সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৪৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে দুই গাড়ির সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৫। ময়মনসিংহে পাচারের সময় মানব কঙ্কাল উদ্ধার, গ্রেপ্তার- ২। কোকোর স্মৃতিতে ৮ দলীয় ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত। বাগেরহাটে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লটারি পদ্ধতি বাতিলের দাবীতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন। বঙ্গবন্ধু রেল সেতুর নাম পরিবর্তন। কালিহাতীতে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ট্রাকসহ ৬ ডাকাত গ্রেফতার। বিশ্ববিদ্যালয়ে মানসম্মত শিক্ষক প্রয়োজনঃ ড. আবুল কাশেম। বাংলাদেশি রোগী পেতে সীমান্তে মেট্রো চালু করবে ভারত। ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের ৪ স্পটে দুর্ঘটনার কবলে ১০ গাড়ি, নিহত ১, আহত ১৫। নরসিংদীতে ছাত্রদলকর্মীকে গুলি করে হত্যা।

লিটন দত্তের “মালতির পরম সুভাগ্য”।

লিটন দত্ত,বাঘাইছড়ি, রাংগামাটি পার্বত্য জেলা।
  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০২৩
গল্প নামঃ মালতির পরম সুভাগ্য।
     লেখকঃ লিটন দত্ত।
মালতি নবম শ্রেণীতে পড়াকালীন সময় তার খুব ভালো একটি জাত কূল আছে এমন একটি বিবাহ সমন্ধ আসায়।তার তেমন কোন বাধা বিপত্তি ছিল না কারণ একে তে অভাব অনটনের সংসার তার উপর বাবার ধন সম্পদ বলতে কিছু নেই।অন্যের জমিতে বর্গা চাষী কৃষক।পরিবারে তার সমানে সমান আর তিনটি বোন।এই সব ভেবে  মালতি বিবাহতে মত দেয়।তবে তার একটি কথা ছিলো বিবাহ যেখানে দাও বাবা আমার আপত্তি নাই ,তারা যেন আমার পড়ালেখার করার সুযোগ টা দেয়।খুব ভালো একটি দিন দেখে ধুমধাম করে মালতির বিবাহর দিন ধার্য্য হয়। গৌরীশংকর বাবুর পরিবারের ছোট ছেলে বিবাহ বলে কথা, পুরো গ্রাম শুদ্ধো সাজ সাজ ভাব।গৌরী শংকর বাবুর একটি বদ অভ্যাস ছিলো যেকোন অনুষ্টান আসলে সে প্রচুর মদ প্রাণ করতেন। মাঝে মাঝে মদ খেয়ে এমন তালমাতাল হতো যে নিজের কাপড় পর্যন্ত ঠিক রাখতে পারতো না।তবে নেশা কেটে গেল দিব্যি একজন দেবতার মতো মানুষ।এই সব কথা মালতির কানে একে একে গ্রামের মানুষের মাধ্যমে আসতে শুরু করলো।এতে মালতি কিছুটা দুঃচিন্তাগ্রস্ত হয়ে পরে।তারপরও রাধাগোবিন্দর উপর গভীর বিশ্বাস রেখে এগিয়ে যাচ্ছে।যা আছে আমার কপালে তাই হবে।খুব ছোটকালে মালতির বাল্যবন্ধু রাজেশ তাকে খুব ভালোবাসে।মালতি তা জানার পর ও না জানার মতো ভাব ধরে থাকে।রাজেশ পড়াশুনা খুব ভালো মালতি থেকে বয়সে দু বছরের বড়।রাজেশ কলেজে পড়ে মেট্টিক পরীক্ষায়  সে ফাস্টক্লাস ফাস্ট পেয়েছে।তবে তার একটি কু- অভ্যাস আছে মালতির যা মোটেও ভালো লাগে না।
আর তা হলো মানুষের সাথে মারামারি
করা,বিড়ি-সিগেরেট খাওয়া আর মাঝে মাঝে বাবার  পকেটের টাকা চুরি করে প্রচুর মদ খাওয়া। মালতি রাজেশ কে অনেক দিব্যি দিয়ে ছিলো।
তুমি এই কু-অভ্যাস গুলো ছেড়ে দাও।মানুষ তোমাকে নিয়ে বাজে কথা বলে যা শুনলে আমার খুব খারাপ লাগে।কারণ তুমি তো আমার একমাত্র দাদা।তাই না?মালতি সব সময় চাইতো রাজেশ থাকে বোনের  চোখে দেখুক। যা রাজেশ কিছুতে মানতে পারেনা।
রাজেশের কথা একটায় আমি সব ছেড়ে দিব মালতি তুমি একবার বলো আমাকে কোন দিন ছেড়ে যাবে না।সারাজীবন ভালোবেসে বিবাহ করে থাকবে,তা হলে
