সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৪৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে দুই গাড়ির সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৫। ময়মনসিংহে পাচারের সময় মানব কঙ্কাল উদ্ধার, গ্রেপ্তার- ২। কোকোর স্মৃতিতে ৮ দলীয় ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত। বাগেরহাটে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লটারি পদ্ধতি বাতিলের দাবীতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন। বঙ্গবন্ধু রেল সেতুর নাম পরিবর্তন। কালিহাতীতে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ট্রাকসহ ৬ ডাকাত গ্রেফতার। বিশ্ববিদ্যালয়ে মানসম্মত শিক্ষক প্রয়োজনঃ ড. আবুল কাশেম। বাংলাদেশি রোগী পেতে সীমান্তে মেট্রো চালু করবে ভারত। ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের ৪ স্পটে দুর্ঘটনার কবলে ১০ গাড়ি, নিহত ১, আহত ১৫। নরসিংদীতে ছাত্রদলকর্মীকে গুলি করে হত্যা।

ভারতে বসে হাসিনার রাজনৈতিক কার্যক্রমে সমর্থন নেই মোদি সরকারেরঃ বিক্রম মিশ্রি।

আলোকিত স্বপ্নের বিডি
  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪

ভারতে বসে হাসিনার রাজনৈতিক কার্যক্রমে সমর্থন নেই মোদি সরকারেরঃ বিক্রম মিশ্রি।

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে টানাপোড়েনের মধ্যেই দিন দুয়েক আগে ঢাকা সফর করে গেছেন ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি। সদ্য সমাপ্ত এই সফর নিয়ে ভারতের সংসদ সদস্যদের (এমপি) বুধবার (১১ ডিসেম্বর) ব্রিফ করেছেন তিনি। বিরোধী দলীয় এমপি শশী থারুর নেতৃত্বাধীন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সামনে এই সফরের বিস্তারিত তুলে ধরেন বিক্রম। ব্রিফিংয়ে শেখ হাসিনা, ভারতে বসে তার রাজনৈতিক কার্যক্রম, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত নির্যাতনের মতো বিষয় উঠে আসে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্যা হিন্দুর খবর অনুযায়ী, বুধবার সংসদীয় স্থায়ী কমিটিকে পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি জানান, ভারতে বসে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনার বিষয়টি সমর্থন করে না নরেন্দ্র মোদি সরকার। এটি দুই দেশের সম্পর্কের একটি ক্ষুদ্র প্রতিবন্ধক।

তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক কোনো ‘একক রাজনৈতিক দল’ বা সরকারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। বরং বাংলাদেশের জনগণের প্রতি মনোযোগ দিয়েই সম্পর্ক বিবেচনা করে ভারত।

ভারতের পররাষ্ট্রসচিব জানান, শেখ হাসিনা ‘ব্যক্তিগত যোগাযোগের উপকরণ’ ব্যবহার করে বক্তব্য দিচ্ছেন। ভারত সরকার তাকে কোনো প্ল্যাটফর্ম বা সুযোগ প্রদান করেনি যাতে তিনি ভারতীয় ভূখণ্ড থেকে তার রাজনৈতিক কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারেন। তৃতীয় দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ এড়ানো ভারতের ঐতিহ্যগত প্রথার অংশ।

গত কয়েক দিনে ভারতে বসে হাসিনা অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে বেশ কয়েকটি ভিডিও বার্তা দিয়েছেন। তার এমন রাজনৈতিক কার্যক্রম ভালোভাবে নেয়নি বাংলাদেশ সরকার। এমন পরিস্থিতিতে হাসিনাকে নিয়ে বিক্রম মিশ্রির বক্তব্য বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই জানায় দ্য হিন্দু।

বিক্রম মিশ্রি কমিটিকে জানান, সোমবার ঢাকা সফরের সময় তিনি অন্তর্বর্তী সরকারকে জানিয়েছেন যে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক কোনো বিশেষ রাজনৈতিক দল বা সরকারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। ভারত বাংলাদেশের জনগণের সাথে সম্পর্ককে অগ্রাধিকার দেয় এবং যেকোনো সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখবে।

বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের বাণিজ্য ও যোগাযোগের বৃহত্তম অংশীদার হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সাম্প্রতিক বছরে দুই দেশ রেল যোগাযোগ, বাস সংযোগ, অভ্যন্তরীণ নৌপথ নির্মাণ করেছে। তিনি কমিটিকে এ-ও জানান, বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে যাত্রীবাহী রেল সেবা স্থগিত রয়েছে। তবে তার সফরের পরে দুই দেশের সম্পর্কের স্পষ্ট উন্নতি হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।

ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রগুলো বলছে, অনেক সংসদ সদস্য ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে কী হিসেবে অবস্থান করছেন; তিনি শরণার্থী নাকি নাকি রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছেন, তা জানতে চেয়েছেন। তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত আগস্টে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রতিদিন নিয়ম করে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত হামলা ও নির্যাতনের খবর অতিরঞ্জিত করে প্রচার করা হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে মিথ্যা ও ভুয়া তথ্যও প্রচার করছে। গতকালের ব্রিফিংয়ে বেশ কয়েকজন ভারতীয় সংসদ সদস্য বাংলাদেশের মাঠপর্যায়ের পরিস্থিতি নিয়ে বিক্রমকে প্রশ্ন করেন। ভারতীয় পররাষ্ট্রসচিব তাদের আশ্বস্ত করেন যে বাংলাদেশ সরকার অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

ড. মুহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো চুক্তি পর্যালোচনার বিষয়ে প্রশ্ন তোলেনি বলেও জানান ভারতীয় পররাষ্ট্রসচিব। যদিও এমন খবর গণমাধ্যমে দেয়া হয়।

এ সময় অনেক এমপি ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তারের বিষয়েও জানতে চান। এই সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে বিক্রম জানান, ভারত সরকার কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের জন্য বিভিন্ন স্তরে প্রয়োজনীয় সমস্ত পদক্ষেপ নিয়েছে।

বৈঠকের পরে কমিটির চেয়ারম্যান শশী থারুর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের ব্রিফিংয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, এটি একটি খুব ভালো সভা ছিল। আমরা এই বিষয়ে সংসদে রিপোর্ট করব। আগামী বছরের শেষের দিকে। এটিকে একটি খুব ভালো সূচনা হিসেবে বলা যায়।

গত ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে টানাপোড়েন চলছে। এমন পরিস্থিতিতে গত ৯ ডিসেম্বর ঢাকা সফর করেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি। তার সফর ছিল নয়াদিল্লি ও ঢাকার মধ্যে প্রথম শীর্ষ পর্যায়ের কূটনৈতিক যোগাযোগ। তিনি ড. ইউনূস, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন ও পররাষ্ট্রসচিব জসীম উদ্দিনের সঙ্গে দেখা করেন।

আপনার মন্তব্য লিখুন

সংবাদটি শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ
  • © All rights reserved © 2019 alokitoswapner-bd.com - It is illegal to use this website without permission.
Design & Developed by Freelancer Zone
themesba-lates1749691102