আমি কখনও কঠিন কখনও নরম কখনও ঘূর্ণিঝড়,
আমি কখনও সিংহের গর্জন আর বাঘের হুংকার।
আমি কখনও সাগর কখনও আকাশ কখনও বিদ্রোহী,
আমি ধর্মে ধর্মে বিভেদ চাইনা সাম্যের গান গাহি।
আমি রাজন হয়ে হাড়াই বাঙালি হয়ে ফিরি আবার,
আমি শহীদ তিতুর ভাঙা কেল্লার সুনিপুণ কারিগর।
আমি তীর ছুঁড়ি দেখি যেথা মীর জাফরের আত্মা,
আমি কবিতার ভাষায় পৌঁছাই সত্য ও শান্তির বার্তা।
আমি আবরার হয়ে মরি এ যেনো অমৃতের সুধা,
আমি পার্টির ছেলের চাঁদাবাজিতে আতঙ্কিত বাঁধা।
আমি বাতাসে ভেসে বেড়ানো গলিত লাশের গন্ধ,
ধিক্কার জানাই হয়ে গেছে যারা অর্থের মোহে অন্ধ।
হতদরিদ্র বলে প্রশ্নপত্র জোটেনি পরীক্ষার হলে,
ওহে বাংলাদেশ একেই কি স্বাধীনতা বলে?
রানা প্লাজার ধূলোয় উড়েছি পুরেছি অগ্নিকান্ডে,
অথচ দশের জন্য বরাদ্দ টাকা জমা মন্ত্রীর ফান্ডে।
তনু নাদিয়ারা ধর্ষিতা হলো উচিত বিচার পাইনি,
লাখো শহীদদের রক্তের দামে এমন দেশ তো চাইনি।
নুসরাত হত্যাকারীদের ফাঁসির রায়ে খুশি হবার কিছু নাই,
বিশ্বজিৎ হত্যাকারীদের ফাঁসি চার বছরেও হয়নাই।
আমি ডেঙ্গু জ্বরে মরেছি গাড়ি চাপায় মরেছি,
লাল-সবুজের পতাকা হাতে নিরাপদ সড়ক চেয়েছি।
ঘুস দিতে পারিনি বলে চাকরিটাও পাইনি,
কোটা সংস্কার আন্দোলন ছেড়ে ঘরেও ফিরে যাইনি।
নেতারা দেশের সম্পদ বেঁচে বিদেশে বাড়ি কেনে,
আমি জনগন তাই পেটে ভাত নাই খাবার খুঁজি ডাস্টবিনে।
দুর্নীতি দুর্ভোগ দুর্দশা দুঃশাসন এ আমার সাথেই চলে,
আমি পাকিস্তানি কিংবা ভারতীয় নই শুধু বাঙালি বলে।
কোকিলের কুহু দোয়েলের মুহু ডাক শুনেই দিন চলে,
শান্তি পাই ভাবি যখন আছি বাঙালির দলে।
বাংলার খাল বাংলার বিল বাংলার প্রকৃতি,
আমি সবকিছুতেই মিশে আছি সবটাই আমার স্মৃতি।
বাংলার মাটি বড়ই খাঁটি সোনার চেয়েও দামী,
বিশ্বের বুকে কোন একদিন বাংলাই হবে নামী।
বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান একাত্তরের যুদ্ধ,
বাঙালি কোথাও মাথা নত করেনি থাকেনি বাকরুদ্ধ।
২৬ শে মার্চ ১৬ ই ডিসেম্বর ২১ শে ফেব্রুয়ারি,
এই বাঙালি হৃদয়ের স্পন্দন ভুলতে নাহি পারি।
এদেশে বীরপুরুষ জন্মে বলে নজরুলের কলমের কালি,
নাম শুনে নয় ইতিহাস শুনে বিশ্ব বলবে আমি ধন্য বাঙালি।