পিরোজপুরে অন্তত ১৫ জন হিন্দু ধর্মাবলম্বী বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীতে যোগ দিয়েছেন। জামায়াতের সাবেক নায়েবে আমির প্রয়াত দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ছেলে মাসুদ সাঈদীর হাত ধরে পিরোজপুরে ওই ১৫ জন জামায়াতে যোগ দেন।
আজ শনিবার সকালে মাসুদ সাঈদী পিরোজপুর সদর উপজেলার হুলারহাট, পিটিআই, খালিশাখালী, রায়েরকাঠি ও মরিচাল এলাকায় জামায়াত ইসলামীর পক্ষে গণসংযোগ করেন। এ সময় মাসুদ সাঈদীর আহবানে হিন্দু ধর্মাবলম্বীসহ অনেকে জামায়াতে যোগদানের সহযোগী সদস্য ফরম পূরণ করেন।
মাসুদ সাঈদীর হাতে জামায়াতের সহযোগী সদস্য ফরম পূরণকারী হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা হলেন– পিরোজপুর সদর উপজেলার কুন্ড সাহা, বিশ্বজিৎ সাহা, জয় সাহা, সমিরণ দাস, উত্তম কুন্ড, নিতাই কুন্ড, অচিন কুন্ড, সুনীল দাস, বানেশ্বর গ্রামের কৃষ্ণ রায়, কৃষ্ণ কুমার মাঝি, শিকারপুর এলাকার সুকান্ত মিস্ত্রী, কদমতলা এলাকার রতন কুমার শীল, পালপাড়া এলাকার নিতাই মন্ডল, সুকুমার রায়, মনিন্দ্র লাল সাহা, রাজারহাট এলাকার জয়দেব মিত্র।
বানেশ্বর গ্রামের কৃষ্ণ কুমার মাঝি বলেন, ‘আমাদের কেউ কোনো রকম জোর করেনি। আমরা নিজেরাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে ফরম পূরণ করেছি। আমরা জামায়াতের সদস্য হতে চাই, চাওয়া থেকেই ফরম পূরণ করেছি।’
গণসংযোগকালে পিরোজপুর জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুর রব, পিরোজপুর জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যক্ষ জহিরুল হক, এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক, পৌর আমির মাওলানা ইসহাক আলী প্রমুখ।
মাসুদ সাঈদী বলেন, ‘লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতাকে অর্থবহ করে তোলাই এখন আমাদের সবচেয়ে বড় কাজ। স্বাধীনতাকে অর্থবহ করে তুলতে হলে অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অর্জন করতে হবে আগে। সেই স্বাধীনতা অর্জনের জন্য দেশবাসীকে এখন ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য কাজ করতে হবে। যে স্বপ্ন নিয়ে লাখো মানুষ প্রাণ দিয়েছিল, সেই স্বপ্ন পূরণে আমরা কতটা সফল? বৈষম্য এখনো রয়েছে, বিচারহীনতার সংস্কৃতি আমাদের পিছিয়ে দিচ্ছে। ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ গণতন্ত্রকে দুর্বল করছে। দুর্নীতি আমাদের সমাজ জীবনকে বিপর্যস্ত করে দিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সমাজ থেকে চাঁদাবাজি, লুটপাট, দুর্নীতি দূর করে একটি শোষণ, বৈষম্যহীন নীতি ও ইনসাফপূর্ণ রাষ্ট্র গঠনের জন্য জামায়াতে ইসলামী নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।’
সংগ্রাম শেষ হয়নি জানিয়ে মাসুদ সাঈদী বলেন, ‘৫ আগস্টের বিজয় আমাদের পথ দেখিয়েছে। এখন প্রয়োজন সৎ ও যোগ্য নেতৃত্বের মাধ্যমে সেই পথ ধরে এগিয়ে গিয়ে একটি প্রকৃত বৈষম্যহীন কল্যাণময় বাংলাদেশ গড়ে তোলা।’
‘বিজয়কে অর্থবহ করতে হলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এমন একটি দেশ রেখে যেতে হবে, যেখানে তারা গৌরবের সঙ্গে বলতে পারবে—আমরা আমাদের স্বাধীনতা ও বিজয়ের প্রকৃত অর্থ বুঝতে পেরেছি। সেটিকে রক্ষা করতে পেরেছি।’