আমি মা-কালীর দিব্যি দিয়ে তোর মাথায় হাত রেখে বলছি আগামীকাল থেকে আমি আর মদ সিগারেট কিছুই আর কোন দিন ছুব না।যা মালতি একে বারে মেনে নিতে পারে না।রাজেশ দা তুমি শুনে রাখো,আমি কিন্তু তোমাকে ভালোবাসি না।তোমাকে আমি দাদা বলে খুব সম্মান করি এবং তোমার কিছু হলে আমার খুব কষ্ট লাগে তাই তোমাকে ভালো করে চলতে বলি!এই সব শুনে রাজেশ আরো ক্ষেপে যায় ।কেন তোমাকে আমার ভালো চাইতে হবে?আমার কি ভালো চাওয়ার লোক পরম ঈশ্বরের দুনিয়ার কম পড়েছে নাকি?
যা শুনে মালতি চোখের অশ্রু মুছতে মুছতে বাড়ি চলে  যায়।
আর এখন যখন শুনতে পাই।মালতি শুশ্বর নিজে প্রচুর মদ্য প্রাণ করে। সেখানে তার নতুন জীবনে পর্দারপণ করতে হবে ভাবতে শিউরে উঠে হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসে মালতির।বিবাহ দিন কণ গণিয়ে আসছে বিবাহ করাবেন শিব শংকরবাবু ।তিনি পেশায় ব্রাহ্মণ।বিবাহের কিছু দিন আগে এক সন্ধ্যায় শিবশংকর বাবু একটি প্রস্তাব নিয়ে আসলেন মালতির বাবা নারায়ণ চন্দ্রের কাছে।
গৌরী শংকর বাবু গতকাল খুব মাল খেয়ে বলে বসলেন।
আপনার মেয়ে মালতির জন্য সমগ্র বিবাহ আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে।বিভিন্ন অথিতিদের নেমন্তন্নও কার্যও শেষ হয়েছে।তার ছেলে সবে মাত্র বিএ শেষ করেছে তাকে কলকাতা পাঠিয়ে উচ্চ শিক্ষার ব্যবস্থা করবেন।
কারণ বেকার ছেলেকে বিবাহ করানোর  চেয়ে আমি নিজে বিবাহটি করে ফেলা বারি উত্তম সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে মনে করি।কারণ যেহেতু সব আয়োজন সম্পন্ন আর মেয়েটির বিবাহ সঠিক লগ্নে না হলে নারায়ণ বাবুর অসম্মান মেয়েটিরও অমঙ্গল হবে।
আমরা আর কতদিন বাঁচবো।আমি মরলে মালতি এ বিশাল সম্পত্তির মালিক। আমার ছেলে বিনয় সে শহরে যাবে কলেজে পড়বে কত বন্ধু-বান্ধবীদের সাথে মিশবে তখন হয়তো মর্ডান মেয়ে ছাড়া তার আবার গ্রামের অর্ধশিক্ষিত মেয়ে ভালো নাও লাগতে পারে।তাই বিবাহটি আয়োজন যেহেতু হয়েছে আমি করাই উত্তম সিদ্ধান্ত মনে করি।
এই সব কথা শুনে নারায়ণ বাবুর মাথার উপর যেন একে বারে আকাশ ভেঙ্গে পড়ল এবং শিব শংকর বাবু এটাও বললেন এতো চিন্তার কিছু নেই। নেশান ঘোরে বলেছে নেশা কাটলে হয়তো আবার সব ঠিক হয়ে যাবে।রাধা গোবিন্দের কাছে তাই বলুন মশাই ।তবে আপনি একজন সহজ সরল ভালো মানুষ নারায়ণ দা তাই আমি আগে থেকে আপনাকে একটু আরঠু ইঙ্গিত দিয়ে গেলাম।তবে গৌরি শংকর বাবু যেমন দেবতার মতন মানুষ তেমনি একবার রেগে গেলে শিবের তান্ডব নৃত্য করে বসেন সবই তো আপনি জানেন মশায়।কারণ তিনি এক কথার মানুষ, মুখে যা বলেন বাস্তবে তাই করেন। মা মালতিকে এসব শুনানোর দরকার নেই এখন।কারণ মালতি তো এখনো জামাই নিজ চোখে দেখে নাই।মেয়েদের এতো জামাই বাচ বিচার করে কি আর হবে। তাদের খাওয়া দাওয়া রান্নাবান্না সব কিছু তো দাস দাসিরা করবে।বেকার ছেলে বিবাহ করলে বাপের কাছে বোঝা হয়ে থাকতে হবে।তাই আমি মনে করি নারায়ণ দা মালতি মাকে গৌরীশংকর বাবু বিবাহ করতে রাজি হওয়া মানি মালতি মার পরম সু্-ভাগ্য ইহা পূর্বজন্মের কর্মফল না হলে সম্ভব না নারায়ণ দা।
বিবাহের দিন যত গণিয়ে আসছে কেন জানি মালতি রাজেশ দার কথা খুব মনে পরে।মাঝে মাঝে কোন কারণ ছাড়া রাজেশের কথা মনে করে দু-চোখ অশ্রু ভেজায়। রাজেশ ছেলে হিসাবে খুবই ভালো হয়তো একটু নেশা করে তাও তো আমার জন্য মা কালীর দিব্যি দিয়ে বলছে।আমি তাকে ভালোবাসি বললে সে সব ছেড়ে দিয়ে ভালো মানুষ হয়ে যাবে।আমি চলে গেলে রাজেশ দা উল্টাপাল্টা কিছু করে বসবে না তো!
আপনার মন্তব্য লিখুন

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ
  • © All rights reserved © 2019 alokitoswapner-bd.com - It is illegal to use this website without permission.
Design & Developed by Freelancer Zone
themesba-lates1749691102