ভারতের জম্মু-কাশ্মিরে ‘অপারেশন কিলার’ নামে সন্ত্রাস দমন অভিযানে তিন জন সন্ত্রাসী নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (১৩ মে) শোপিয়ান জেলার শুকাল কেল্লে এলাকায় সেনাবাহিনী এ অভিযান চালায়। ভারতীয় সেনাবাহিনী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’-এ দেওয়া এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায়।
বিবৃতিতে বলা হয়, “গোপন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে সেনাবাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে সন্ত্রাসীদের গুলি বিনিময় হয়। এতে ৩ সন্ত্রাসী নিহত হয়।” সেনাবাহিনী জানিয়েছে, জম্মু-কাশ্মিরে সন্ত্রাস ও বিচ্ছিন্নতাবাদী তৎপরতা সম্পূর্ণ নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে।
এর আগে, গত ২২ এপ্রিল অনন্তনাগ জেলার পেহেলগামের বৈসরন উপত্যকায় এক ভয়াবহ হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত হন। তারা সবাই পুরুষ এবং অধিকাংশই হিন্দু ধর্মাবলম্বী। স্বয়ংক্রিয় রাইফেল দিয়ে চালানো ওই হামলার দায় স্বীকার করে ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ) নামের একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী, যা পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরভিত্তিক লস্কর-ই তৈয়বার একটি শাখা বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এই ঘটনার পর ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেয়, যার মধ্যে রয়েছে সিন্ধু পানি চুক্তি পুনর্বিবেচনা, পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা বাতিল এবং অন্যান্য নিষেধাজ্ঞা। জবাবে পাকিস্তানও ভারতের জন্য আকাশসীমা বন্ধসহ পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
এমন উত্তেজনার মধ্যেই ভারত ‘অপারেশন সিঁদুর’ চালিয়ে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মিরে হামলা চালায়। নয়াদিল্লির দাবি, এ অভিযানে ৭০ জন পাকিস্তানি সন্ত্রাসী নিহত হয়। তবে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, নিহতের সংখ্যা ৪০ এবং আহত ১২১ জন, যাদের মধ্যে ১১ জন সেনা সদস্য রয়েছেন।
ভারতের এই অভিযানের পরপরই পাকিস্তান ‘অপারেশন বুনইয়ানুম মারসুস’ শুরু করে, যার বাংলা অর্থ ‘সীসার প্রাচীর’। দুই পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশীর এই পাল্টাপাল্টি অভিযানের মধ্যেই আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহলে উদ্বেগ বাড়ছে।