উত্তর গাজায় রাতভর বোমা বর্ষণে প্রাণ হারিয়েছে ৫১ জন, দক্ষিণে হাসপাতাল লক্ষ্য করে হামলায় নিহত আরও ৩০।
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলের বর্বরোচিত বিমান ও স্থল হামলায় একদিনে প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ৮১ জন ফিলিস্তিনি। এর মধ্যে উত্তর গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর ব্যাপক হামলায় মঙ্গলবার মধ্যরাতের পর থেকে নিহত হয়েছেন অন্তত ৫১ জন। এছাড়া দক্ষিণ গাজার ইউরোপীয় ও নাসের হাসপাতালে চালানো পৃথক হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন আরও ৩০ জন।
বুধবার (১৪ মে) আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ তথ্য জানিয়েছে। সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় হামলা আরও তীব্রতর করেছে। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের বরাত দিয়ে জানানো হয়েছে, মধ্যরাত থেকে চালানো হামলায় কেবল উত্তর গাজায়ই নিহত হয়েছেন ৪৫ জন।
দক্ষিণ গাজার ইউরোপীয় ও নাসের হাসপাতালে চালানো হামলায় নিহত ৩০ জনের মধ্যে এক সাংবাদিকও রয়েছেন, যিনি চিকিৎসা নিতে এসেছিলেন বলে নিশ্চিত করেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েলের টানা আগ্রাসনে নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫২ হাজার ৯০৮ জনে। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও ১ লাখ ১৯ হাজার ৭২১ জন।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ ১৫ মাসের সামরিক অভিযানের পর আন্তর্জাতিক চাপের মুখে চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ইসরায়েল। এরপর প্রায় দুই মাস সেখানে আপাত শান্তি বিরাজ করলেও মার্চের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে হামাসের সঙ্গে মতানৈক্যকে কেন্দ্র করে ফের শুরু হয় বিমান হামলা।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ১৮ মার্চ থেকে নতুন করে শুরু হওয়া ইসরায়েলি বিমান হামলায় ইতোমধ্যেই নিহত হয়েছেন ২ হাজার ৭৮০ জন এবং আহত হয়েছেন প্রায় ৭ হাজার ৭০০ জন।
জাতিসংঘ বলছে, ইসরায়েলের বর্বর হামলায় গাজার ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি ইতোমধ্যে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। অঞ্চলটির অধিকাংশ অবকাঠামো ধ্বংসপ্রাপ্ত বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এর আগে গত নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। একইসঙ্গে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও গণহত্যার মামলার মুখোমুখি হয়েছে ইসরায়েল।