মোঃ নাজমুল ইসলাম, বাহুবল প্রতিনিধি : হবিগঞ্জের বাহুবলে প্রেমিকার বাড়িতে নিমন্ত্রণ করে নিয়ে হাত-পা বেঁধে বর্বর নির্যাতনের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সোমবার (০২ নভেম্বর) দুপুরে নির্যাতনের স্বীকার কলেজ ছাত্র ফয়ছলের মা রাবিয়া বেগম বাদী হয়ে ১০ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ৫/৬ জনকে আসামি করে বাহুবল মডেল থানায় এ মামলা দায়ের করেন। এদিকে মামলার এজাহারভূক্ত আসামি সালাহউদ্দিন ও এমরান নামের দুইজনকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করেছে পুলিশ।
উল্লখ্য, শুক্রবার দিবাগত রাতে বাহুবল উপজেলার লামাতাসি ইউনিয়নের দ্বিমুড়া প্রামে প্রেমিককে নিমন্ত্রণ করে নিয়ে হাত পা বেধে নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। নির্যাতনের শিকার ওই প্রেমিকের নাম ফয়সল মিয়া (২২)। তিনি চুনারুঘাট উপজেলার হাসারগাও গ্রামের আসান উল্লার ছেলে। সে বৃন্দাবন সরকারি কলেজের অনার্স ৪র্থ বর্ষের ছাত্র।
মামলার বাদি মা রাবেয়া বেগম এজাহারে উল্লেখ করেন, তার ছেলে ফয়সল আহমেদ হবিগঞ্জ বৃন্দাবন সরকারি কলেজে অর্থনীতি বিভাগে অধ্যায়নরত। আর এ সুবাদে একই কলেজের শিক্ষার্থী বাহুবল উপজেলার দ্বিমুড়া গ্রামের কুয়েত প্রবাসী আব্দুল হাইর মেয়ে মাহফুজা আক্তার লিজার সাথে গড়ে উঠে প্রেমের সম্পর্ক। ভালবাসার সুত্র ধরে ফয়ছল প্রায়ই লিজার বাড়িতে আসা-যাওয়া করতো।
এক পর্যায়ে লিজা তাদের প্রেমের সম্পর্কের কথা লিজা তার মাকে জানায় এবং ফয়সলকে তার মায়ের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। ঘটনার দিন অর্থাৎ ৩০ অক্টোবর ফয়সলকে লিজার মা জাহানারা আক্তার লিপি তাদের বাড়িতে আমন্ত্রণ জানান।
শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রেমিকার বাড়ি দ্বিমুড়া গ্রামে লিজার বাড়িতে যান ফয়সল। রাত সাড়ে ১০ টার দিকে ফয়সলকে হাত-পা বেঁধে বর্বর নির্যাতন করেন লিজার স্বজন ও প্রতিবেশীরা। সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ফয়সলকে বেধড়ক মারধর করা হয়। সেখান থেকে ফয়ছলের পরিবার তাকে উদ্ধার করে প্রথমে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতাল ভর্তি করেন। সেখানে তার অবনতি ঘটলে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই ফোয়াদ হাসান এ প্রতিবেদককে জানান, ঘটনার রাতে ওই গ্রামে চোর ধরা হয়েছে মর্মে তিনি সঙ্গীয় ফোর্স সহ ঘটনাস্থলে যান। এসময় উভয় পক্ষের মুরুব্বীগণ সমঝোতায় বিষয়টি মিমাংসার জন্য চেষ্ঠা করছিলেন। তিনি বলেন এসময় ভিকটিম ফয়ছলকে নির্যাতনের বিষয়ে কেউ কিছু বলেনি বা এধরণের কোন আলামতও পাওয়া যায়নি। শেষে সমঝোতার মাধ্যমে ফয়ছলকে জিম্মায় নেন তার অভিভাবক।
তবে ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর পুলিশ দ্রুত অভিযান চালিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মাওলানা আজগর আলীর ছেলে মইন উদ্দিন এমরান ও আব্দুল কাইয়ুমের ছেলে সালহ উদ্দিনকে আটক করা হয়। পরে তাদের প্রেফতার দেখিয়ে সোমবার বিকালে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে বলে তদন্ত কর্মকর্তা জানান।
বাহুবল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ইতিমধ্যে এ ঘটনার সাথে জড়িত দুইজনকে আটক করে কোর্টের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে এবং বাকি আসামীদেরকে আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।