পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়ায় ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছে একটি সামরিক ঘাঁটি। গতকাল সোমবার স্থানীয় সময় দুপুর ২টার দিকে বোর্নো প্রদেশের মার্তে জেলার সামরিক ঘাঁটিতে অতর্কিতভাবে হামলা চালায় শতাধিক সশস্ত্র সন্ত্রাসী।
হামলায় কয়েকজন সেনা কর্মকর্তা ও সদস্য নিহত এবং আহত হয়েছেন। এছাড়াও, বেশ কয়েকজন সেনা সদস্যকে অপহরণ করে নিয়ে যায় হামলাকারীরা। তবে এ পর্যন্ত নাইজেরিয়ার সামরিক বাহিনী হতাহত ও অপহৃতদের সঠিক সংখ্যা প্রকাশ করেনি।
এলোপাতাড়ি গুলি, অস্ত্রাগার লুট
ঘাঁটিটি নাইজেরিয়ার সেনাবাহিনীর ১৫৩ নম্বর টাস্ক ফোর্স ব্যাটালিয়ন ব্যবহৃত হতো। প্রত্যক্ষদর্শী এক সেনা সদস্য, যিনি অপহরণের পর পালিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছেন, রয়টার্সকে জানান, সন্ত্রাসীরা মোটরসাইকেল ও গাড়িতে চেপে এসে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়।
এরপর তারা ঘাঁটিতে থাকা গোলাবারুদের একটি বড় অংশ লুট করে নেয় এবং সেনাদের অপহরণ করে দ্রুত সরে যায়।
বোকো হারাম বা ইসওয়াপ জড়িত থাকার আশঙ্কা
হামলার দায় এখন পর্যন্ত কোনো গোষ্ঠী স্বীকার করেনি। তবে সন্দেহের তালিকায় রয়েছে আল কায়দাপন্থি সন্ত্রাসী সংগঠন বোকো হারাম ও তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী আইএসপন্থি ইসলামিক স্টেট ওয়েস্ট আফ্রিকান প্রভিন্স (ইসওয়াপ)। এই দুটি গোষ্ঠীই বহু বছর ধরে নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে আসছে।
সেনাবাহিনীর তৎপরতা শুরু
নাইজেরিয়ার প্রতিরক্ষা বাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল ওনিয়েচি অ্যাপোলিনা আনিলে রয়টার্সকে জানিয়েছেন, তিনি এ বিষয়ে মন্তব্য করতে পারবেন না এবং সামরিক সদর দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দেন।
সেখানেও যোগাযোগ করা হলেও কোনো কর্মকর্তা আনুষ্ঠানিকভাবে বক্তব্য দিতে রাজি হননি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, অপহৃত সেনাদের উদ্ধারে অভিযান শুরু করেছে সামরিক বাহিনী।
নিরাপত্তাহীনতার নতুন বার্তা
নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, এমন একটি সুসংগঠিত ও অল্প সময়ের মধ্যে সম্পন্ন হওয়া হামলা নাইজেরিয়ার সামরিক গোয়েন্দা ব্যবস্থার দুর্বলতা স্পষ্ট করে তুলছে। সেই সঙ্গে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর উপস্থিতি যে এখনো দৃঢ়, তাও প্রমাণিত হচ্ছে।