বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ফেইক কথা না বলে পরিষ্কার করে বলেন নির্বাচন কবে হবে, একটা রোডম্যাপ দেন।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের খাগড়াবাড়ি শেখ বাজারে গণসংযোগ কর্মসূচিতে এসব মন্তব্য করেন তিনি।
এর আগে আলজাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছিলেন দেশের রাজনৈতিক দলগুলো ‘সংক্ষিপ্ত সংস্কার প্যাকেজ’ নিয়ে একমত হলে জাতীয় নির্বাচন ডিসেম্বরেই হতে পারে। তবে ‘বৃহৎ সংস্কার প্যাকেজ’ চাইলে নির্বাচন আগামী বছরের জুনে অনুষ্ঠিত।
নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার এমন মন্ত্যবের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এদেশের মানুষ তাদের নিজস্ব সরকার দেখতে চায়। বর্তমানে এমপি নেই, সমস্যা হলে কার কাছে যাবেন। স্থানীয় চেয়ারম্যানরা সব সমস্যার সমাধান করতে পারেন না। এজন্য আমরা বারবার করে বলছি, সংস্কারটা হউক, নির্বাচনটাও হউক।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনটা বাংলাদেশে খুব দরকার। এই কাজগুলো যদি আমরা না করতে পারি, তাহলে হবে না। আমরা আশা করবো, সরকারের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে।
তারা বলেছে যে, নির্বাচন ডিসেম্বর থেকে থেকে জুনের মধ্যে দেওয়ার চেষ্টা করবে। আমরা বলি এভাবে না বলে পরিষ্কার করে বলেন- নির্বাচনটা কখন হবে, রোডম্যাপ দেন। রোডম্যাপ দিলেই মানুষ আশ্বস্ত হবে।’
সংস্কার-নির্বাচন প্রসঙ্গে মহাসচিব বলেন, সরকারের প্রধান দায়িত্ব একটা নির্বাচন করা। সবাই মিলে আমরা অধ্যাপক ইউনূস সরকারকে দায়িত্ব দিয়েছি। তিনি অনেক জ্ঞানী ও নোবেলবিজয়ী মানুষ, তবে রাজনীতিবিদ নন।
গত ১৫ বছর দেশের মানুষ ভোট দিতে পারেনি। এখন একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। দেশের ও মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে নির্বাচন দেওয়া দরকার৷ সংস্কারের পাশাপাশি নির্বাচনের ব্যবস্থা করা উচিত।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আওয়ামী লীগ দেশটাকে জাহান্নামে পরিণত করেছিল। হামলা-মামলা, গুম, খুন, নির্যাতনসহ কোটি কোটি টাকা লুট করেছে তারা। দেশের মানুষ অস্থির হয়ে জীবন দিয়ে রক্ত দিয়ে হাসিনাকে উৎখাত করেছে।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমরা আরেকটা গাজায় পরিণত হতে কিংবা যুদ্ধ দেখতে চাই না। হিউম্যানিরিটিয়া প্যাসেজ সিদ্ধান্তে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বসে সরকারের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত ছিল।
গণঅভ্যুত্থানের পরে বেগম জিয়া হাসপাতাল থেকে একটি বাণী দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, অনেক নির্যাতন হয়েছে, রক্তপাত ঘটেছে। আসুন সব প্রতিহিংসা বাদ দিয়ে আমরা একটা সুন্দর বাংলাদেশ গড়ি। সবাই মিলে সুন্দর একটি বাংলাদেশ গড়ে তোলারও আহ্বান জানান তিনি।
এ সময় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমিন, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল হামিদ, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব হোসেন তুহিনসহ দলটির অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।