ক্ষমতার বাইরে থেকেও দেশের জনগণের জন্য কাজ করার অঙ্গীকার নিয়ে নতুন রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মের ঘোষণা দিয়েছেন সাবেক সামরিক কর্মকর্তা ও সদস্যসহ বেসামরিক শ্রেণিপেশার সমন্বয়ে গঠিত একটি পক্ষ।
মঙ্গলবার (১৩ মে) রাজধানীতে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
এতে উপস্থিত ছিলেন লেফট্যানেন্ট কমান্ডার (অব.) মেহেদী হাসান, মেজর (অব.) রাজিবুল হাসান, লেফটেন্যান্ট (অব.) সাইফুল্লাহ খান সাইফ, খান মো. নাজমুস সাকিব, মো. মুশফিকুর রহিম, ডা. সৌরভ চন্দ্র মজুমদার প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন লেফট্যানেন্ট কমান্ডার (অব.) মেহেদী হাসান।
মেহেদী হাসান বলেন, ছাত্র-জনতার ডাকে ঘটে যাওয়া ঐতিহাসিক জুলাই অভ্যুত্থান ছিল এক ফ্যাসিবাদবিরোধী গণজাগরণ। প্রায় দুই হাজার শহীদ, ৩০ হাজারের বেশি আহত-গাজি এবং অসংখ্য মানুষের আত্মত্যাগের মাধ্যমে রচিত হয়েছিল বাংলাদেশ ২.০। কিন্তু গভীর দুঃখ ও উদ্বেগের সঙ্গে দেখা যাচ্ছে এই বিপ্লবের মূল চেতনা আজ হুমকির মুখে। অন্তর্বর্তী সরকার অভ্যন্তরীণ ও বহিঃচাপের মধ্যে পড়ে জুলাইয়ের অঙ্গীকার থেকে অনেকটাই বিচ্যুত।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, প্রচলিত রাজনৈতিক দলগুলো আবার ফিরে যাচ্ছে পুরোনো রাজনীতি ধারায়। তারা টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, কোন্দল, ক্ষমতার লোভ ও চেতনার বাণিজ্যে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে এই বাস্তবতায় আমরা বিভিন্ন শ্রেণিপেশার দেশ প্রেমিক নাগরিক আজ ঘোষণা দিচ্ছি একটি নতুন রাজনৈতিক দলের যাত্রার। যার আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠান আগামী জুন মাসের মাঝামাঝি সময়ে হবে বলে আশা করছি।
মেহেদী হাসান জানান, নতুন এই দলের উদ্দেশ্য কোনো ক্ষমতার লোভ নয়, আমাদের লক্ষ্য- সকল নাগরিক সমান অধিকার, ইনসাফভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা, কল্যাণমুখী রাষ্ট্রগঠন, সামাজিক ও অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে স্থায়ী সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা।
এ সময় নতুন এই রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম থেকে কয়েকটি জনকল্যাণমুখী সেল গঠন করার কথাও বলা হয়। এগুলো হলো- নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণ সেল; স্বাস্থ্য সুরক্ষা সেল; নিরাপত্তা ও আইনি সহায়তাবিষয়ক সেল; কৃষি, মৎস্য ও ভেটেরিনারি সেল; শিক্ষা সেল; মিডিয়া ও সাংস্কৃতিক সেল; যুব উন্নয়ন ও দারিদ্র বিমোচন সেল; নারী ও শিশু বিষয়ক সেল এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক সেল। সেলগুলোতে যুক্ত হওয়ার জন্য তারা ডাক্তার, প্রকৌশলী, শিক্ষক, কৃষিজীবী, সাবেক সামরিক ও পুলিশ কর্মকর্তা, আইনজীবী, সাংবাদিকসহ সকল শ্রেণী-পেশার নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানান।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে লেফট্যানেন্ট কমান্ডার (অব.) মেহেদী হাসান বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো শুধু ক্ষমতা ও ভোটের যুদ্ধে নামতে চায়। আমরা এর সঙ্গে সঙ্গে জনগণের জন্য কাজ করে যেতে চাই। রাষ্ট্র যে সকল সুযোগ সুবিধা নাগরিকদের দিতে পারছে না, আমরা সেগুলো নাগরিকদের কাছে পৌঁছে দিয়ে রাষ্ট্রকে সহযোগিতা করতে চাই।
মেজর (অব.) রাজিবুল হাসান বলেন, সরকারের বিভিন্ন যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে যুবকদের ট্রেনিং দিয়েই ছেড়ে দেওয়া হয়। আমরা এসব ট্রেনিংপ্রাপ্ত যুবকদের কর্মসংস্থান তৈরি করতে চাই। আমরা বেশ কিছু আইটি ট্রেনিং সেন্টার স্থাপন করবো। এ সময় যুব সমাজের উন্নয়নে সামাজিক ব্যবসা নিয়ে নতুন রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মটি কাজ করবে বলে জানান তিনি।