শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:৩৯ অপরাহ্ন

আজ ২৬ মার্চ, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস

আলোকিত স্বপ্নের বিডি
  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ২৬ মার্চ, ২০২৫

আজ ২৬ মার্চ, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। এই দিনটি বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় দিন, যেদিন আমাদের জাতি স্বাধীনতা অর্জন করে এবং এ দেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান জানানোর দিন। ১৯৭১ সালে আজকের দিনে পাকিস্তানি শাসনের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু হয়েছিল, যা পরবর্তীতে আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অর্জনের পথ তৈরি করেছিল।

জাতীয় পর্যায়ে দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনের জন্য বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে দেশব্যাপী জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন ভবনগুলো আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হবে, যাতে দেশের স্বাধীনতার মর্যাদা প্রতিফলিত হয়।

ঢাকা শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বিশেষ আয়োজন করা হবে।

বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে প্রস্তুত করা হয়েছে জাতীয় স্মৃতিসৌধ। স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ পরিষ্কার ও সজ্জিত করা হয়েছে, এবং কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে যাতে কোন ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়ানো যায়। সিসিটিভি কন্ট্রোল এবং ওয়াচ টাওয়ারের মাধ্যমে পুরো এলাকা সার্বক্ষণিক নজরদারিতে থাকবে।

সকাল ৬টা ১ মিনিটে ঢাকাসহ সারা দেশে একত্রিশবার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির আনুষ্ঠানিক সূচনা হবে। এরপর, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এর পর, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টার নেতৃত্বে বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা এবং বীর মুক্তিযোদ্ধারা স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।

বিদেশি কূটনীতিক, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন, এবং সাধারণ জনগণও স্মৃতিসৌধে এসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।

দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলা স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ ছাড়াও জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত পরিবেশন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রীদের সমাবেশ ও কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হবে।

এছাড়া, বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া সংগঠন মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিশুদের চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতা, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র এবং চলচ্চিত্র প্রদর্শনের আয়োজন করেছে। ফুটবল, টি-টুয়েন্টি ক্রিকেট, কাবাডি এবং হাডুডু খেলারও আয়োজন করা হবে। এসব অনুষ্ঠান স্বাধীনতা সংগ্রামের চেতনা এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করবে।

দেশের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে দেশের শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে বিশেষ দোয়া ও উপাসনার আয়োজন করা হবে। একই সঙ্গে, দেশের সব হাসপাতাল, জেলখানা, শিশু পরিবার, বৃদ্ধাশ্রমসহ অন্যান্য সমাজসেবা প্রতিষ্ঠানে বিশেষ খাবার পরিবেশন করা হবে।

এই দিবসে সকল শিশু পার্ক ও জাদুঘর উন্মুক্ত থাকবে এবং দর্শনার্থীরা বিনা টিকিটে প্রবেশ করতে পারবেন। চট্টগ্রাম, খুলনা, মোংলা, পায়রা বন্দর, এবং ঢাকার সদরঘাট, নারায়ণগঞ্জের পাগলা, বরিশাল ও চাঁদপুর বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের জাহাজসমূহ সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত জনসাধারণের পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

দেশের বাইরে বাংলাদেশ দূতাবাসগুলোতেও মহান স্বাধীনতা দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বিশেষ কর্মসূচি পালিত হবে।

স্বাধীনতা দিবসের এই ক্ষণটি আমাদের নতুন প্রজন্মের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, স্বাধীনতার সংগ্রাম এবং বীর শহীদদের আত্মত্যাগকে জানিয়ে দেশের প্রতি তাদের কর্তব্য ও দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন করা যায়। আজকের এই দিন আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে স্বাধীনতার জন্য আত্মত্যাগকারী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সম্মান জানাতে এবং আমাদের দেশের উন্নতি ও অগ্রগতি কামনা করতে উদ্বুদ্ধ করবে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ
  • © All rights reserved © 2019 alokitoswapner-bd.com - It is illegal to use this website without permission.
Design & Developed by Freelancer Zone
themesba-lates1749691102