প্রচন্ড শীতে কাবু পুরো দেশ। কোনো কোনো অঞ্চলে বয়ে যাচ্ছে শৈত্যপ্রবাহ। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সহসাই কমছে না শীতের দাপট। চলতি মাসজুড়েই ঘন কুয়াশা ও হাড়কাঁপানো শীতের ‘খাচায় বন্দি’ থাকবে দেশ। এদিকে শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে শীতকালীন রোগবালাই। এরই মধ্যে চট্টগ্রামে সর্দি-কাশি, নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিস, অ্যাজমা, শ্বাসকষ্ট, সিওপিডিজাতীয় শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। আক্রান্তদের মধ্যে বেশির ভাগই শিশু ও বয়স্ক।
মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) সরেজমিনে দেখা গেছে, নিউমোনিয়া নিয়ে নগরের হালিশহর এলাকার বাসিন্দা ফারজানা আক্তার ৮ মাসের শিশুকে নিয়ে ভর্তি হয়েছেন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে। চারদিন ধরে চিকিৎসাধীন থাকার পরও তেমন উন্নতি নেই। একই অবস্থা ২ বছরের শিশু তাসিফের। দুইদিন ধরে ডায়রিয়াজনিত রোগ নিয়ে চিকিৎসাধীন এই হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের ইউনিট-২ এ।
প্রতিনিয়ত জেলার প্রত্যন্ত এলাকা থেকে জ্বর, সর্দি, কাশি ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের নিয়ে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আসছেন অভিভাবকরা। আবহাওয়ার পরিস্থিতি বিবেচনায় অভিভাবকদের সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
চমেক হাসপাতাল শিশু ওয়ার্ড এর তথ্যানুযায়ী, নতুন বছরের প্রথম ১৪ দিনে পাঁচ শতাধিক রোগী ভর্তি হয়েছে। এরমধ্যে ১ জানুয়ারি ৪১ জন, ২ জানুয়ারি ৪৮ জন, ৩ জানুয়ারি ৪১ জন, ৪ জানুয়ারি ৩৫ জন, ৫ জানুয়ারি ৪০ জন, ৬ জানুয়ারি ৪৪ জন, ৭ জানুয়ারি ২১ জন, ৮ জানুয়ারি ৪৩ জন, ৯ জানুয়ারি ৪১ জন, ১০ জানুয়ারি ৪৫ জন, ১১ জানুয়ারি ৪৪ জন, ১২ জানুয়ারি ৪০ জন, ১৩ জানুয়ারি ৩৬ জন এবং ১৪ জানুয়ারি ৫৪ জন শিশু ভর্তি হয়েছে।
ভর্তি হওয়া বেশিরভাগই আক্রান্ত ঠাণ্ডাজনিত রোগে।
শুধু চমেক হাসপাতাল নয়, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল, মা ও শিশু হাসপাতালসহ সব বেসরকারি হাসপাতালেও বেড়েছে শিশু রোগীর সংখ্যা।
চমেক হাসপাতাল শিশু ওয়ার্ডে দায়িত্বরত সিনিয়র স্টাফ নার্স সোমা দাশ বলেন, শীত মৌসুম আসলেও রোগীর ভিড় তেমন একটা নেই। যেহেতু তীব্র শীত মাত্র পড়া শুরু করেছে, আরও কয়েকদিন পরে হয়তো এর প্রভাব দেখা যাবে।
স্বাভাবিক সময়ে হাসপাতালে গড়ে ৩০ থেকে ৪০ জন রোগী ভর্তি থাকে বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে ওই পরিমাণ রোগী ভর্তি হচ্ছে।
চিকিৎসকরা বলছেন, শিশুদের ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা এড়াতে বাড়তি সতর্কতা নেওয়া উচিত। বিশেষ করে এই সময় বাচ্চাদের প্রতি বাড়তি যত্ন নেওয়া প্রয়োজন।
চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান বলেন, শীতের সময় হাসপাতালে রোগীর চাপ একটু বেশি থাকে। বিশেষ করে শিশু ওয়ার্ডে। আমাদের সব রকমের প্রস্তুতি রয়েছে।
এ সময় তিনিও শিশুদের প্রতি বাড়তি যত্ন নিতে অভিভাবকদের প্রতি পরামর্শ দেন।