নীলফামারীতে তিন পদে অর্ধ কোটি টাকার নিয়োগ বাণিজ্য।
নীলফামারী সদর উপজেলার সোনারায় ইউনিয়নের বেড়াকুটি কৈপাড়া শাপলা বালিকা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান অশ্নি কুমার বিশ্বাস ও প্রধান শিক্ষক মোকছেদুল শাহ্ এর বিরুদ্ধে অর্ধ কোটি টাকা নিয়ে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযোগ উঠেছে রাতে পরীক্ষা দেয়ার চিঠি, পরের দিন সকালেই পরীক্ষা। যার ফলে ৩/৪ জন পরীক্ষার্থী দিতে পারেনি নিয়োগ পরীক্ষা।
তারপরেও কয়েকজন প্রার্থী পরীক্ষা কেন্দ্রে গেলে, তাদেরকে লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিতে দেননি বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি।
পরীক্ষা দিতে না পারায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন এলাকাবাসি ও অভিভাবকরা। তর্ক-বিতর্কের একপর্যায়ে অভিভাবক ও পরীক্ষার্থীদের তোপের মুখে পরেন উপজেলা মাধ্যমিক
শিক্ষা অফিসার।
নিয়োগ সম্পন্ন করে যাওয়ার সময় মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের গাড়ি থামিয়ে কথা বলতে গেলে জীবন চন্দ্র বিশ্বাস নামের এক নিয়োগ প্রত্যাশীর গালে থাপ্পড় মারেন প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি অশ্নি কুমার বিশ্বাস। যার ভিডিও
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয়েছে।
বুধবার(২০-সেপ্টেম্বর) দুপুরে বেড়াকুটি কৈপাড়া শাপলা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে পাওয়া যায় এসব অভিযোগ।
অভিযোগকারীরা বলছেন বিদ্যালয়ে অফিস সহায়ক, নিরাপত্তা কর্মী ও পরিচ্ছন্নতা কর্মী পদে মোট তিনজন কর্মচারী নিয়োগে প্রায় অর্ধ কোটি টাকার
বিনিময়ের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
ভুক্তভোগী জীবন চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, আজকে নিয়োগ পরীক্ষা আর রাতে পরীক্ষায় অংশগ্রহনের চিঠি। আমি দিনাজপুরে থেকে লেখাপড়া করি, খবর পেয়ে ওই রাতেই বাড়িতে আসি। সকালে পরীক্ষা কেন্দ্রে গেলে
প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি আমাদের বেশ কয়েক জনকে পরীক্ষা দিতে বাধা প্রদান করেন। আমি মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার স্যারের সামনে দাড়াইছি তখন আমার কান বরাবর
থাপ্পড় মেরে মাটিতে ফেলে দেয় সভাপতি। আমি কানের সমস্যায় ভুগতেছি। আমি চাই
পরীক্ষা বাতিল করে পুনরায় বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে পরীক্ষা দিয়ে সঠিক ব্যক্তিদের নিয়োগ দেয়া হোক।
অপর এক প্রার্থীর অভিভাবক রাজেন কুমার
বিশ্বাস বলেন, আমি ৮ লক্ষ টাকা প্রধান শিক্ষকের হাতে দিয়েছি। আমার ছেলের চাকরি হলে আমার স্কুলের ভিতরে থাকা জমিও আমি লিখি দেবো স্কুলের নামে । পরে কি হল জানিনা,আমাকে টাকা ফেরত দিয়েছেন।
নিয়োগ পরীক্ষা সকাল ১০টার মধ্যে শেষ করে স্কুল ছুটি দিয়ে স্কুল ত্যাগ করে চলে যায় প্রধান শিক্ষক।
পরে প্রধান শিক্ষক মোবাইল নাম্বার বন্ধ করে রাখার কারণে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এদিকে অভিযোগ স্বীকার করে স্কুলের সভাপতি অশ্নি কুমার বিশ্বাস বলেন, সে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের সামনে দাঁড়িয়ে বেয়াদবি
করতেছিল তাই আমি থাপ্পড় মেরেছি।
নিয়োগ বাণিজ্য হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যান। তিনি বলেন, তারা কেন পরীক্ষা দিতে পারেনি আমি কিছুই বলতে
পারব না, এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বলতে পারবেন। এদিকে সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আলী শাহরিয়ার বলেন, নিয়োগ পরীক্ষা আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। থাপ্পড়ের বিষয় আমি কিছুই বলতে পারবোনা, আর এডমিট কার্ডে ছবি না থাকলেও আমরা পরীক্ষা নিতে পারি। কে পরীক্ষা দিলো, আর কে পরীক্ষা দিলোনা এ ব্যাপারে আমি কিছুই বলতে পারব না,সেটা স্কুল কর্তৃপক্ষই বলতে পারবেন। তাছাড়া শুনেছি তারা ইচ্ছাকৃতভাবে পরীক্ষা দেয়নি।