ভূঞাপুরে সঞ্চয়পত্রের টাকা আত্মসাৎ, টাকা ফেরত পেতে ভুক্তভোগীদের বিক্ষোভ ও মানববন্ধন।
ভূঞাপুরে সোনালী ব্যাংক গোবিন্দাসী শাখার গ্রাহকের সঞ্চয়পত্রের ৫ কোটি ১১ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন ব্যাংকের সাবেক ম্যানেজার শহিদুল ইসলাম। গ্রাহকদের সঞ্চয়পত্রের টাকা ফেরত পেতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা। বুধবার (৬ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত উপজেলার গোবিন্দাসী সোনালী ব্যাংক শাখার মূল ফটকে এই মানববন্ধন ও অবরোধ পালন করেন তার। ভুক্তভোগীদের দাবি তাদের কষ্টে অর্জিত টাকা যেনো অতিদ্রুত তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
জানাযায়, গ্রাহকের সঞ্চয়পত্রের ৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ম্যানেজারকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। আত্মসাতের এসব টাকা সাবেক শাখা ম্যানেজার শহিদুল ইসলাম তার ভাই, বন্ধুর শাশুড়িসহ একাধিক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে আত্মসাত করেছেন বলে ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে। তথ্য প্রযুক্তিতে মেধা সম্পন্ন সাবেক ম্যানেজার শহিদুল ইসলাম কৌশলে ব্যাংকের ১৩০জনের সঞ্চয়পত্রের টাকা লুজ চেকের (জরুরি উত্তোলণের জন্য একক পাতা) মাধ্যমে অন্য একাউন্টে ৫ কোটি ১১ লাখ টাকা সরিয়েছেন। এছাড়া উপজেলার গাবসারা ইউনিয়নের হতদরিদ্রদের ভাতার ৬ লাখ ৮১ টাকাও গায়েব করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী গ্রাহক উপজেলার কয়েড়া গ্রামের মর্জিনা জানান, মেয়েদের বিয়ে দেয়ার জন্য জমি-জমা বিক্রি করে ২১ লাখ টাকা ব্যাংকে সঞ্চয়পত্রে রেখেছিলাম। কিন্তু পরে লভ্যাংশ তুলতে গিয়ে দেখি সঞ্চয়পত্রে টাকাই জমা হয়নি। ব্যাংক ম্যানেজার কৌশলে অনেক গ্রাহকের টাকা আত্মসাৎ করেছে। আমার আমাদের টাকা ফেরত চাই।
রুহুলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক শেফালী বেগম জানান, রক্ষক যদি ভক্ষক হয় তাহলে কি করব আমরা। কয়েক মাস লাভের টাকা তুলেছিলাম। ম্যানেজার শহিদুলকে বদলি করার পর ব্যাংকে গিয়ে জানতে পারি আমার সঞ্চয়পত্রই খোলা হয়নি। প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।
সোনালী ব্যাংক গোবিন্দাসী শাখার বর্তমান ম্যানেজার ফিরোজ আহম্মেদ বলেন, আপনারা যাতে দ্রুত টাকা ফেরত পান সেজন্য বিষটি নিয়ে তদন্ত করা হয়েছে এবং তদন্ত রিপোর্ট হেড অফিসে জমা দেয়া হয়েছে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আমাদের মিটিং হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সবাই টাকা ফেরত পাবেন।
সোনালী ব্যাংক প্রিন্সিপাল অফিস ঘাটাইলের ডিজিএম আব্দুল্লাহ ফয়সাল বলেন, গ্রাহকদের টাকা আত্মসাতের ঘটনায় ম্যানেজার শহিদুল ইসলাম দোষ স্বীকার করায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। গ্রাহকদের হতাশ হওয়ার কিছু নেই। দ্রুত সময়ের মধ্যে তারা টাকা ফেরত পাবে। এই অবস্থায় অনেকটা হতাশার মধ্যে দিন পার করছে ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা।