হঠাৎ করেই যেন, ভাইয়াকে মেরে ফেলার ৪ বছর হয়ে গেলো। আমাদের কাছে যদিও ভাইয়ার কোনো পরিবর্তন হয়নি। এইতো সেদিনই, বৃষ্টির মধ্যে বাসায় যেতে না পেরে হলে এসে ভাইয়ার কাছে উঠেছিলাম! সেদিনই ভাইয়ার সাথে মাঝরাতে হাটতে হাটতে নাজিরাবাজার গেছিলাম। ভাইয়াকে বিদায় দিয়েছিলাম, পরের দিন কুষ্টিয়া যাওয়ার জন্য। প্রত্যেকটা জায়গায় গত প্রায় একবছরে বহুবার গেছি, প্রতিবারই চোখের সামনে সেই ৪বছর আগের সময়ই ভেসে ওঠে এখনো।
আগে ভাবতাম, ভাইয়ার তো জানার কথা যে ওরা ডাকলে না মেরে কাউকে ছাড়ে না তাও কাউকে না জানায়ে কেন গেলো! গত কয়েকমাসে নিজেই দেখছি এখানে প্রত্যেকে পরীক্ষার আগে কী পরিমাণ চাপে থাকে। ভালো রেজাল্ট এর জন্য সবার দিকেই পরিবার তাকিয়ে থাকে! এর মধ্যে হঠাৎ নিজের কয়েকজন বন্ধু এসে যদি বলে ভাইয়ারা ডাকছে তাহলে কেউই হয়তো ভাববেনা যে তাকে মারার জন্য ডাকছে।
ভাইয়ার আর আমার বয়সের বা ক্লাসের পার্থক্যও ছিলো ৪বছর। এটা ভাবলেও এখন কষ্ট হয়, আমরা যে সময় পৃথিবীতে আছি ভাইয়া সেটুকুও থাকতে পারেনি ঐ পশুদের জন্য। আশেপাশে এত মানুষ দেখি, কিন্তু আজ পর্যন্ত ভাইয়ার মতো আর কাউকে দেখলাম না যার কাছে যেকোনো কিছু সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেই উত্তর পাওয়া যাবে। আজও এটা বুঝিনি ভাইয়া এতকিছু জেনেছিলো কিভাবে।
অনেকেই প্রশ্ন করেন মামলার কোনো আপডেট কেন জানানো হয়না। আসলে নিম্ন আদালতের রায়ের পর গত প্রায় ২বছরে আর নতুন কোনো অগ্রগতি হয়নি। উচ্চআদালতে এখনো শুনেছি ২০১৮ এর মামলা চলছে, সেখানে ভাইয়ার মামলার রায় হয় ২০২১ এর শেষে! বিশেষভাবে বিবেচনা ব্যতিত কতদিন লাগবে মামলা শেষ হতে আমরাও ঠিক জানিনা।
আব্বু-আম্মুও সময়ের সাথে অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে। এখনো তাদের বেশিরভাগ সময় কাটে ভাইয়াকে নিয়ে ভাবনায়। এতকিছুর পরে হয়তো পাওয়া একটায় এই জায়গায় এখন নির্ভয়ে,নিশ্চিন্তে চলাফেরা করতে পারে সবাই। হয়তো ভাইয়া নিজেও এটা জানলে অনেক খুশি হতো। জানিনা এতদিন পরে ঠিক কী অবস্থায় আল্লাহ রাখছে ওকে। আল্লাহর কাছে সবাই দোয়া করবেন ওর জন্য। [ফেসবুক থেকে সংগৃহীত]