ডেস্ক রিপোর্ট//অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক শামীমা নূর পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনদিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার এ ডিমান্ডের আদেশ দেন ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কেএম ইমরুল কায়েশ।
আজ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-পরিচালক শাহীন আরা মমতাজ আদালতে আসামিদের তিনদিনের রিমান্ড আবেদন করেন। এই আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন দুদকের আইনজীবী মীর আহাম্মদ আলী সালাম।
আর আসামিপক্ষে সাখাওয়াত উল্লাহ ভূঁইয়া, গোলাম ফাত্তাহ রিমান্ড বাতিল চেয়ে শুনানি করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এর উপ-পরিচালক শাহীন আরা মমতাজ বাদী হয়ে গত ৪ আগস্ট পাপিয়া দম্পতির বিরুদ্ধে মামলাটি করেন। ৬ কোটি ২৪ লাখ ১৮ হাজার টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদক আইনের ২০০৪ এর ২৭ (১) ধারায় এ মামলা করা হয়।মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৯ সালের ১২ অক্টোবর থেকে চলতি বছরের ২২ ফ্রেব্রুয়ারি পর্যন্ত ওয়েস্টিন হোটেলের ২৫টি রুমে অবস্থান করে রুম-নাইট, রেস্টুরেন্টের খাবার, রেস্টুরেন্টের মদ, স্পা, লন্ড্রি, মিনি বার ফুড, মিনি বার বাবদ মোট তিন কোটি ২৩ লাখ ২৪ হাজার ৭৬১ টাকার বিল ক্যাশে পরিশোধ করেন পাপিয়া। ওয়েস্টিন হোটেলে থাকা অবস্থায় প্রায় ৪০ লাখ টাকার শপিং করেন তিনি। যে টাকার কোনো বৈধ উৎস দেখাতে পারেননি।
এ ছাড়া ২০১৫ সালের এপ্রিল থেকে ২০২০ সালে এপ্রিল পর্যন্ত পাঁচ বছরে বাসা ভাড়া বাবদ ৩০ লাখ টাকা, গাড়ির ব্যবসায় বিনিয়োগকৃত এক কোটি টাকা এবং নরসিংদীতে কেএমসি কার ওয়াশ সলিউশনে বিনিয়োগ করা ২০ লাখ টাকা, বিভিন্ন ব্যাংকে তার এবং তার স্বামীর নামে জমাকৃত ৩০ লাখ ৫২ হাজার ৯৫৮ টাকারও কোনো বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি দুদকের অনুসন্ধানে।অন্যদিকে র্যাবের অভিযানে তার বাসা থেকে ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা এবং সুমনের নামে হোন্ডা সিভিএ ২০১২ মডেলের ২২ লাখ টাকার গাড়ি উদ্ধার করা হয়। এরও কোনো বৈধ উৎস মেলেনি দুদকের অনুসন্ধানে।
গত ২২ ফেব্রুয়ারি র্যাব-২ এর একটি দল পাপিয়াকে আটক করে। ওই দিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে নয়াদিল্লিতে যাওয়ার সময় বহির্গমন গেট থেকে তাদের আটক করা হয়। আটক করার সময় তাদের কাছ থেকে সাতটি পাসপোর্ট, বাংলাদেশি দুই লাখ ১২ হাজার ২৭০ টাকা, ২৫ হাজার ৬০০ জাল টাকা, ৩১০ ভারতীয় রুপি, ৪২০ শ্রীলংকান মুদ্রা, ১১ হাজার ৯১ মার্কিন ডলার ও সাতটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।
পরে ২৩ ফেব্রুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় জাল টাকা উদ্ধারের ঘটনায় একটি মামলা করা হয়। এর পরের দিন ২৪ ফেব্রুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে শেরে বাংলানগর থানায় অস্ত্র ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে আরেকটি মামলা করা হয়।