শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:০৬ পূর্বাহ্ন

সায়মন ওভারসীজের আসফিয়ার বিরুদ্ধে ১৬ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ মন্ত্রণালয়ে

আলোকিত স্বপ্নের বিডি
  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০২৫

নানা উদ্যোগ চালিয়েও দেশে প্লেনের টিকিট কেলেঙ্কারি থামানো যাচ্ছে না। এবার অভিনব কায়দায় এয়ার টিকিট বিক্রি করে বিদেশে বিপুল অঙ্কের টাকা পাচারের অভিযোগ উঠেছে সায়মন ওভারসীজ লিমিটেড নামে একটি ট্রাভেল এজেন্সির বিরুদ্ধে। এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির টিকিট কেলেঙ্কারির বিষয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় তদন্ত শুরু করেছে।

 

ক্রস বর্ডারে (দেশের বাইরে) এয়ার টিকিট বিক্রি করে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসফিয়া জান্নাত সালেহের বিরুদ্ধে ১৬ কোটি টাকা পাচারের তথ্য মিলেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এই তথ্য পাওয়া গেছে।

 

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়া অভিযোগ থেকে দেখা যায়, সায়মন ওভারসীজ নামের ট্রাভেল এজেন্ট প্রতিষ্ঠানটি ঢাকায় নিজেদের কোম্পানির নামে থাকা গ্লোবাল ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম (জিডিএস) আইডি ব্যবহার করে বিদেশে এজেন্টদের মাধ্যমে এয়ার টিকিট বিক্রি করে আসছিল। অবৈধভাবে এ টিকিট বিক্রির টাকা বৈধপথে দেশে আনা সম্ভব নয়। প্রতিষ্ঠানটি ক্রস বর্ডারে এয়ার টিকিট বিক্রি করে অভিনব কায়দায় অর্থ পাচারে জড়িয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

 

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর সায়মন ওভারসীজ লিমিটেডের কাছে ক্রস বর্ডার (দেশের বাহিরে) এয়ার টিকিট বিক্রয়ের মাধ্যমে অর্থ পাচারের বিষয়ে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। গত সোমবার প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসফিয়া জান্নাত সালেহ’র কাছে এ চিঠি পাঠানো হয়।

 

আসফিয়া জান্নাত সালেহের কাছে পাঠানো মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, সায়মন ওভারসীজ ট্রাভেল এজেন্সি কর্তৃক ক্রস বর্ডার (দেশের বাহিরে) টিকিট বিক্রয়ের একটি স্টেটমেন্ট পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত বছরের ৪ জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের ২১ আগস্ট পর্যন্ত সায়মন ওভারসীজ বাংলাদেশের ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট এসোসিয়েশনের (আইএটিএ) ডিডিএস আইডি ব্যবহার করে মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকা, কানাডা, ব্রিটেন ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ওইসব দেশের ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে মোট ১ হাজার ৮৯৪টি এয়ার টিকিট বিক্রি করেছে। এই টিকিটের আনুমানিক মূল্য ১৬ কোটি টাকা। টিকিটগুলো ব্যবহার করে যাত্রীরা ওইসব দেশ থেকে বাংলাদেশে এসেছে কিংবা তৃতীয় দেশে ভ্রমণ করেছে। যাত্রীরা ওইসব দেশে টিকিটের টাকা প্রদান করলেও তা বাংলাদেশে ফেরত আসেনি বলে অভিযোগ এসেছে।

 

একাধিক ট্রাভেল এজেন্সি ব্যবসায়ীর সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, গ্লোবাল ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেমের (জিডিএস) মাধ্যমে ট্রাভেল এজেন্টরা এয়ার টিকিট বিক্রি করে থাকেন। এজন্য নিজস্ব আইডি থাকে যা বাংলাদেশ থেকেই পরিচালনা করতে হয়। মূলত ওই আইডির মাধ্যমে এয়ার টিকিট বিক্রি করে ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট এসোসিয়েশনের (আইএটিএ) মাধ্যমে এয়ারলাইন্সগুলোকে অর্থ পরিশোধ করতে হয়।

 

এয়ারলাইন্সগুলো এভাবে রেমিটেন্সের মাধ্যমে নিজ দেশে অর্থ নেয়, যার হিসেব রিজার্ভে থাকে। কিন্তু সায়মন ওভারসীজ অবৈধভাবে নিজেদের আইডি বিভিন্ন দেশের ট্রাভেল এজেন্সিকে দিয়েছে। ওই এজেন্সিগুলো থেকে বিদেশে টিকিট বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু সেই বিক্রির টাকা আর দেশে আসছে না। দেশের রিজার্ভেও যুক্ত হচ্ছে না। এভাবেই প্রতিষ্ঠানটি অর্থ পাচার করছে।

 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ট্রাভেল এজেন্টদের শীর্ষ সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশের (আটাব) মহাসচিব ছিলেন আসফিয়া জান্নাত সালেহ। মূলত তিনি ওই পদের প্রভাব খাটিয়ে ট্রাভেল খাতে বড় ধরনের অনিয়ম করেন।

 

চলতি বছরের আগস্টে সংগঠনটির সভাপতি ও মহাসচিবের নানা অনিয়ম, দুর্নীতি এবং অর্থ আত্মসাতের একাধিক অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আটাব কমিটি বাতিল করে দেয় মন্ত্রণালয়। এরপর থেকেই আসফিয়ার বিরুদ্ধে এয়ার টিকিট কেলেঙ্কারির একাধিক অভিযোগ উঠতে থাকে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ
  • © All rights reserved © 2019 alokitoswapner-bd.com - It is illegal to use this website without permission.
Design & Developed by Freelancer Zone
themesba-lates1749691102