মঙ্গলবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:১৮ পূর্বাহ্ন

ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর হারিয়ে যাওয়ার ভয়ে ছেলেকে নিজের শরীরে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখে মা!

রাম জোয়ার্দার উপজেলা প্রতিনিধি কোটচাঁদপুর।
  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ১৭ জানুয়ারী, ২০২৪
ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর হারিয়ে যাওয়ার ভয়ে ছেলেকে নিজের শরীরে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখে মা!
মায়ের ভালো বাসার তুলনা হয়না । পৃথিবীর সকল ভালোবাসা যেন মমতাময়ী মায়ের কাছে তুচ্ছ । জীবনের চাইতে মা তার সন্তানকে কতটা ভালোবাসে তার উদাহরণ রয়েছে অনেক।হারিয়ে যাওয়ার ভয়ে মা-ছেলেকে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখেছে । তাও আবার নিজের শরীরের সাথে । অবিশ্বাস্য ঘটনা টির দেখা মিলছে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরের পৌর শহরে।জানাযায়, রহিমা খাতুনের দুই চোখে দেখতে পারেন না। শরীরে হাজারও ক্ষত চিহ্নের দাগ। সঙ্গে প্রতিবন্ধী শিশুকে নিয়ে যাযাবর জীবন কাঁটছে তার। যেখানেই রাত হয়, সেখানেই থেকে যান রহিমা। শহরের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরে ভিক্ষা করে চলে মা-ছেলের সংসার। রহিমা খাতুনের ৮ বছরের শিশু সন্তান আব্দুর রহমানও মানসিক প্রতিবন্ধী। ছেলেকে হারানোর ভয়ে রহিমা খাতুন তাকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখেন সব সময়। রাতে ঘুমানোর সময়ও মায়ের শরীরের সাথে বেঁধে রাখেন তাকে। মা ছেলের এই শিকল বন্দি জীবন দেখে অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।রহিমা খাতুনের বাড়ি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের দাদপুর গ্রামে। সে ওই গ্রামের জয়নাল হোসেনের মেয়ে। রহিমা খাতুনের বিয়ে হয়েছিল। দীর্ঘদিন রহিমা খাতুনের খোঁজখবর নেয়নি তার স্বামী। প্রতিবন্ধী এই শিশু সন্তানকে নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়িয় ভিক্ষা করেন তিনি। সোমবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনের সড়কে তাকে ভিক্ষা করতে দেখা যায়। সেই সময় দেখা গেছে ছেলেকে শিকল দিয়ে নিজের শরীরের সাথে বেঁধে রেখেছেন রহিমা খাতুন।পথচারী ইমরান বলেন, হাসপাতালে ডাক্তার দেখতে যাচ্ছিলাম হঠাৎ দেখি দুই জন ভিক্ষা করছে। এই কনকনে ঠান্ডায় তাদের শরিরে তেমন গরম কাপড় ও পায়ে জুতা ছিলো না। ভিক্ষা দিতে এসে জানতে পারলাম তারা মা ও ছেলে । ছেলেকে শিকলে বেঁধে রেখেছিলেন তার শরীরের সাথে। রহিমা খাতুন জানান, তার স্বামী কোন খোঁজখবর নেন না তার । প্রতিবন্ধী ছেলেকে নিয়ে তিনি ভিক্ষা করেন। তার ঘর বাড়ি নেই, রাস্তায় থাকেন। দুই চোখে দেখতে পান না। বিভিন্ন রোগ-ব্যধিতে আক্রান্ত তিনি। গতকাল সকালে হাসপাতালে এসেছিলেন ওষুধ নিতে। ছেলের সহায়তায় চলাফেরা করেন তিনি।
রহিমা খাতুন করুণ কণ্ঠে বলেন সরকার কি আমারে একটা ঘর দিবো? যদি একটা ঘরের ব্যবস্থা কইরা দিতো তাইলে আমার বিটা আর আমি কষ্ট থেকে বাচঁতাম ।
ত্রিলোচনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম ঋতু বলেন, রহিমা খাতুন কে প্রতিবন্ধী ভাতার আওতায় আনা হয়েছে। ছেলেটা একটু আজ বুঝ মতো তাই বেঁধে রাখে। সরকারি কোন ঘর নতুন করে বরাদ্দ আসলেও তাকে দিব বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি।তাছাড়া বিভিন্ন সময় সাহায্য সহযোগিতা করছি।
আপনার মন্তব্য লিখুন

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ
  • © All rights reserved © 2019 alokitoswapner-bd.com - It is illegal to use this website without permission.
Design & Developed by Freelancer Zone
themesba-lates1749691102