যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে শেষ বৈঠক করেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।
যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে শেষ বৈঠক করেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। বৈঠকে দেশটির নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার করেছেন তিনি। শনিবার পেরুর রাজধানী লিমায় এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কো-অপারেশনের (এপেক) বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনের সাইডলাইনে দুই নেতার সাক্ষাৎ হয়। যেখানে তারা বাইডেনের চার বছরের শাসনকালে সম্পর্কের ‘উত্থান-পতন’ নিয়ে আলোচনা করেন। তবে উভয়ই বাণিজ্য ও তাইওয়ানের মতো ইস্যুতে অস্থিরতা হ্রাসে অগ্রগতির কথা তুলে ধরেন। খবর বিবিসি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, চীনা আমদানির ওপর শুল্ক বাড়ানোর প্রতিশ্রুতিসহ নানা কারণে ট্রাম্প দুই মাসের মধ্যে ক্ষমতায় ফিরলে যুক্তরাষ্ট্র-চীন সম্পর্ক আরো অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে। কারণ নির্বাচনী প্রচারণার সময় ট্রাম্প চীনা পণ্য আমদানিতে ৬০ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রতিশ্রুতি দেন। অন্যদিকে তিনি পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা বিভাগের নেতৃত্ব দেয়ার জন্য চীনের সমালোচক হিসেবে পরিচিত গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদেরও বেছে নিয়েছেন।
প্রথম মেয়াদে চীনকে ‘কৌশলগত প্রতিদ্বন্দ্বী’ হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন ট্রাম্প। মহামারী চলাকালীন তিনি কভিড-১৯ কে ‘চীনা ভাইরাস’ বলার পর দুই দেশের সম্পর্কের অবনতি ঘটে।
চীনা প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘ওয়াশিংটনের সঙ্গে স্থিতিশীল সম্পর্ক বজায় রাখার বেইজিংয়ের যে লক্ষ্য রয়েছে তা অপরিবর্তিত থাকবে। যোগাযোগ বজায় রাখতে, সহযোগিতা বাড়াতে ও মতপার্থক্য দূর করতে নতুন মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত চীন।
বাইডেন বলেন, ‘দুই পরাশক্তির মধ্যে কৌশলগত প্রতিযোগিতা যেন যুদ্ধে রূপ না নেয়। আমাদের দুই দেশই এ প্রতিযোগিতার কোনোটিকেই সংঘাতে পরিণত হতে দিতে পারে না। এটা আমাদের দায়িত্ব এবং গত চার বছরে আমি বিশ্বাস করি যে আমরা প্রমাণ করতে পেরেছি এ সম্পর্ক টিকে থাকা সম্ভব।’
বাইডেন ক্ষমতায় থাকাকালীন চীনের সঙ্গে সম্পর্কের উত্তেজনা দেখা গেছে। এর মধ্যে রয়েছে একটি সন্দেহভাজন চীনা গুপ্তচর বেলুনের ঘটনা এবং তাইওয়ানে একজন জ্যেষ্ঠ মার্কিন কর্মকর্তার সফরের পর দেশটির কাছে চীনের সামরিক বাহিনীর শক্তি প্রদর্শন।
চীন তাইওয়ানকে একটি স্বশাসিত দ্বীপ হিসেবে বিবেচনা করে এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে ‘রেড লাইন’ বা লাল রেখা হিসেবে বিবেচনা করে। তবে বাইডেন প্রশাসনের লক্ষ্য ছিল ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের পর বেইজিংয়ের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা দায়িত্বশীলতার সঙ্গে সামাল দেয়া।
বিশ্লেষকরা বলছেন, নতুন প্রেসিডেন্টের অপ্রত্যাশিত কর্মকাণ্ডে বেইজিং সম্ভবত সবচেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন। জার্মান মার্শাল ফান্ডের ইন্দো-প্যাসিফিক প্রোগ্রামের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বনি গ্লেসার বলেন, ‘চীনারা আলোচনা ও চুক্তি করতে প্রস্তুত এবং সম্ভাব্য লেনদেন নিয়ে আলোচনা করতে ট্রাম্প দলের সঙ্গে যত দ্রুত সম্ভব সাক্ষাতের আশা করছে। তবে একই সঙ্গে ট্রাম্প চীনের ওপর উচ্চহারে শুল্ক আরোপ করলে পাল্টা জবাব দিতে প্রস্তুত তারা।’