শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:৩৭ পূর্বাহ্ন

ফ্যাসিবাদী বিদায় নিয়েছে, ফ্যাসিবাদ নয় : জামায়াত আমির

আলোকিত স্বপ্নের বিডি
  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ফ্যাসিবাদীরা বিদায় নিয়েছে, ফ্যাসিবাদ এখনো বিদায় নেয়নি। আমরা পরিষ্কার বলতে চাই, কোনো ফ্যাসিবাদকে আর বাংলার জমিনে বরদাশত করা হবে না।

শুক্রবার (০৫ ডিসেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রামের লালদিঘি আন্দোলনরত ৮ দলীয় জোটের উদ্যোগে আয়োজিত বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘কেউ যদি আবার ফ্যাসিবাদের ভাষায় কথা বলেন, কেউ যদি আবার ফ্যাসিবাদীদের মতো আচরণ করেন, তারা কোনো পথ খুঁজে পাবেন আমরা জানি না। কিন্তু আমরা পরিষ্কার বলতে চাই, এ দেশের তরুণ, ছাত্র-জনতা এবং মেহনতি মানুষ আর ফ্যাসিবাদকে বরদাশত করবে না। আমরা অতীতে রুখে দিয়েছিলাম, আল্লাহর ওপর ভরসা করে। ভবিষ্যতে কেউ মাথা তুললে তাও রুখে দেওয়া হবে ইনশা আল্লাহ। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা কোনো বিশেষ দলের বিজয় চাচ্ছি না, ৮ দলের বিজয়ও চাচ্ছি না। আমরা বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের আকাঙ্ক্ষার বিজয় চাই। সেই আকাঙ্ক্ষার বিজয় হবে কুরআনের আইনের মাধ্যমে ইনশা আল্লাহ। এটা প্রমাণিত হয়েছে, এর বাইরে গিয়ে কোনো কিছু দিয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়।’

তিনি আরও বলেন, ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের জুলাই পর্যন্ত মানুষ স্বস্তিতে কথা বলতে পারেনি। বাংলাদেশের মানুষের জীবনের কোনো নিরাপত্তা ছিল না। বাংলাদেশের মানুষ নির্যাতন, অবিচারের শিকার হয়ে কোথাও সামান্যটুকু বিচার পায়নি। বাংলাদেশ দুর্নীতিতে ভেসে গিয়েছিল। দেশের টাকা লুণ্ঠন করে বিদেশে পাচার করা হয়েছিল—এক নয়, দুই নয় ২৮ লাখ কোটি টাকা। তারা রাস্তাঘাট ও দালান তৈরি করেছিল, রডের বদলে বাঁশ দিয়ে। একবার একটা মেয়েকে বলতে শুনলাম, আজ যদি কবি বেঁচে থাকতেন তিনি বলতেন, ‘বাঁশ বাগানের মাথার ওপর চাঁদ উঠেছে ওই, চাঁদের জায়গায় চাঁদ তো আছে বাঁশগুলো সব কই।’ ফ্যাসিবাদীরা আমাদের উন্নয়নের গল্প শোনাতেন। বাংলাদেশ এখন সিঙ্গাপুর, বাংলাদেশ এখন কানাডা। হ্যাঁ, বাংলাদেশ কানাডা হয়েছে, তাদের জন্য।জামায়াত আমির বলেন, এরা রক্তাক্ত হাতে ক্ষমতায় এসেছিল, রক্তাক্ত হাতে বিদায় নিয়েছে। ক্ষমতায় আসার পর পিলখানায় ৫৭ জন মেধাবী সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করেছিল। তারা জুলাই-আগস্টে সারা দেশের আমাদের সন্তানদের হত্যার পর বলেছিলেন, অমুকের মেয়ে দেশ ছেড়ে পালায় না। অথচ…। আমাদের দুঃখ লাগে, তারা দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকেও আমাদের বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহার করতে চেয়েছিল। দেশের মানুষের জানমাল রক্ষার দায়িত্বে থাকা পুলিশের সদস্য ও কর্মকর্তাদের তারা ব্যবহার করতে চেষ্টা করেছেন। রাষ্ট্রের একটা প্রতিষ্ঠানকেও তারা ঠিকমতো দাঁড়াতে দেয়নি। বিচার বিভাগ ধ্বংস করেছে, নির্বাচন কমিশন ধ্বংস করেছে, দুর্নীতি দমন কমিশনকে বগলের নিচে নিয়েছে, মানবাধিকার কমিশনকে তারা পকেটে ঢুকিয়েছে। এভাবে সবকিছু তারা ধ্বংস করেছে।

এর আগে, দুপুর পৌনে ২টার দিকে সমাবেশের কার্যক্রম শুরু হয়। এ উপলক্ষে বেলা ১২টা থেকে সমাবেশস্থলে লোকজন জড়ো হতে থাকে। লালদিঘী মাঠেই জুমার নামাজ আদায় করেন সমাবেশে উপস্থিত লোকজন।

সমাবেশে বক্তব্য দেন, নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম (শায়েখে চরমোনাই) এবং বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হকসহ ৮ দলের শীর্ষ নেতারা।

সমাবেশে ৮ দলের ঘোষিত পাঁচ দাবিগুলো হলো: জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজন, জাতীয় নির্বাচনে উভয় কক্ষে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতি চালু, অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য সমান সুযোগের পরিবেশ নিশ্চিত করা, বিগত সরকারের সব জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা এবং স্বৈরাচারের দোসর হিসেবে অভিযুক্ত জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা।

আপনার মন্তব্য লিখুন

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ
  • © All rights reserved © 2019 alokitoswapner-bd.com - It is illegal to use this website without permission.
Design & Developed by Freelancer Zone
themesba-lates1749691102