণ মানুষকে স্বাস্থ্যসেবা নিতে হচ্ছে গ্রাম্য হাতুরী ডাক্তারদের কাছ থেকে।
এতে করে ভোগান্তি, সময় ও অর্থ ব্যয় করেও সঠিক স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছে না। রোগ নির্নয় ও আধুনিক মানসম্পন্ন চিকিৎসা নিতে হলে যেতে হয় পার্শ্ববর্তী উপজেলায় নতুবা জেলাশহর হাসপাতালে আর না হয় ১০০ কিলোমিটার দূরে চট্টগ্রাম শহরে।
বিজ্ঞানের উৎকর্ষের এ যুগে সবচেয়ে বড় দুর্ভোগে পড়তে হয় দুর্গম পাহাড়ি গ্রামের গর্ভবতী মহিলাদের নিয়ে। নিজ উপজেলায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স না থাকায় প্রায় প্রতিটি ডেলিভারিতে যেতে হয় মানিকছড়ি অথবা মাটিরাঙ্গা উপজেলায়।
এছাড়া গুরুতর অসুস্থ রোগীকে হাসপাতালে নেওয়ার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে হয় । স্বাস্থ্যসেবা বঞ্চিত গুইমারা উপজেলার ৮০ হাজার মানুষের অপুষ্টি ও নানা রোগে ভোগান্তির শেষ নেই।
ভোগান্তির বিষয়ে গুইমারা উপজেলার সাইংগুলিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা তৈকর্মা মৌজার মৌজা প্রধান চাইথোয়াই চৌধুরী বলেন, হাসপাতাল না থাকায় বিশেষ করে গহীন পাহাড়ি গ্রামের মানুষ সুচিকিৎসা পাচ্ছে না। নিরুপায় হয়ে হাতুরী ডাক্তার ও কবিরাজ নির্ভর হয়ে পড়ে যার কারণে পাহাড়ি জনগন আধুনিক মানসম্পন্ন চিকিৎসা সেবা থেকে অনেক দূরে আছে তাই দ্রূত গুইমারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্হাপনের দাবী জানান তিনি।
এ বিষয়ে গুইমারা দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক হাজীপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মাওলানা খোরশেদ আলম বলেন, হাসপাতাল না থাকায় গুইমারাবাসী আদিযুগে বসবাস করছে। তিনি বলেন এযুগে এসে রোগ নির্নয় করতে গেলেও আমরা ঢাকা চট্রগ্রাম যেতে হয় না রোগ নিয়েই থাকতে হয়। সরকারি হাসপাতাল অত্যান্ত জরুরী।
২নং হাফছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অংগ্যজাই মারমা বলেন গুইমারা উপজেলা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ১০ বছর হয়ে গেছে কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় স্বাস্থ্যসেবা এখনো নাজুক অবস্থা যা উপজেলাবাসীর সবচেয়ে কষ্টের। তিনি আরো বলেন গুইমারার ৩ টি ইউনিয়নের মধ্যে সবচেয়ে দুর্ঘম হলো সিন্ধুকছড়ি ইউনিয়ন সেটি বিবেচনা করে মধ্যবর্তী ইউনিয়নে হাসপাতাল স্হাপনের দাবীও রাখেন তিনি।
উল্লেখ্য যে ২০১৪ সালের ৬ জুন প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির (নিকার)১০৯তম সভায় খাগড়াছড়ির নবম উপজেলা হিসেবে গুইমারাকে অনুমোদন দেওয়া হয়। দীর্ঘ ১০ বছর পার হলেও এ উপজেলায় নির্মাণ হয়নি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
খাগড়াছড়ি সিভিল সার্জন ডা. মো. ছাবের জানান, উপজেলা প্রশাসনের চাহিদার নথি অনুযায়ী ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নির্মানে সিভিল সার্জন অফিসের চুড়ান্ত কাগজপত্র স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের সচিব বরাবরে পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রনালয়ের অনুমোদন স্বাপেক্ষে নির্মান শাখা কাজ শুরু করবে। তিনি আরো জানান নির্মান শাখা পিপি অনুমোদনের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে তিনি জানতে পেরেছেন তবে বর্তমান সরকার তা অনুমোদন করবে কিনা সেজন্য অপেক্ষা করতে হবে। তিনি আশা করেন গুইমারা উপজেলা স্বাস্হ্য কমপ্লেক্সের কাজ দ্রুত শুরু হবে।
স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত গুইমারাবাসী অতিদ্রুত গুইমারা উপজেলা আধুনিক মানসম্পন্ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নির্মানে বর্তমান সরকারের স্বাস্থ্য উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি কামনা করেছেন।