অবিরাম নির্যাতনের কষাঘাতে অসুস্থ দেশনেত্রীর জীবন এখন চরম সংকটে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
শুক্রবার (০৬ ডিসেম্বর) বাংলঅদেশ সময় রাত সোয়া ৮টার সময় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ফেসবুক পোস্টে তারেক রহমান বলেন, শেখ হাসিনার দুঃশাসনে ‘গণতন্ত্রের মা’ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ওপর জেল-জুলুমসহ নানামাত্রিক নিপীড়ন চালানো হয়েছিল। অবিরাম নির্যাতনের ফলে অসুস্থ দেশনেত্রীর জীবন বর্তমানে চরম সংকটাপন্ন। আল্লাহর কাছে তার আশু সুস্থতা কামনা করছি। এছাড়াও জাতীয়তাবাদী শক্তির লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মীকে সীমাহীন অত্যাচার-নির্যাতন করা হয়েছিল। সারাদেশকে এক প্রকার অবরুদ্ধ করে ফেলা হয়েছিল।
পোস্টের শুরুতে তিনি বলেন, অবিস্মরণীয় একটি দিন ৬ ডিসেম্বর। ১৯৯০ সালের এ দিনে রক্তাক্ত ও পিচ্ছিল সংগ্রামের মাধ্যমে স্বৈরশাসনের অবসান হয়েছিল। এরশাদ ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ পেশাগত বিশ্বস্ততা ও শপথ ভেঙে অস্ত্রের মুখে নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আব্দুস সাত্তারকে ক্ষমতাচ্যুত করে গণতন্ত্র হত্যা করে অসাংবিধানিক শাসন জারি করেছিলেন।
তিনি আরও বলেন, যে সাংবিধানিক রাজনীতি ছিল বহুদলীয় গণতন্ত্রের নিশ্চয়তা, যার সূচনা করেছিলেন স্বাধীনতার মহান ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। একনায়ক হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছিলেন।তারেক রহমান বলেন, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে দীর্ঘ নয় বছর দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে নিরন্তর সংগ্রাম চালিয়ে আপসহীন নেত্রী হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন। তিনি গড়ে তোলেন এক দুর্বার গণ-আন্দোলন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর ছাত্র-জনতার মিলিত শক্তিতে স্বৈরাচারকে পরাজিত করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়।
তিনি আরও বলেন, সেই অর্জিত গণতন্ত্রের চেতনায় আবারও ছাত্র-জনতা ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট এক হিংস্র ফ্যাসিবাদী শক্তিকে পরাস্ত করে। ঐতিহাসিকভাবে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ছিল গণতন্ত্রের ভয়ংকর শত্রু। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দুঃশাসনের অবসানের পর গণতন্ত্রের পূর্ণ পুনরুজ্জীবন এবং রাষ্ট্র ও সমাজে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় আমাদের নিরলস সংগ্রাম অব্যাহত রাখতে হবে।
তিনি বলেন, আজকের এ দিনে আমি ১৯৮২ থেকে ১৯৯০ সালের রক্তস্নাত স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে আত্মদানকারী বীর শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই এবং তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করি। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের এ স্মরণীয় দিনে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী গণতন্ত্রের হেফাজতকারী দেশবাসীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই।
তারেক রহমান লেখার শেষে গণতন্ত্রবিরোধী পরাজিত শক্তির যেন আর পুনরুত্থান না ঘটে সেজন্য গণতান্ত্রিক শক্তিকে সবসময় ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।